একটা ফোন কল বদলে দিল অনেক কিছু | ভাবতে শেখালো নতুন ভাবে | ঘর শত্রু বিভীষণদের চিহ্ণিত করণও সম্ভব হল এর মাধ্যমেই | শনিবার লস্কর এ তৈবার দুই শীর্ষ জঙ্গীকে কুলগামে রীতিমতো ফিল্মি কায়দায় গাড়ি ঘিরে ধরে গ্রেফতার করে জম্মু কাশ্মীরের পুলিশ | আর এদের সঙ্গেই জঙ্গীদের সাহায্য ও অন্যায় ভাবে মুক্তিপণ দাবি করার অপরাধে গ্রেফতার করা হল বর্তমানে জম্মু-কাশ্মীরের বিমানবন্দরে ডেপুটি ডিএসপি পদমর্যাদা সম্পন্ন পুলিশ আধিকারিককে | নাম দেবিন্দর সিং | উদ্ধার করা হয় দুটি একে ৪৭রাইফেল ওই গাড়ি থেকে | দেবিন্দরের বাড়িতে হানা দিয়েও উদ্ধার করা হয় একটি পিস্তল সহ একটি এ কে ৪৭রাইফেল | শনিবার জম্মু-কাশ্মীরের পুলিশের কাছে একটি ফোন আসে | যেখানে দাবি করা হয় লস্কর এ তৈবার দুই মোস্ট ওয়েন্টেড জঙ্গীকে একটি গাড়িতে চেপে দক্ষিণ কাশ্মীরে কুলগামে ঘরতে দেখা যাচ্ছে | সেই জঙ্গী নাভিদ বাবু ও আলতাফের সঙ্গে কোন এক পুলিশ আধিকারকিও আছে বলে দাবি করা হয় |
তদন্তে নেমে একটি ফোন কলের সূত্র ধরে জাল পাতে পুলিশ | সেখানে জানা যায়, এই দুই জঙ্গীকে উপত্যকা থেকে বের করে দেওয়ার সুবিধে করিয়ে দিচ্ছেন এক পুলিশ আধিকারিক যে কিনা আগেও এই কাজের সঙ্গে যুক্ত ছিলেন | সংসদ হামলায় অভিযুক্ত জেরার সময় এক আধিকারিকের কথা বলেছিলেন| তিনি তাতে দেবীন্দর সিংয়ের উল্লেখ করেন | তারপর তাকে সাসপেন্ড করা হলেও ,বর্তমানে তাকে বিমানবন্দরে নিযুক্ত করা হয়েছিল | তদন্তে নেমে পুলিশ জানতে পারে , এই জঙ্গীদের পাড় করানোর দায়িত্বে থাকা নাভিদ ২০১৪সাল থেকেই উপত্যকায় জঙ্গী সংগঠনের দায়িত্বে ছিল | ত্রালের বাসিন্দা নাভিদের যোগ্য সহযোগী হিসেবে সোপিয়ানের বাসিন্দা আলতাফ কাজে নামে | আর এদের পারাপারে সাহায্য করত এই অভিযুক্ত ডিসিপি | গত দু-তিন দিন ধরে পুলিশ এসবের পিছনে ছিল ।
পুরো অভিযানটি তদারকি করছিলেন ডিআইজি দক্ষিণ কাশ্মীরের অতুল গোয়েল। যে সময়ে তারা গাড়ি ছেড়ে দিয়ে মীর বাজার এলাকায় প্রবেশ করে তখন মিরবাজার এলাকায় তল্লাশী করলে ডেপুটি ডিসিপি সহ ত্রয়ীকে ধরে ফেলে পুলিশ | উর্ধ্বতন পুলিশ আধিকারিক ডেপুটি ডিএসপির জড়িত থাকাকে দুর্ভাগ্যজনক বলে অভিহিত করেছে| ২০০১ সালে সংসদে হামলায় ডিএসপি দেবীদার সিংয়ের নামও ছড়িয়ে পড়ে। আফজাল গুরু জেল থেকে তাঁর আইনজীবীর কাছে একটি চিঠিতে ডিএসপি দেবীদার সিংয়ের নাম নিয়েছিলেন। চিঠিতে বলা হয়েছে যে বাডগামের হুমহামায় অবস্থানরত ডিএসপি তাকে পার্লামেন্টের অন্যতম হামলাকারী মোহাম্মদকে দিল্লিতে নিয়ে যাওয়ার জন্য চাপ দিয়েছিলেন।বাধ্য হয়ে মোহাম্মদকে ভাড়া করে বাড়ি ও গাড়ি কিনেছিলেন তিনি। ২০১৩ সালের ৯ ফেব্রুয়ারি আফজালকে ফাঁসি দেওয়ার পরে এই চিঠিটি আফজাল গুরুর পরিবারের সদস্যরা প্রকাশ করেছিলেন। কিন্তু কীভাবে করত এই জঙ্গী পারাপার? জানা গিয়েছে,দেবিন্দর ছদ্মবেশে জঙ্গীদের পার করাতো |
তার গাড়ি ও বাড়িতে অনেক পাগড়ি পাওয়া গিয়েছে | যে সমস্ত পাগড়ি গাড়িতে রেখেছিল যাতে কারও সন্দেহ না হয়। তাঁর চণ্ডীগড়ে যাওয়ার কথাও প্রকাশ্যে আসছে। অভিযোগ করা হয় যে ডিএসপি এই সন্ত্রাসীদের উপত্যকা থেকে বের করে আনতে চাইছিল। বর্তমানে পুলিশ সমস্ত লিঙ্ক সংযোগ করার চেষ্টা করছে। উল্লেখযোগ্য যে এই ডেপুটি ডিএসপি ১৫ই আগস্ট সফল কাজের জন্য প্রেসিডেন্সিয়াল পুলিশ মেডেল পান। পরে মুক্তিপণের অভিযোগে এসওজি থেকে অপসারণের সঙ্গে সঙ্গে যদিও তাকে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়েছিল। পরে শ্রীনগর পুলিশ কন্ট্রোল অফিসে ও পরে বিমানবন্দরে তাকে নিয়োগ করা হয় | প্রসঙ্গত নাভিদ শোপিয়ানে, তিনি ডিএসপি আশিক তাকের গাড়িতে হামলার সঙ্গে জড়িত ছিল বলে জানতে পারে পুলিশ | এতে তিন জন পিএসও এবং চালক নিহত হয়েছিল। তিনি বাটগুন্ডে আরও তিন জন পিএসও হত্যার সঙ্গে জড়িত ছিল বলে জানা যায় |