ভারতে করোনার দ্বিতীয় ঢেউয়ের ভয়াবহতার জন্য ডেল্টা প্রজাতিকেই দায়ী মনে করছেন অনেকেই। তবে এই প্রজাতি দাপিয়ে বেড়াচ্ছে বিশ্বের ৯৬টি দেশে। ডেল্টা সংক্রমণের হার এতটাই বেড়ে যায় ব্রিটেনে যে লকডাউন খোলার সময় পিছিয়ে দিতে হয়েছে প্রধানমন্ত্রী বরিস জনসনকে। সম্প্রতি বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা বা হু জানিয়েছে ভবিষ্যতে ডেল্টাই সবচেয়ে মারাত্মক প্রজাতি হয়ে দাঁড়াবে।
ব্রিটেনের কেন্টে প্রথম পাওয়া গিয়েছিল আলফা প্রজাতির খোঁজ। সেই প্রজাতির তুলনায় ৬০ শতাংশ বেশি সংক্রমক ডেল্টা প্লাস, যা ইতিমধ্যেই ডেল্টা প্রজাতি থেকে রূপ বদলে ভারতের কিছু রাজ্যে ছড়িয়ে পড়েছে।
ডেল্টা সংক্রমণের দ্বিগুণ হয়ে ছড়িয়ে পড়ার হারও অনেকটাই বেশি। মোটে ৪.৫ থেকে ১১.৫ দিনের মধ্যে এই সংক্রমণ দ্বিগুণ হয়ে যাওয়ার ক্ষমতা রাখে।
জুন মাসে এই প্রজাতি নিয়ে এক দীর্ঘ গবেষণা চালায় স্কটল্যান্ডের এক দল গবেষক। তাঁরা দেখেছেন আলফা প্রজাতির তুলনায় ডেল্টার সংক্রমণ হাসপাতালে ভর্তি করার মতো পরিস্থিতি অনেক বেশি বাড়িয়ে দিচ্ছে।
ল্যানসেট প্রত্রিকায় প্রকাশিত এই গবেষণা অনুযায়ী যাঁদের কোনও রকম কোমর্বিডিটি রয়েছে, বা যাঁদের বয়স বেশি, তাঁদের ডেল্টা সংক্রমণের ঝুঁকিও বাকিদের তুলনায় বেশি। ‘পাবলিক হেলথ ইংল্যান্ড’ জানিয়েছে, যে কমবয়সিদের টিকাকরণ হয়নি, তাঁদেরও যথেষ্ট ঝুঁকি রয়েছে।
এই গবেষণায় স্কটল্যান্ডের ১৯,৫৪৩ জন সংক্রমিত এবং ৩৭৭ হাসপাতালে ভর্তি করোনারোগীদের নেওয়া হয়েছিল। তার মধ্যে ৭৭২৩ রোগীই ডেল্টা প্রজাতি দ্বারা সংক্রমিত। ১৩৪ জনকে হাসপাতালেও ভর্তি করতে হয়েছিল একই কারণে।
যাঁদের দু’টি টিকাই নেওয়া হয়ে গিয়েছে, তাঁদের ডেল্টা সংক্রমণের ঝুঁকি কম, জানাল এই গবেষণা। ‘পাবলিক হেলথ ইংল্যান্ড’এর অনুযায়ী ফাইজার এবং অ্যাস্ট্রাজেনেকার তৈরি প্রতিষেধক ডেল্টা প্রজাতির বিরুদ্ধে অনেকটাই কার্যকর। হাসপাতালে ভর্তি হওয়ার মতো পরিস্থিতি তাঁর ৯০ শতাংশ পর্যন্ত আটকাতে সক্ষম। তবে টিকাকরণ হয়ে গেলেও যে কিছু কিছু ক্ষেত্রে ডেল্ট সংক্রমণ হওয়া সম্ভব, তা জানিয়েছে এই গবেষণা।