দেশজুড়ে চলছে অতিমারীর তান্ডব। মারণ ব্যাধির থাবায় বিপর্যস্ত জনজীবন। কঠিন এই পরিস্থিতিতে অদৃশ্য ব্যাধির হাত থেকে বাঁচতে ভ্যাকসিন গ্রহণই একমাত্র পথ। দেশজুড়ে গত তিনমাস ধরে ভ্যাকসিন উৎসব শুরু হয়ে গেলেও মোট জনসংখ্যার মাত্র ২০ শতাংশ লোক এই টিকা নিয়েছেন। শুধু তাই নয়, ভ্যাকসিন গ্রহন সংক্রান্ত একটি ডেটায় দেখা গিয়েছে যে, দেশের ৭২৬ টি জেলার মধ্যে ৩৭ টি জেলায় ৫ শতাংশ মানুষ ভ্যাকসিন গ্রহণ করেছেন। সবমিলিয়ে মাত্র ২০ শতাংশ মানুষ এখনও পর্যন্ত এই ভ্যাকসিন গ্রহনের উৎসবে সামিল হয়েছেন৷
কো-উইন (Co-Win) অ্যাপের তথ্য অনুসারে, এখনও পর্যন্ত ভ্যাকসিন গ্রহণে উল্লেখযোগ্য ভূমিকা পালন করেছে পডুচেরী(Poducherry) এবং গুজরাটের জামনগর (Jamnagar)। জানা গিয়েছে, দেশের এই দুই রাজ্যে জনগণের এক-তৃতীয়াংশ ভ্যাকসিনের প্রথম ডোজ নিয়ে ফেলেছেন।
শুধু তাই নয়, দেশের বিভিন্ন রাজ্য ও জেলায় জেলায় ভ্যাকসিনের রোলআউট পর্ব শুরু হয়ে গেলেও টিকা প্রদানের আওতায় এসেছে জনসংখ্যার অতিক্ষুদ্র সংখ্যক মানুষ। দেশের বিভিন্ন রাজ্যে মাত্র ১০ থেকে ২০ শতাংশ মানুষ করোনার টিকা গ্রহণ করেছেন। এছাড়াও দেশের মধ্যে সবথেকে কম ভ্যাকসিন গ্রহণ করেছে কর্ণাটকের বিজাপুর এবং আসামের দক্ষিণ সালমারা।
কো-উইন (CoWIN) তথ্য অনুসারে, উত্তরপ্রদেশ, বিহার, মধ্যপ্রদেশ, মহারাষ্ট্র, তামিলনাড়ু এবং উত্তর-পূর্ব রাজ্যের অনেক জেলা তাদের মোট জনসংখ্যার ১০ শতাংশেরও কম মানুষকে টিকা প্রদান করেছেন।
তবে, রাজস্থান, গুজরাট, ছত্তিশগড়, উত্তরাখণ্ড, হিমাচল প্রদেশ এবং কেরলের বেশিরভাগ জেলা জনসংখ্যার ১০ শতাংশেরও বেশি মানুষকে টিকা দিয়েছে।
অন্যদিকে করোনার দ্বিতীয় ঢেউয়ে বিশ্বের মধ্যে দ্বিতীয় ক্ষতিগ্রস্ত দেশ হল ভারত। মারণ ব্যাধিতে এখনও পর্যন্ত ২.২ লাখ মানুষ প্রাণ হারিয়েছেন। দেশে করোনা আক্রান্তের সংখ্যা ১ কোটি ছুঁয়েছিল গত ১৯ ডিসেম্বর। চলতি মে মাসের ৪ তারিখ পর্যন্ত দেশে করোনা সংক্রমিত রোগীর সংখ্যা ২কোটি পার করেছে।
এই অবস্থায় কেন্দ্রীয় সরকার ১৮ বছরের ঊর্ধ্বে সকলের জন্য টিকা নেওয়ার কথা জানালেও দেশজুড়ে ভ্যাকসিনের ঘাটতিতে তা সম্ভব হচ্ছে না। গত ১ মে থেকে দেশজুড়ে ভ্যাকসিনের তৃতীয় ডোজ প্রদানের কর্মসূচী শুরু হলেও গত মাসে প্রায় ৪০ লাখ লোক টিকা গ্রহণ করেছেন। এছাড়াও ৩ মে পর্যন্ত ১৬ লাখ লোককে টিকা দেওয়া হয়েছে।
যদিও সম্প্রতি স্বাস্থ্যমন্ত্রকের যুগ্ম-সচিব লব আগরওয়াল জানিয়েছেন, করোনাকে বাগে আনতে দেশজুড়ে টিকা প্রদানের কাজ আরও জোরদার করা হবে। ভ্যাকসিনের সরবরাহ বাড়ানো হবে। প্রতিটি মানুষ যাতে টিকা নিতে পারেন তারজন্য প্রয়োজনে আরও টিকা কেন্দ্র খোলা হবে।