মৃত্যু শুধুমাত্র এক রূপান্তর ( transformation)।
শক্তি এক রূপ থেকে অন্যরূপে যায়, শক্তির কোন বিনাশ নেই।
এখানে পদার্থবিদ্যা ও আধ্যাত্মিক চিন্তা এক জায়গায় মিলিত হয়েছে। বিজ্ঞান বলছে, শক্তি কোনদিন তৈরি বা ধ্বংস করা সম্ভব না। তার transformation বা রূপান্তর হয় মাত্র। হিন্দু ধর্ম বলছে কর্মফল অনুযায়ী পুনর্জন্মের কথা। তবে পুনর্জন্ম শরীরের না। আত্মার।
আত্মা কি? আত্মা কি সত্যি এনার্জি নাকি অন্য কিছু?
আত্মা জৈবিক শক্তি বা প্রাণশক্তি। এই শক্তি শরীরকে বাঁচিয়ে রাখে। কিভাবে তৈরি হয় এই শক্তি? আধুনিক বিজ্ঞান বলছে মানুষের শরীরের প্রত্যেকটি কোষের নির্দিষ্ট ভোল্টেজ আছে। .04 ভোল্ট থেকে .07 ভোল্ট একটি মানব কোষ জৈবিক বিক্রিয়ার মাধ্যমে প্রতিদিন তৈরি করতে পারে। মানুষের শরীরে 50 ট্রিলিয়ন কোষ আছে। অর্থাৎ .07 × 50 ট্রিলিয়ন = 3.5 ট্রিলিয়ন ভোল্ট মানুষের শরীর জৈবিক বিক্রিয়ার মাধ্যমে উৎপন্ন করতে পারে। এই শক্তি স্নায়ুতন্ত্রের ক্রিয়া, বিপাক ইত্যাদি কাজে ব্যায় হয়। মানুষের শরীর আসলে কেমিক্যাল এনার্জি কনভার্টার। যা মাতৃগর্ভে ফিউশন রিয়েকশনের মাধ্যমে তৈরি হয়। প্রথমে একটি কোষের থেকেই শরীরের যাত্রা শুরু। মৃত্যু হলে শক্তি বা আত্মা শরীরকে ত্যাগ করে। শক্তি আবার তার প্রয়োজনেই নতুন ফিউশন করে। জন্ম নেয় নতুন কনভার্টার। আবার সে শক্তিকে কনভার্ট করে। এটাকেই পুনর্জন্ম বলে।
এটা কখনোই না যে, আমি আগের জন্মে জিরাফ ছিলাম। এই জন্মে মানুষ হয়েছি। তবে এটা সত্যি যে, আমার শরীরের আর জিরাফের শরীরের কোষের কর্মপন্থা একই। দুজনের শক্তি প্রকৃতি থেকেই আসে। শক্তির রূপান্তরের সূত্রাবলীতে জিরাফ আর মানুষ একই।
কর্মফল ব্যাপারটা বিজ্ঞান দ্বারা প্রমাণিত। প্রত্যেক ক্রিয়ার বিপরীতমুখী প্রতিক্রিয়া বিজ্ঞানেরই সূত্র। প্রাণীর ক্ষেত্রে জেনেটিক প্যাটার্ন ঠিক করে আমি কি হবো। কোন পরিস্থিতিতে আমি কি রিয়্যাক্ট করবো। সেই অনুযায়ী আগামী দিনে আমার ভাগ্য তৈরি হবে। জন্মগত কর্মফল ভোগ ব্যাপারটাও জিনই ঠিক করে। আমি নীরোগ ভাবে জন্মেছি এটা আত্মার সুকৃতি না। এটা আমার বাবা মার জিনের সুকৃতি। এটাকে জন্মগত কর্মফল বলে। আদি গ্রন্থ বেদ পুনর্জন্ম বিষয়ে নীরব। বেদ বার বার মোক্ষপথ নির্দেশ করেছে। বেদ প্রবক্তা ঋষিরা জীবনচক্র কে আজকের বিজ্ঞানের ভাষায় ব্যাখ্যা করেন নি। তবে তার অস্তিত্ব রক্ষার চেষ্টা করেছেন।
Joydeep Chakraborty
2021-08-04