করোনা ভাইরাসের(corona virus) সম্ভাব্য প্রতিষেধক ‘কোভ্যাক্সিন’ ক্লিনিক্যাল ট্রায়ালের চূড়ান্ত প্রস্তুতি শুরু করে দিল ইন্ডিয়ান কাউন্সিল ফর মেডিক্যাল রিসার্চ বা আইসিএমআর। ক্লিনিক্যাল ট্রায়ালের জন্য মোট ১২টি ‘পরীক্ষাকেন্দ্রে’র একটি তালিকা ইতিমধ্যেই প্রস্তুত করা হয়েছে। ঠিক হয়েছে ট্রায়ালের প্রথম দুই পর্বে মোট ১,১০০ জনের ওপর এই ভ্যাকসিন প্রয়োগ করা হবে। আইসিএমআর (ICMR) দাবি করেছে, ‘কোভ্যাক্সিন’-এর ট্রায়ালে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার বা ‘হু’ গাইডলাইন মেনেই এগোনো হচ্ছে। যেভাবে দেশে করোনা ভাইরাসের সংক্রমণ বাড়ছে তাতে জরুরি ভিত্তিতে ভ্যাকসিন আনা প্রয়োজন হয়ে পড়েছে বলেই মনে করছে আইসিএমআর সহ কেন্দ্রীয় সরকার। তবে কোনও ক্ষেত্রেই প্রাণের ঝুঁকি নেওয়া হবে না। এখনও পর্যন্ত গোটা বিশ্বের বিভিন্ন দেশে মোট ১০০টি টিকার ক্লিনিক্যাল ট্রায়াল হয়েছে। কিন্তু কোনওটিই করোনার টিকা হিসেবে পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হতে পারেনি।
কোনও ভ্যাকসিন প্রি-ক্লিনিকাল ট্রায়াল অতিক্রম করলেই ক্লিনিকাল ট্রায়ালে যেতে পারে। প্রি-ক্লিনিকাল ট্রায়ালের অর্থ, বিভিন্ন প্রাণীর শরীরে ভ্যাকসিন প্রয়োগ করা। ‘কোভ্যাক্সিন’ সেই পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হতে পেরেছে। এবার শুরু হবে ক্লিনিক্যাল ট্রায়াল। এই ট্রায়ালের প্রক্রিয়া বেশ দীর্ঘ। ভাইরোলজিস্টদের মতে, বয়স, বর্ণ, রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা নির্বিশেষে বহু মানুষের উপর এই প্রতিষেধক প্রয়োগ করে পরীক্ষা করা হয়। মোট তিন ধাপে এই ট্রায়াল প্রক্রিয়া সম্পন্ন করা হয়। এর মধ্যে প্রথম দু’ধাপের ট্রায়াল শুরু হবে খুব শীঘ্রই। সেজন্য মোট ১,১০০ জন স্বেচ্ছাসেবকের নাম নথিভুক্ত করছে আইসিএমআর।
আইসিএমআরের এমন প্রস্তুতির পরেই তাই প্রশ্ন উঠতে শুরু করেছে তাহলে কি ১৫ আগস্ট কী ভারত বায়োটেকের সৌজন্যে দেশ তথা বিশ্ব কী পেতে চলেছে করোনা ভাইরাসের বিরুদ্ধে লড়াইয়ের প্রথম ভ্যাকসিন ? এমনিতেই একাংশ চিকিৎসক ও বিজ্ঞানীরা তড়িঘড়ি এই ভ্যাকসিন তৈরীর বিষয়টিকে প্রশ্নের মুখে ফেলেছে। আইসিএমআর অবশ্য সাফাই দিয়ে জানিয়েছে, লাল ফিতের পাশে যাতে কোনওভাবেই ভ্যাকসিন তৈরীর কাজ আটকে না থাকে সেই জন্য সরকারপক্ষ বেশ কিছু ছাড় দিয়েছে ‘কোভ্যাক্সিন’ (Covaxin) নির্মাণের ক্ষেত্রে। আপাতত ক্লিনিক্যাল ট্রায়ালের সাফল্যের কামনা করছে সারাদেশ। কারণ লকডাউন উঠে যাওয়ার পর দেশের করোনা ভাইরাসের গ্রাফ ঊর্ধ্বমুখী হয়েছে। দেশের করোনা আক্রান্ত ব্যক্তিদের সংখ্যা সাত লক্ষ পেরিয়ে গিয়েছে। এমতাবস্থায় আইসিএমআর চাইছে ক্লিনিক্যাল ট্রায়ালের সাফল্যের পর দ্রুতগতিতে ভ্যাকসিন বাজারে এনে করোনা ভাইরাসের (Coronavirus) মহামারিকে জব্দ করতে।