দেশের সবচেয়ে প্রাচীন দলটি গত লোকসভা নির্বাচনে পেয়েছিল মাত্র ৪৪ টি আসন। এবছর আসন সংখ্যা সামান্য বেড়ে হয়েছে ৫২। মোদী ঝড়ে কার্যত উড়ে গিয়েছে রাহুল ব্রিগেড। পরাজয়ের কারণ বিশ্লেষণ করতে শনিবার বৈঠকে বসছে কংগ্রেস ওয়ার্কিং কমিটি। সেই মিটিং-এই ইস্তফা দেওয়ার ইচ্ছা প্রকাশ করতে পারেন দলের সভাপতি রাহুল গান্ধী। যদিও কংগ্রেস সূত্রে জানানো হয়েছে, সভাপতির ইস্তফা দেওয়ার প্রশ্নই ওঠে না।
এবার ভোটের আগে রাহুল স্লোগান দিয়েছিলেন, চৌকিদার চোর হ্যায়। কিন্তু ভোটের ফলে বোঝা যাচ্ছে, মানুষ সেকথা মেনে নেননি। ১৭ টি রাজ্যে কংগ্রেস একেবারে ধুয়েমুছে গিয়েছে বলা যায়। এমনকী গত ডিসেম্বরে যে তিনটি রাজ্যে তারা ভালো ফল করেছিল, সেখানেও ক্ষমতায় আসেনি।
ভোটের আগে কংগ্রেস নেহরু-গান্ধী পরিবারের আর এক সদস্য প্রিয়ঙ্কা গান্ধীকে রাজনীতিতে নামিয়েছিল। তাঁকে দেওয়া হয়েছিল পূর্ব উত্তরপ্রদেশের দায়িত্ব। তাঁর প্রচারে লোক হয়েছে অনেকে। কিন্তু কংগ্রেসের দিকে ভোট টানতে তিনিও ব্যর্থ হয়েছিলেন বলা যায়।
উত্তরপ্রদেশের অমেঠী দীর্ঘকাল যাবৎ নেহরু-গান্ধী পরিবারের দুর্গ বলে পরিচিত। এবার সেখানে রাহুল হেরেছেন বিজেপির স্মৃতি ইরানির কাছে। কংগ্রেস সভাপতি ওয়ানাড় কেন্দ্রটি জিতেছেন বটে কিন্তু তাতে অমেঠী হারানোর ক্ষতি পূরণ হয় না।
কংগ্রেসের এক প্রবীণ নেতা জানিয়েছেন, রাহুল ইস্তফা দিতে চাইলেও গৃহীত হবে না। কারণ তিনি দলের সকলের সঙ্গে আলোচনা করেই ভোটের কৌশল স্থির করছিলেন। প্রার্থীদের নাম স্থির করার ক্ষেত্রেও সকলের মতামত নিয়েছেন। পরাজয়ের দায় তাঁর একার হবে কেন?
লোকসভায় এবার ২০১৪ সালের মতোই প্রধান বিরোধী দলের তকমাও হারাতে চলেছে কংগ্রেস। প্রধান বিরোধী দল হতে গেলে ৫৪৩ আসনের লোকসভায় অন্তত ৫৫ টি আসন পেতে হয়। কংগ্রেস তার চেয়ে তিনটি কম পেয়েছে।
রাহুল ইতিমধ্যে জানিয়েছেন, দলের পরাজয়ের দায় তিনি নিচ্ছেন। কিন্তু এর পরে কী করবেন জানাননি। বৃহস্পতিবার তাঁকে সাংবাদিক বৈঠকে প্রশ্ন করা হয়, আপনি কি ইস্তফা দিচ্ছেন? তিনি বলেন, কংগ্রেস ওয়ার্কিং কমিটির সঙ্গে কথা বলে স্থির করব।
দলের তিন প্রবীণ নেতা ইতিমধ্যে ইস্তফা দিয়েছেন। তাঁদের মধ্যে আছেন উত্তরপ্রদেশ কংগ্রেসের শীর্ষ নেতা রাজ বব্বর, কর্ণাটকের এইচ কে পাটিল এবং ওড়িশা কংগ্রেসের প্রধান নিরঞ্জন পট্টনায়েক।