মহারাষ্ট্রের রাজনৈতিক টালমাটাল অবস্থার সমাধান নির্ণয় করার জন্য সোমবার স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহের সঙ্গে দেখা করার জন্য দিল্লি যাবেন মহারাষ্ট্রের মুখ্যমন্ত্রী দেবেন্দ্র ফড়নবীশ। মহারাষ্ট্রের বর্তমান রাজনৈতিক টালমাটাল পরিস্থিতি নিয়ে কথা বলার জন্যই সোমবার দিল্লি যাবেন ফড়নবীশ। এমনটাই সর্বভারতীয় সংবাদ মাধ্যম সূত্রে জানা গিয়েছে।
মহারাষ্ট্রে ২৮৮টি আসনে নির্বাচনের ফল ২৪ অক্টোবর প্রকাশিত হয়। আর তারপর থেকে বিজেপি এবং শিবসেনার মধ্যে মুখ্যমন্ত্রীর চেয়ার নিয়ে যুদ্ধ শুরু হয়। ক্ষমতার লড়াইতে দুই দলই নিজেদের জায়গা ছাড়তে এতটুকু রাজি নয়। শিবসেনা ৫০:৫০ ক্ষমতা ভাগের দাবি নিয়ে অনড়। আর অন্যদিকে বিজেপি তাদের সামনে কোনও ভাবেই মাথা নোয়াতে রাজি নয়। এছাড়াও বিজেপি মহারাষ্ট্রে আগামী মুখ্যমন্ত্রী হিসেবে দেবেন্দ্র ফড়নবীশকেই ভেবে রেখেছে। তবে শিবসেনাও কোনও ভাবেই নিজেদের দাবি নিয়ে সুর নরম করতে রাজি নয়। এছাড়াই শিব সেনা সংসদ শুরু থেকে জানিয়েছিলেন যদি বিজেপি তাদের দাবি না মানে তাহলে তাদের হাতে অন্য বিকল্প পথ খোলা রয়েছে। তবে তা তারা এখনই অবলম্বন করতে চান না। তা ছাড়াও নির্দল সংসদরা শিবসেনাকে সমর্থন জানানোতে জোর পেয়েছিল শিবসেনা। শিবসেনা সংসদ সঞ্জয় রাউত জানিয়েছিলেন মানুষ তাদের জোট দেখেই ভোট দিয়েছিলেন আর তারা মুখ্যমন্ত্রী শিবসেনা থেকেই চান। নির্বাচনী ফল প্রকাশের পরে দেখা গিয়েছিল বিজেপির দখলে রযেছে ১০৫টি সিট এবং ৫৬টি আসন গিয়েছিল শিবসেনার দখলে।
তারপর থেকেই ২.৫ বছরের মুখ্যমন্ত্রী পদের দাবিতে শিবসেনা অনড় মনোভাব নিয়ে রয়েছে। কোনও ভাবেই উদ্ধব ঠাকরের দল তাদের দাবি নিয়ে সুর নরম করতে রাজি নয়। আর তাদের এই দাবির সামনে কোনও ভাবেই বিজেপি মাথা নোয়াতে রাজি নয়। আর তাই গেরুয়া শিবির মহারাষ্ট্রের আগামী মুখ্যমন্ত্রী হিসেবে দেবেন্দ্র ফড়নবীশের নাম ঘোষণা করে। কিন্তু শিবসেনা তার বিরোধিতা করে জানায় দরকার পড়লে তারা একাই সংখ্যাগরিষ্ঠতা লাভ করে সরকার গঠন করতে পারে। ফড়নবীশ স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী তথা বিজেপি প্রেসিডেন্ট অমিত শাহের কাছে শিবসেনার সঙ্গে তাদের কথাবার্তা বিস্তারিত বিবরণ দেবেন । এছাড়াও শিবসেনার বিজেপিকে সমর্থন না করার বিষয় নিয়ে কথা হবে বলে জানা গিয়েছে।
মহারাষ্ট্রে বর্তমান সরকারের সময়সীমা ৮ নভেম্বর পর্যন্ত। মহারাষ্ট্রের অর্থমন্ত্রী সুধীর মুনগান্তিওয়ার জানিয়েছিলেন, তার আগে অর্থাৎ ৭ নভেম্বরের মধ্যে নতুন সরকার গঠন করতে না পারলে রাষ্ট্রপতি শাসন জারি হবে রাজ্যতে। যা নিয়ে শিবসেনা চূড়ান্ত প্রতিবাদ করে জানায় তিনি যা মন্তব্য করেছেন তা অসাংবিধানিক। তার উত্তরে মহারাষ্ট্রের এই অর্থমন্ত্রী জানিয়েছিলেন তার করা মন্তব্য সম্পূর্ণভাবে সাংবিধানিক।
রবিবার শিবসেনার মুখপত্রে জানানো হয়েছিল, বিজেপি যদি তাদের দাবি না মানে তাহলে তারা ১৭০ জন বিধায়ক ও এনসিপি এবং কংগ্রেসের সমর্থন নিয়ে তারা মহারাষ্ট্রে সরকার গঠন করতে পারে। আদর্শগত ভাবে দল আলাদা হলেও একসঙ্গে কাজ করতে গেলে তারা একটি পরিকল্পনা অনুসারে করবেন বলেও জানানো হয়। এছাড়াও তাদের তরফ থেকে জানানো হয় বিজেপি যদি শিবসেনার সঙ্গে জোট না করত তাহলে তারা ১০৫ টি আসন পেত না। এনসিপির তরফ থেকে শিবসেনা সমর্থন জানানোর ইঙ্গিত দেওয়া হয়েছে। এনসিপি মুখপাত্র নওয়াব মালিক জানিয়েছেন, তার দলের প্রধান শরদ পাওয়ার শিবসেনা কে সমর্থন জানানোর ব্যাপারে সদর্থক মনোভাব নিয়ে রেখেছেন। এছাড়াও তিনি জানিয়েছেন দলের প্রধান উদ্ধব ঠাকরে যদি মহারাষ্ট্রের মানুষের কথা ভেবে কোনও রকম বিকল্প পন্থা নিতে চান তাহলে তারা তা পাবেন।