লোকসভা ভোটে ধরাশায়ী কংগ্রেস৷ দলের ভরাডুবির ভার নিজের কাঁধে নিয়ে কংগ্রেস সভাপতির পদ থেকে ইস্তফার ইচ্ছা প্রকাশ করেছিলেন রাহুল গান্ধী৷ তবে, তা বাতিল করে দিলেন দলের ওয়ার্কিং কমিটির সদস্যরা৷ রাহুলকে নেতা মেনেই দলের হাল ফেরানোর কথা ওয়ার্কিং কমিটির সদস্যদের গলায়৷
বৃহস্পতিবার ফল প্রকাশ হয়েছে লোকসভা ভোটের৷ সেখানেই স্পষ্ট দেশের মানুষ মোদী বিরোধীদের উপর আস্থা রাখেননি৷ কংগ্রেসের আসন বাড়লেও গেরুয়া শিবিরের জয়ের পাশে তা ম্লান৷ এই অবস্থায় দলের হারের কারণ নিয়ে নয়াদিল্লিতে চলছে কংগ্রেস ওয়ার্কিং কমিটির বৈঠক৷
বৈঠকে উপস্থিত রয়েছেন সনিয়া গান্ধী, রাহুল গান্ধী, প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী মনমোহন সিং, রাজ্যসভার দলনেতা গুলাম নবি আজাদ, মল্লিকার্জুন খাড়গে, প্রিয়াঙ্কা গান্ধী পঞ্জাবের মুখ্যমন্ত্রী অমরেন্দ্র সিং, শিলা দিক্ষিতরা৷
ভোটের ফল প্রকাশের পরপরই দলের নেতৃত্ব ছেড়ে দিতে চেয়েছিলেন রাজীব-সোনিয়া তনয়৷ তবে দলীয় বিষয় নিয়ে প্রকাশ্যে চর্চা হোক তা চায়নি কংগ্রেস নেতৃত্ব৷ জানা যায় এদিন সভাপতির পদ থেকে ইস্তফা দেওয়ার প্রস্তাব দেন রাহুল গান্ধী। তিনি জানান দলের সংগঠনে বদল আনা প্রয়োজন৷ তবে সঙ্গে সঙ্গে তা বাতিল করে দেন ওয়ার্কিং কমিটির সদস্যরা৷ তাঁকেই দায়িত্বে থাকার পরামর্শ দেন তারা৷
সূত্রের খবর, ওয়ার্কিং কমিটির সদস্যরা দলের সবাপতির একসঙ্গে একমত যে, দলে সাংগঠনিক বদল দরকার৷ তবে তা সভাপতির পদত্যাগের মধ্যে দিয়ে নয়৷ বরং দলের খারাপ সময় সর্বোচ্চ পদে থাকুন তিনি৷ সেখান থেকেই কাজ পরিচালনা করুক রাহুল গান্ধী৷ সভাপতিকে জানান ওয়ার্কিং কমিটির সদস্যরা৷ তবে কংগ্রেস মুখপাত্র রনদীপ সিং সূর্যেওয়ালা রাহুল গান্ধীর পদত্যাগের ইচ্ছের কথা অস্বীকার করেন৷
গতবছর মে মাসে কর্নাটকে জেডিএসের সঙ্গে জোট বেঁধে রাজ্যে সরকার গঠন করে কংগ্রেস৷ সলতে পাকানো শুরু হয় জাতীয়স্তরে বিরোধী জোটের৷ পরে হিন্দি বলয়ের তিন রাজ্য মধ্যপ্রদেশ, ছত্তীসগঢ় ও রাজস্থানেও ভালো ফল করে হাত শিবির৷ তাদের সমর্থনও দেয় এসপি, বিএসপি৷ পরে রাহুলের নেতৃত্ব নিয়ে টানাপোড়েন চলে বিরোধী শিবিরে৷ বেশ কয়েকটি রাজ্যে কংগ্রেস জোট সঙ্গী ফিরে পেলেও বাংলা, উত্তরপ্রদেশে একা লড়াই করে কংগ্রেস৷
এই পরিস্থিতিতে ১৯ এর লোকসভাতে প্রচারে মোদীর বিরুদ্ধে সুর চড়ান কংগ্রেস সভাপতি রাহুল গান্ধী৷ তবে শেষ রক্ষা হয়নি৷ গেরুয়া সুনামিতে ধুয়ে মুছে গিয়েছে বিরোধী দলগুলি৷ এনডিএ যেখানে ৩৫৩ আসন পেয়েছে সেখানে কংগ্রেসের ঝুলিতে ৫২ আসন৷ দল কীভাবে ঘুরে দাঁড়াবে তারই কাটাছেঁড়া চলছে রাজধানীতে কংগ্রেস ওয়ার্কিং কমিটির বৈঠকে৷