জয় গোস্বামীর চিকিত্সায় সরকারি সহায়তা নেওয়ায় বিতর্ক উঠেছে। এই সহায়তায় প্রশ্ন তোলায় কবির প্রতি অসম্মান করা হয়েছে বলে পুলিশে অভিযোগ করেছেন কবি এবং কবিকন্যা। পুলিশে অভিযোগের প্রতিবাদ উঠেছে নেটিজেনদের মধ্যে। কবি জয় গোস্বামী এবং মুখ্যমন্ত্রী সম্পর্কে অসম্মানজনক পোস্টের অভিযোগে শুক্রবার বিধাননগর উত্তর থানার সাইবার ক্রাইমে অভিযোগ দায়ের করেন কবিকন্যা দেবত্রী গোস্বামী। এর পর শনিবার এই অবিযোগের প্রতিবাদে সমালোচনার মাত্রা বেড়েছে। ফেসবুকে সোমা ব্যানার্জী লিখেছেন, “দালালি করে খাবেন। আবার বললে লজ্জা লাগে!” সুরজিত্ সরকার লিখেছেন, “যিনি (প্রশ্ন) করেছেন, তিনি সঠিক প্রসঙ্গই উত্থাপন করেছেন।
ঘটনাটা যদি সত্যি হয় তাহলে সাধারন মানুষের জানার অধিকার আছে। কারন টাকাটা সাধারন মানুষের ট্যাক্সের। আর সেই টাকায় রাজ্য সরকার কেনো এদের বেসরকারি হাসপাতালের বিল মেটাবে। আর যদি তাই যদি হয় তাহলে সবার উচিত বেসরকারি হাসপাতালে চিকিত্সা করার পর তার বিল সরকারের কাছে পাঠিয়ে দেওয়া।
ওনারা আলাদা কেন সুবিধা পাবে। ছি:!” বিশ্বনাথ ভৌমিক লিখেছেন, লিখেছেন, “এত সহিষ্ণুতার পাঠ দিয়ে কেউ অসহিষ্ণুতার পরিচয় রাখলে তাকে কি বলা উচিত্? কেউ তার মতামত প্রকাশ করলে সে তো ক্রিমিনাল হয়ে যায় না, কাউন্টার বিবৃতি দিয়ে তাকে নস্যাত্ করা যায় তো! অথচ দেখুন কৃমি-নাল রা অবাধে বিচরণ করছে।
রাস্ট্রশক্তির অপব্যবহার নিয়ে যারা গলার শিরা ফুলিয়ে দিত তারাই সেই শক্তিকে প্রয়োগ করছে। কলমের ধার এত কমে গেল যে কোন ব্যক্তির মতামত পছন্দ না হলেই তাকে পুলিশের হাতে তুলে দিতে হবে? এর একটা পজিটিভ দিক আছে -মানুষ অনেক লুক্কায়িত দুর্গন্ধের ঘ্রাণ পেল,অনেকে ইতোমধ্যে চিনে গেছে এই দুর্গন্ধের উত্স গুলিকে, বাকী অনেকেই এই নতুন পাঁকের খবর টা পেয়ে গেল, তারাও এবার নাকে রুমাল দেবে। এই পাঁক গুলো চটিতে পটি লেগে থাকা সত্বেও রোজ চেটে দেয় বিনিময়ে সিলভার টনিক হোম ডেলিভারি হয়ে যায়।
জিও মূক ও বধির বুদ্ধিজীবী কাঙাল হারাধন।” ভাষ্কর ঘোষ লিখেছেন, “জয় বাবু কে সাহায্য করুন কোনও ক্ষতি নেই। কিন্ত যখন সাধারণ মানুষরা বেসরকারী হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের অমানবিক আচরণের মুখোমুখি হন তখন সরকারের এই মানবিক মুখ দেখতে পাই না।” দিবাকর দাস লিখেছেন, “আনুগত্য প্রকাশ করেছেন, এতে ভুল কিছু বলেছে কি? উচ্ছিষ্ট জীবিদের এই ভাবেই সংসার চলে।” অমিত দাস লিখেছেন, “আহা ! সোনা গো আমার!!
সত্যি শুনতে খুব কষ্ট হয়!!” অজয় দাস লিখেছেন, “কবি প্রমান করিলেন তিনি সত্যই দুর্বল মানুষ।” সম্রাট মিত্র লিখেছেন, “কত্তা, নজ্জা কোত্তে নেইকো.. নজ্জা বেজায় মূল্যবান জিনিস, ওটা হকলের থাকে নে গো কত্তা। দিচ্চে যকন খাও..। ” প্রদীপ সূত্রধর লিখেছেন, “আ হা রে তৈলজীবি।
কি মান আবার সন্মান।” মৌমিত ভট্টাচার্য লিখেছেন, “একটি স্বাস্থ্য বীমার বিল পেতে আমাদের অবস্থা খারাপ হয়ে যায়। আর এনারা তথাকথিত গুনিজন, টাকাপয়সা ও নেহাত মন্দ নেই তাও এনাদের বেসরকারি হাসপাতালের চিকিত্সার খরচ সরকার কেন দেবে? লজ্জা থাকলে উনি এই সাহায্য নিতেন না।” দেবক ব্যানার্জী লিখেছেন, “জয় গোস্বামীর চিকিত্সায় সরকারী খরচ: এটা সাহায্য নয়, কবির প্রতি সম্মান প্রদর্শন। সমালোচনা করা ভাল, কিন্ত সব বিষয়ে সমালোচনা করলে লোকে পাগল বলবে।” দেবকবাবুর এই স্তুতির প্রতিবাদ করেছেন অনেকে।
রাজীব দেব লিখেছেন, “দুটো জিজ্ঞাসা : ১) ওঁর কি নিজের চিকিত্সা করানোর মত আর্থিক সঙ্গতি নেই? ২) রয়্যালটি থেকে প্রাপ্ত লক্ষ লক্ষ টাকার মধ্যে উনি কি কখনও রাজ্যের ত্রাণ তহবিলে দান করেছেন?” অনিরুদ্ধ মজুমদার লিখেছেন, “সে বিচারে অনেকের অনেক সম্মান প্রাপ্য। তাঁরা কি সেটা পাচ্ছেন? জয় গোস্বামীর চিকিত্সায় সরকার খরচ করেছে সেটা আমার আপনার করের টাকা।
আর ঠিক সেই করের টাকা থেকেই প্রতি মাসে কয়েক লক্ষ টাকা (আনুমানিক দুই লক্ষ) জয় গোস্বামী সরকারি বেতন পান নজরুল অ্যাকাডেমির সভাপতি হিসেবে। আর দুটাকা কেজি চাল খায় মানুষে। বলি সম্মানের তো একটা সীমা পরিসীমা আছে নাকি?” দ্বীপান্বিতা সাধুখাঁ লিখেছেন, “২ লক্ষ মাসে পেয়েও সরকার খরচ দিচ্ছে আর গরীব নিরীহ সাধারণ মানুষ এক মুঠো ভাতের জন্য হাহাকার করছে। এরা নির্লজ্জতার সব সীমা ছাড়িয়ে গেছে।
গরীবদের পেট মেরে করের টাকায় সন্মান প্রদর্শন হচ্ছে। প্রচুর মানুষ আছে সন্মান প্রাপ্য সবাইকে দিয়ে দেখাক।” অভিষেক রায় লিখেছেন, “বলা হচ্ছে এই ফান্ড আর্থিক দিক দিয়ে দুর্বল মানুষদের সাহায্যের জন্য। যদি তাই হয় তাহলে এটা কি মিসইউজ অফ ফান্ড নয়? কবিকে অন্য ফান্ড থেকে সাহায্য করলে প্রশ্ন তোলার অবকাশ ছিল না।
কিন্তু এর ফলে প্রকৃত প্রয়োজন যাদের তারা বঞ্চিত হলেন।” কুহেলি সরকার লিখেছেন, “রাজ্যে অনেক কবি আছেন,অনেক গুণী মানুষ আছেন তাদের চিকিত্সার খরচ বহন করুক তাহলে বোঝা যাবে সন্মান প্রদর্শন। একজন ব্যক্তির জন্য করলে ওটা সন্মান প্রদর্শন বলা যায়? বিশিষ্ট ফুটবলার তুলসিদাস বলরাম এখনো ঘরে শুয়ে একটু খোঁজ নিই না।” দীপ্তিমান বসু লিখেছেন, “দেশ পত্রিকায় থাকাকালীন জয় গোস্বামী, আবুল বাশার ইত্যাদি’র কাজকম্ম আমি ভালোই জানি। এই সাপোর্ট সাহিত্যকর্মের থেকেও অনেক বেশি তাঁর কাঁপা কাঁপা আনুগত্যের জন্য।” শুভঙ্কর দে লিখেছেন, “ব্যক্তিগত সন্মান প্রদর্শনে ব্যক্তিগত অর্থ খরচ করাই কাম্য নয় কি?” জয়ন্ত কুমার ঘোষ লিখেছেন, “জয় গোস্বামীকে সরকারের সাহায্য একদম সঠিক সিদ্ধান্ত, একথা কিন্তু হলফ করে বলা যাচ্ছে না।