দৈনিক মৃত্যু ১৭০০ ছাড়িয়ে গেল, দেশে সক্রিয় রোগীর সংখ্যা পেরলো ২০ লক্ষ

১৩ দিন পর দেশের দৈনিক সংক্রমণ একটু হলেও কমল। যদি কমলেও তা আড়াই লক্ষের বেশি রয়েছে। মঙ্গলবার দেশে নতুন করে সংক্রমিত হয়েছেন ২ লক্ষ ৫৯ হাজার ১৭০ জন। যা সোমবারের তুলনায় প্রায় ১৪ হাজার কম। এক লক্ষ পেরনোর পর থেকেই দেশের দৈনিক সংক্রমণ রোজ বেড়েছে। সেই প্রবণতাতে ছেদ পড়ল মঙ্গলবার। সংক্রমণ একটু কমলেও দৈনিক মৃত্যু বৃদ্ধির প্রবণতা অব্যাহত রয়েছে। গত ২৪ ঘণ্টায় কোভিডে মৃতের সংখ্যা ১ হাজার ৭০০ ছাড়িয়ে গেল।

কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্য মন্ত্রকের পরিসংখ্যান অনুসারে, গত ২৪ ঘণ্টায় আড়াই লক্ষাধিক নতুন সংক্রমণের জেরে দেশে মোট আক্রান্তের সংখ্যা হল ১ লক্ষ ৫৩ হাজার ২১ হাজার ৮৯ জন। গত ২৪ ঘণ্টায় করোনার বলি হয়েছেন ১ হাজার ৭৬১ জন। এ নিয়ে দেশে কোভিড মোট প্রাণ কাড়ল ১ লক্ষ ৮০ হাজার ৫৩০ জনের। গত ২৪ ঘণ্টায় মহারাষ্ট্রে মারা গিয়েছেন ৩৫১ জন। কর্নাটক এবং উত্তরপ্রদেশে সংখ্যাটা ১৫০-র আশপাশে। ছত্তীসগঢ়ে সংখ্যাটা ১৭৫। দিল্লিতে দৈনিক মৃত্যু এক লাফে পৌঁছে গিয়েছে ২৪০-এ।

রোজ এত সংখ্যক মানুষ আক্রান্ত হওয়ার জেরে দেশে বাড়ছে সক্রিয় রোগীর সংখ্যা। গত ২৪ ঘণ্টায় সক্রিয় রোগী বেড়েছে ১ লক্ষেরও বেশি। এই বৃদ্ধির জেরে দেশে মোট সক্রিয় রোগীর সংখ্যা ২০ লক্ষ ছাড়িয়ে গেল। এখন দেশে মোট সক্রিয় রোগী রয়েছেন ২০ লক্ষ ৩১ হাজার ৯৭৭ জন। এই সংখ্যাক সক্রিয় রোগী এর আগে কখনও ছিল না দেশে। রোগী বৃদ্ধির জেরে হাসপাতাল, নার্সিংহোমগুলিতে শয্যা প্রায় আর খালি নেই। একই শয্যায় দু’জন রোগী শুয়ে থাকার দৃশ্য দেখা গিয়েছে বেশ কয়েকটি রাজ্যে। এমনকি অক্সিজেন না পেয়ে কোভিড রোগীর মৃত্যুর খবর আসছে। দৈনিক মৃত্যু এই পর্যায়ে চলে যাওয়ায় হাসপাতালে মর্গের বাইরে, শ্মশানে এবং কবরস্থানে দেহের সারি পড়ে থাকছে। সব মিলিয়ে যে পরিস্থিতির তৈরি হয়েছে দেশে তা দেখা যায়নি করোনার প্রথম পর্বেও।

ভারতে দৈনিক নতুন করোনা সংক্রমণ

সংক্রমণ শৃঙ্খল ভেঙে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণের জন্য ইতিমধ্যেই বেশ কয়েকটি রাজ্যে লকডাউনের কড়াকড়ি ফিরিয়ে আনা হয়েছে। দিল্লিতে সোমবার রাত থেকে শুরু হয়েছে লকডাউন। আগামী সোমবার ভোর পর্যন্ত চলবে সেই লকডাউন। মহারাষ্ট্রেও এই মাস জুড়ে জারি হয়েছে ‘করোনা কার্ফু’। এ ছাড়াও বিভিন্ন রাজ্যে চলছে রাত্রিকালীন কার্ফু।

করোনার এই দ্বিতীয় ঢেউয়ের জেরে দেশের বেশ কয়েকটি রাজ্যের পরিস্থিতি ইতিমধ্যেই লাগামছাড়া হয়েছে। বাকি রাজ্যগুলির পরিস্থিতিও সেই দিকেই এগোচ্ছে। গত বছরের মতো এ বারেও দৈনিক আক্রান্ত এবং মৃত্যু সবথেকে বেশি মহারাষ্ট্রে। গত ২৪ ঘণ্টায় সেখানে আক্রান্ত হয়েছেন প্রায় ৫৯ হাজার। সে রাজ্যে মারা গিয়েছেন ৩৫১ জন। এর পর রয়েছে উত্তরপ্রদেশ। মঙ্গলবার সেখানে দৈনিক আক্রান্ত ২৮ হাজার ছাড়িয়েছে। রাজধানী দিল্লিতে তা সাড়ে ২৩ হাজার। কর্নাটক এবং কেরলে তা ১৫ হাজার এবং ১৩ হাজারের বেশি। ছত্তীসগঢ়ে অবশ্য গত কয়েক দিনের থেকে সংক্রমণ একটু কমে সাড়ে ১৪ হাজারের নীচে রয়েছে। মধ্যপ্রদেশে দৈনিক আক্রান্ত মঙ্গলবার ১২ হাজার ছাড়িয়েছে। তামিলনাড়ু, গুজরাত এবং রাজস্থানেও দৈনিক আক্রান্ত ১০ হাজার ছাড়িয়েছে। এর মধ্যেই দেশে চলছে টিকাকরণ কর্মসূচি। গত ২৪ ঘণ্টায় দেশে ৩২ লক্ষ ৭৬ ৫৪৭ জনকে টিকা দেওয়া হয়েছে। এ নিয়ে দেশে মোট করোনাটিকার ডোজ দেওয়া হল ১২ কোটি ৭১ লক্ষ ২৯ হাজার ১১৩।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.