এয়ারসেল-ম্যাক্সিস মামলায় চিদম্বরম ও তাঁর ছেলেকে ২০ ডিসেম্বর আদালতে হাজিরার নির্দেশ।

এয়ারসেল ম্যাক্সিস মামলায় দুই কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থা সিবিআই এবং ইডির দায়ের করা একটি চার্জশিটের ভিত্তিতে রাজ্যসভার সাংসদ এবং প্রাক্তন কেন্দ্রীয় মন্ত্রী পি চিদম্বরম, তাঁর ছেলে কার্তি চিদম্বরম এবং অন্যান্যদের আদালতে ডেকে পাঠানো হয়েছে। আজ এক দিল্লি আদালতে এই নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। দিল্লির রাউজ় অ্যাভিনিউ আদালতের বিচারক এম কে নাগপাল আজ এই নির্দেশ জানিয়েছেন। চার্জশিটে অভিযুক্ত প্রত্যেককে ২০ ডিসেম্বর আদালতে হাজিরা দিতে বলা হয়েছে। উল্লেখ্য, সিবিআই এবং ইডির এই চার্জশিটে একাধিক ব্যক্তি এবং সংস্থার নাম জড়িয়েছে।

উল্লেখ্য, বিচারক এম কে নাগপাল জানিয়েছে, চার্জশিটে যাঁদের নাম রয়েছে, তাঁদের আদালতে ডেকে পাঠানোর জন্য পর্যাপ্ত প্রমাণ রয়েছে। অতিরিক্ত সলিসিটর জেনারেল সঞ্জয় জৈন, কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থাগুলির তরফে আদালতকে জানান যে এজেন্সিগুলি বিভিন্ন দেশে এলআর (লেটার রোগেটরি) পাঠিয়েছে এবং সেই বিষয়ে কিছুটা অগ্রগতিও হয়েছে। সিবিআইয়ের তরফে আরও জানানো হয়েছিল, এয়ারসেল ম্যাক্সিস মামলায় তারা একটি নতুন লিড পেয়েছেন এবং সেই লিড ধরে তদন্ত প্রক্রিয়া অনেকটা এগিয়েও গিয়েছে।

এদিকে আদালত আজ কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থাগুলির কাছ থেকে রিপোর্ট চাওয়ার সময় বলে, চার্জশিটে উল্লিখিত অভিযোগগুলি “প্রকৃতপক্ষে বেশ গুরুতর” বলে মনে হচ্ছে। মামলাটি, সিবিআই এবং ইডি দ্বারা তদন্ত করা হচ্ছে। এয়ারসেল-ম্যাক্সিস চুক্তিতে ফরেন ইনভেস্টমেন্ট প্রোমোশন বোর্ড (এফআইপিবি) অনুমোদন দেওয়ার ক্ষেত্রে বেশ কিছু অনিয়ম রয়েছে বলে অভিযোগ রয়েছে।

২০০৬ সালে তামিলনাড়ু ভিত্তিক নেটওয়ার্ক কোম্পানি এয়ারসেল মালয়েশিয়া ভিত্তিক ম্যাক্সিস কোম্পানির বিদেশী বিনিয়োগের জন্য ফরেন ইনভেস্টমেন্ট প্রোমোশন বোর্ডের ছাড়পত্রের ক্ষেত্রে দুর্নীতি হয়েছিল বলে অভিযোগ। বড়সড় অঙ্কের অর্থও খরচ করা হয়েছিল এই দুর্নীতিতে। এই অভিযোগের ভিত্তিতেই তদন্ত শুরু হয়েছিল।

সেই সময় কেন্দ্রীয় অর্থমন্ত্রী ছিলেন কংগ্রেস সাংসদ পি চিদম্বরম। তাঁর বিরুদ্ধে ৩ হাজার ৫০০ কোটি টাকার এয়ারসেল-ম্যাক্সিস চুক্তিতে ছাড়পত্র দেওয়ার জন্য বেশ মোটা অঙ্কের টাকা পেয়েছিলেন তিনি। সেই টাকা তার ছেলে কার্তির সঙ্গে যুক্ত সংস্থাগুলির মাধ্যমে ঘুরপথে পাঠানো হয়েছিল বলে অভিযোগ। সিবিআই এবং এনফোর্সমেন্ট ডিরেক্টরেট উভয়েরই যথাক্রমে দুর্নীতি দমন আইন এবং আর্থিক তছরূপ প্রতিরোধ আইনের আওতায় মামলা রুজু করেছিল। ইডি মামলা রুজু করেছিল ২০১৮ সালের ১৩ জুন। আর ২০১৮ সালের জুলাই মাসে সিবিআই নিজেদের চার্জশিট দাখিল করেছিল।

চিদম্বরম কেন্দ্রীয় অর্থমন্ত্রী থাকাকালীন নিজের পদাধিকারের প্রভাব খাটিয়ে বেআইনি ভাবে ভারতীয় সংস্থা এয়ারসেলে মালয়েশিয়ার ম্যাক্সিসকে বিনিয়োগ করার জন্য ছাড়পত্র পাইয়ে দিয়েছিলেন। কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থার অভিযোগ, প্রাক্তন কেন্দ্রীয় অর্থমন্ত্রী হিসেবে নিজের ক্ষমতার অপব্যবহার করেছিলেন এবং ঘুষ নেওয়ারও অভিযোগ রয়েছে তাঁর বিরুদ্ধে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.