দেশে এক দিনে ৩ লক্ষ মানুষ করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হলেন। দেশে তো বটেই, বিশ্বেও এই প্রথম কোনও একটি দেশে একদিনে ৩ লক্ষাধিক আক্রান্ত হলেন। গত বছর কোভিডের প্রথম ঢেউয়ে দেশে আক্রান্ত সংখ্যা ১ লক্ষ পেরোয়নি। এ বছর ৫ এপ্রিল প্রথমবার দৈনিক আক্রান্ত ১ লক্ষ পেরোয়। তার ১০ দিন পর, ১৫ এপ্রিল ছাড়ায় দু’লক্ষের গণ্ডি। এর এক সপ্তাহ পরই ছাড়াল তিন লক্ষ।
বৃহস্পতিবার দেশে নতুন করে আক্রান্ত হয়েছেন ৩ লক্ষ ১৪ হাজার ৮৩৫ জন। এ নিয়ে দেশে মোট আক্রান্ত হলেন ১ কোটি ৫৯ লক্ষ ৩০ হাজার ৯৬৫ জন। দেশে গত ২৪ ঘণ্টায় মৃত্যু হয়েছে দু’হাজার ১০৪ জনের। ৫ এপ্রিল দেশে দৈনিক মৃত্যুর সংখ্যা ছিল ৪৭৮। গত দু’দিন ধরে তা দু’হাজার ছাড়াচ্ছে। সব মিলিয়ে দেশে করোনাভাইরাস দেশে প্রাণ কেড়েছে ১ লক্ষ ৮৪ হাজার ৬৫৭ জনের।
দেশের মোট সংক্রমণের অর্ধেকের বেশি হচ্ছে মহারাষ্ট্র (৬৭,৪৬৮), উত্তরপ্রদেশ (৩৩,১০৬), দিল্লি (২৪,৬৩৮), কর্নাটক (২৩,৫৫৮) এবং কেরল (২২,৪১৪)—এই পাঁচটি রাজ্য থেকে। ছত্তীসগঢ়ে ১৪-১৫ হাজার করেই আক্রান্ত হচ্ছেন গত কয়েকদিনে। রাজস্থানেও লাফিয়ে বেড়ে তা ১৪ হাজারে পৌঁছেছে। মধ্যপ্রদেশ (১৩,১০৭), গুজরাত (১২,৫৫৩) এবং বিহারেও (১২,২২২) সংক্রমণ চড়চড় করে বাড়ছে। তামিলনাড়ুতে ১১ হাজার, পশ্চিমবঙ্গেও গত ২৪ ঘণ্টায় নতুন আক্রান্ত সাড়ে ১০ হাজার ছাড়িয়েছে। হরিয়ানাতে তা সাড়ে ৯ হাজার পার করেছে। পঞ্জাব, ঝাড়খণ্ড, উত্তরাখণ্ড, তেলঙ্গানা, ওড়িশাতেও আক্রান্ত ৫ হাজারের আশপাশে। গোয়া, হিমাচল প্রদেশ, অসমেও আক্রান্ত দেড় হাজার ছাড়িয়েছে।
প্রতিদিন এই রেকর্ড সংখ্যায় কোভিডে আক্রান্ত হওয়ায় দেশে বাড়ছে সক্রিয় রোগীর সংখ্যা। গত ২৪ ঘণ্টায় সক্রিয় রোগী বেড়েছে ১ লক্ষ ৩৩ হাজার ৮৯০ জন। এখন দেশে সক্রিয় রোগী রয়েছেন ২২ লক্ষ ৯১ হাজার ৪২৮ জন। এত সংখ্যক রোগী এর আগে কখনও ছিল না দেশে। এর জেরে হাসপাতালগুলিতে শয্যা আর খালি নেই বললেই চলে। নতুন কোভিড কেয়ার কেন্দ্র গড়ে পরিস্থিতির মোবাকিলা করার চেষ্টা করছে বিভিন্ন রাজ্যের প্রশাসন। রোগী বাড়ার জন্যই বেড়েছে অক্সিজেনের চাহিদা। সব মিলিয়ে রোজ রোগী বৃদ্ধির জেরে স্বাস্থ্য ব্যবস্থার উপর প্রবল চাপ তৈরি করছে। যদিও দেশে টিকাকরণও চলছে। ১৮ বছর বয়স হলেই ১ মে থেকে টিকা নেওয়া যাবে বলে ঘোষণা করেছে কেন্দ্র। গত ২৪ ঘণ্টায় ২২ লক্ষ ১১ হাজার ৩৩৪ জন টিকা নিয়েছেন। যা বিগত কিছুদিনের তুলনায় কম। দেশে মোট টিকার ডোজ দেওয়া হয়েছে ১৩ কোটি ২৩ লক্ষেরও বেশি।