সাভারকর-বিরোধিতা কংগ্রেসের পরম্পরাগত ঐতিহ্য

ভারতবর্ষের জাতীয়তাবাদী নেতা বিনায়ক দামোদর সাভারকরকে ‘ভারতরত্ন’ উপাধি দেওয়ার প্রস্তাব ওঠামাত্রই কংগ্রেস শিবির তৎপর হয়ে উঠেছে। স্বাধীনতার আগে ঠিক যেভাবে বীর সাভারকরের নাম শুনলেই কংগ্রেস নেতাদের গাত্রদাহ শুরু হয়ে যেত, আজ স্বাধীনতার ৭২ বছর পরেও সেই সাভারকরের নাম শোনা মাত্রই কংগ্রেসে একইভাবে প্রতিনিক্রিয়ািশীল আচরণ প্রকট হয়ে উঠেছে।
কয়েকদিন আগেই কংগ্রেস মুখপাত্র মনীশ তিওয়ারি নাগপুরে বলেছেন, ‘সাভারকরকে নয়, বরং নাথুরাম গডসেকে ভারতরত্ন দেওয়া হোক। মনীশ তিওয়ারির এ ধরনের ব্যঙ্গাত্মক উক্তিকে সমর্থন জানিয়েই বিজেপি-কে তোপ দেগেছেন কংগ্রেস নেতা রশিদ আলভি-ও। মনীশের থেকে আরও দু’পা এগিয়েই রশিদ বলেছেন, ‘সাভারকরের ইতিহাস সবার জানা আছে। সাভারকরের বিরুদ্ধে মহাত্মা গান্ধীকে হত্যার ষড়যন্ত্রের অভিযোগ রয়েছে। তবে তথ্য। প্রমাণের অভাবেই তাকে মুক্তি দিতে হয়েছিল। আজ বিজেপি সরকার বলছে, তাকেই ভারতরত্ন সম্মানে ভূষিত করা হবে। আমার আশঙ্কা, এরপর ভারতরত্ন প্রাপকদের তালিকায় নাথুরাম গডসের নামও হয়তো দেখতে পাব।
কংগ্রেসের এই সাভারকার-বৈরিতা নতুন কিছু নয়। স্বাধীনতা সংগ্রামের ইতিহাসে এই বৈরিতার ইতিহাস কালো অক্ষরে লেখা আছে। অধ্যায়ের পর অধ্যায় জুড়ে। এবং সেই ইতিহাস যতটা বেদনাদায়ক, ততটাই নির্মম। যতটা মিথ্যাচার, ততটাই অমানবিক। যতখানি সাভারকর বিরোধিতা, তার চেয়ে অনেক বেশি দেশ-বিরোধিতা, দেশবাসী বিরোধিতা, জাতীয়তাবাদী সত্তার বিরোধিতা।
কংগ্রেসের এই সাভারকর বিরোধিতার প্রথম এবং প্রধানতম কারণ হলো— সাভারকর ছিলেন এক জাতি এক সত্তা তত্ত্বে বিশ্বাসী। সাভারকর ছিলেন ভারতবর্ষকে এক এবং অভিন্ন ও অখণ্ড রাখায় বিশ্বাসী। সাভারকর ছিলেন চাণক্যসম বুদ্ধিদীপ্ত রাজনীতিবিদ। ঠিক যে যে কারণে স্বাধীনতা পূর্ববর্তী ভারতবর্ষে নেতাজী হয়ে উঠেছিলেন কংগ্রেস নেতৃত্বের কাছে দেশের শত্রু, জাতির শত্রু, ঠিক তেমনিভাবে ভারতীয় রাজনীতিতে মহাত্মা গান্ধীর অনুপ্রবেশের পর থেকেই সাভারকর হয়ে ওঠেন দেশবিরোধী গণশত্রু। কারণ কংগ্রেস তথা মহাত্মা গান্ধী এবং জওহরলাল নেহরুরা কোনোদিনই ব্রিটিশের দ্বিজাতি তত্ত্বের বিরোধিতা করেননি যা করেছিলেন সাভারকর। মহাত্মা গান্ধী ভারতের রাজনীতিতে যুক্ত হওয়ার অনেক আগে থেকেই সাভারকর বর্ণবৈষম্য ও অস্পৃশ্যতার বিরুদ্ধে লড়াই করেছেন। তিনি বরাবরই চেয়েছেন ধর্ম, বর্ণ ও জাতি নির্বিশেষে ভারত থাকুক অখণ্ড, আর সেই অখণ্ডতা রক্ষার জন্য তিনি জাতীয়তাবাদের মন্ত্র ‘হিন্দুত্ব’কে প্রাধান্য দিয়েছেন। কংগ্রেস মনে করে, সাভারকরের এটা ছিল বিশাল অপরাধ। কারণ সাভাররের হিন্দুত্বের ভাবনাটা কংগ্রেস নেতারা ইচ্ছাকৃতভাবেই ভুল ব্যাখ্যা করেছেন। সাভারকর বলেছিলেন, যারা এই ভারতকে নিজের পিতৃভূমি ও পুণ্যভূমি বলে মনে করে। তারাই ভারতীয়। হিন্দুত্ব তার কাছে কোনও ধর্মীয় আগ্রাসন নয়। তিনি বলতেন, হিন্দুত্ব হলো একটা ভৌগোলিক সংজ্ঞা, একটি ভারতীয় সংস্কৃতি। সুতরাং যাঁরা ভারতবর্ষে বাস করেন, তারা সকলেই হিন্দু, যেমনটা বিশ্বের প্রায় সব দেশই মেনে চলে। তিনি ভারতবর্ষের জনসংখ্যার বৈচিত্র্যে মুগ্ধ হতেন, তার বিকাশ কামনা করতেন এবং বলতেন, এই বৈচিত্র্য থাকা সত্ত্বেও একটা অদ্ভুত সংযোগের বাণী ছড়িয়ে যায় অবিরাম। এই মনোভাব থেকেই সাভারকর অস্পৃশ্যতার বিরুদ্ধে লিখেছিলেন একটি অসাধারণ আবেগময় কবিতা যেখানে তিনি ভারতবর্ষকে জাতি, বর্ণ, ধর্ম নির্বিশেষে এক হওয়ার আবেদন জানিয়েছেন। কবিতাটি মারাঠি ভাষায় লেখা হলেও গোটা দেশেই চরম আবেগ তৈরি করে। ভয় পেয়ে যায়। কংগ্রেস। তখন থেকেই শুরু হয়ে যায় মিথ্যা প্রচার— সাভারকর হিন্দুত্ববাদী। তিনি অন্য সব ধর্মের বিরোধী। কংগ্রেসের কাছে ধর্ম মানে ছিল হিন্দু, মুসলমান, জৈন, শিখ, বৌদ্ধ ইত্যাদি উপাসনা পদ্ধতি। কারণ ভোটের রাজনীতিতে বৈচিত্র্যময় ভারতবর্ষে তা ডিভিডেন্ড দিত বেশি। সাভারকর ভোটের কাঙাল ছিলেন না। তাই তার কাছে ধর্ম মানে ছিল আইনের অনুশাসন, দায়িত্ব, ন্যায়পরায়ণতা, প্রকৃতির সঙ্গে সাদৃশ্যযুক্ত এক নীতির বিধান। এত উচ্চমানের ভাবনা কি কংগ্রেস সহ্য করতে পারে?
না পারে না। যেমন পারেনি—সাভারকর যখন চেয়েছিলেন ভারতবর্ষের যুব সম্প্রদায় যোগ দিক ব্রিটিশ সেনাবাহিনীতে। যুদ্ধে যাক। কংগ্রেস নেতৃত্বের দুর্বল মস্তিষ্ক ধরতেই পারেনি যে কী কৌশলগত কারণে। ভারতবাসীকে যুদ্ধে প্রশিক্ষণ নিতে বলছেন। সাভারকর। তার দূরদৃষ্টি যে কতটা প্রখর ছিল। তা প্রমাণিত হলো, স্বাধীনতার পর পাকিস্তান যখন কাশ্মীর দখল করতে সামরিক বাহিনীকে কাজে লাগাল। ওই বাহিনীর মোকাবিলা করেছিলেন তাঁরাই যাঁরা সাভারকরের আহ্বানে সাড়া দিয়ে যুদ্ধ করতে শিখেছিলেন এবং কাশ্মীর থেকে পাকিস্তানকে হাত গোটাতে বাধ্য করেছিলেন। শুধু তাই নয়, নেতাজী সুভাষচন্দ্র বোসের আজাদ হিন্দ বাহিনীতেও ছিলেন এই সব প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত তরুণদেরই একটা অংশ। কংগ্রেসের গাত্রদাহ তো হবেই। এই সব বাহিনীই স্বীকার করে গেছেন, লিখে রেখে গেছেন রাসবিহারী বোস।
গান্ধী হত্যার সঙ্গে সাভারকরের কোনো প্রত্যক্ষ বা পরোক্ষ যোগ ছিল না। হ্যা, একথা সত্য, গান্ধী হত্যাকারী নাথুরাম গডসে সাভারকরের প্রিয়পাত্র ছিলেন। কিন্তু এই গড়সেই তো হিন্দু মহাসভার কনফারেন্সে সরাসরি বিরোধিতা করেছিলেন সাভারকারের ইতিহাস বলছে, যখন ব্রিটিশ শাসকরা সিদ্ধান্ত নিলেন, ভারত স্বাধীন হবে তবে ভারত হবে বিভাজিত। পাকিস্তানে সরকার গড়বে মুসলিম লিগ আর ভারতে কংগ্রেস, তখন হিন্দু মহাসভার কনফারেন্সে। নাথুরাম প্রস্তাব রেখেছিলেন, বিশ্বাসঘাতক কংগ্রেস সরকারকে বয়কট করক হিন্দু মহাসভা। সাভারকর ওই প্রস্তাব নাকচ করে দিয়ে বলেছিলেন, একটা অবান্তর প্রস্তাব রাখছ তুমি। কংগ্রেস সরকার বলতে তুমি কী বোঝাতে চাইছ? একটি স্বাধীন দেশের সরকারকে কোনো দলের সরকার বলা যায় না। বরং জাতীয় সরকার হিসেবে তাকে সম্মান দেওয়া উচিত। আমরা হিন্দু মহাসভা একটি দায়িত্বশীল দল। দেশের সংবিধান মেনে চলা আমাদের কর্তব্য। তোমাদের এরকম একনায়কতন্ত্রী মনোভাব হিন্দু মহাসভা এবং হিন্দু জাতি দুইয়ের পক্ষেই অপমানজনক। নাথুরাম ক্ষুব্ধ হলেন এবং নারায়ণ আপ্তেকে সঙ্গে নিয়ে গড়লেন নতুন। দল হিন্দু রাষ্ট্র দল। এই ইতিহাসই তো প্রমাণ। করে, নাথুরাম- সাভারকর সম্পর্কে চিড় ধরেছিল! এইইতিহাস তো এও প্রমাণ করে, সাভারকরের প্রতি কংগ্রেসের অকথ্য বিরোধিতার প্রতিশোধ নেওয়ার কথা। একবারও ভাবেননি। সরকার গঠনের জন্য কংগ্রেসের পথ মসৃণ করে তুলেছিলেন তিনি। কংগ্রেস কৃতজ্ঞতার মান রাখেনি। গান্ধী। হত্যার মিথ্যা অভিযোগে কংগ্রেসই ষড়যন্ত্র করে গ্রেপ্তার করাল সাভারকরকে। আর সেই চক্রান্তের মূল নায়ক ছিলেন মোরারজী দেশাই। যদিও আখেরে লাভ হয়নি কিছুই। নাথুরামের ফাসি হয়েছে। কিন্তু সাভারকরকে মুক্তি দিয়েছে আদালত। কিন্তু মুক্তি কি অতই সহজ? জওহরলাল যে তখনও দিব্যি বেঁচে! সেইতিহাসে আসছি একটু পরে। তার আগে আসা যাক আর এক চক্রান্তের ইতিহাস। সে ইতিহাস স্বাধীনতা-পূর্ববর্তী ভারতবর্ষের।
কংগ্রেস তখন মোটামুটি ব্রিটিশের সঙ্গে রফা করে নিয়েছে কীভাবে আসবে স্বাধীনতা। আর সাভারকরের পিঠে স্ট্যাম্প মেরে দিয়েছে সাম্প্রদায়িক এবং মুসলমান বিরোধী হিসেবে। অর্থাৎ এক কথায় দেশ বিরোধী হ্যা সেই মানুষটিই যিনি বলেছিলেন, রামধনু যেমন সব রঙের সমন্বয়ে অতি সুন্দর পটচিত্র হয়ে ওঠে, ভারতও সর্ব ধর্ম সমন্বয়ের রামধনু রাষ্ট্র। যেখানে হিন্দুত্বের মধ্যে অন্তর্নিহিত রয়েছে ইসলাম, ইহুদি, খ্রিস্টান, শিখ, জৈন, বৌদ্ধ সংস্কৃতির সমস্ত গুণাবলী। হা ওই দেশদ্রোহী অভিযোগেই বীর সাভারকরকে মিথ্যার দায়ে ব্রিটিশ আইনের ‘ডি’ তালিকাভুক্ত ভয়ংকর আসামি হিসেবে ৫০ বছরের মেয়াদে সাজা ঘোষণা করে পাঠিয়ে দেওয়া হলো আন্দামানের সেলুলার জেলে। ভারতের ইতিহাসে এত দীর্ঘমেয়াদি কারাবাসের আদেশ আর কোনও আসামির হয়নি। তেলের ঘানি টানা থেকে শুরু করে নানা পাশবিক অত্যাচারে বিধ্বস্ত সাভারকার বুঝে নিলেন, ব্রিটিশ সরকার তাকে আটকে রেখে নিজেদের কাজ হাসিল করতে চাইছে। কংগ্রেসও চাইছে নিঃশর্তে ক্ষমতা দখল করতে। ওই অসহনীয় পরিবেশেও তিনি কৌশল করলেন। ঘোষণা করলেন, তিনি লিখিতভাবে আত্মসমর্পণ করবেন। তবে সেই সঙ্গে তিনি দাবি জানালেন, তাঁর সঙ্গে মুক্তি দিতে হবে বাকি সব রাজনৈতিক বন্দিদের। মুক্তি পেলেন সাভারকর। কংগ্রেস এবং তাদের দোসর বামপন্থীরা আজও ঠাট্টা করে, সাভারকর পায়ে ধরে মুক্তি পেয়েছিলেন। কিন্তু যাঁরা এই অপপ্রচারটা করে বেড়ান, তারা চেপে যান যে, সাভারকরের মুক্তির দাবি উঠেছিল কংগ্রেসের অন্দরমহল থেকেই। সরাসরি জওহরলাল বলেননি কিন্তু বলেছিলেন বাল গঙ্গাধর তিলক। তিনি চিঠি লিখেছিলেন ব্রিটিশ স্বরাষ্ট্র সচিবকে সাভারকরের মুক্তি দাবি করে। কেন্দ্রীয় আইন পরিষদে একই দাবিতে প্রস্তাব পেশ করেছিলেন বল্লভভাই প্যাটেলের বড়োদাদা বিট্টলভাই প্যাটেল। এমনকী স্বয়ং মহাত্মা গান্ধীও ইয়ং ইন্ডিয়া পত্রিকায় লিখেছিলেন। যে সাভারকর ভাইদের সকলকেই মুক্তি দেওয়া উচিত। একই ভাবে এফ অ্যান্ড্রুজ, কে ভিরঙ্গস্বামী আয়ার প্রমুখও সেই দাবিতে গলা মিলিয়েছিলেন। কিন্তু আন্দামান থেকে বেরুলেও সাভারকর ‘স্বাধীন নাগরিক’-এর মর্যাদা পাননি। তাকে অন্তরীণ করে রাখা হয় রত্নগিরি কারাগারে। জেলে বসেই লেখেন ‘হিন্দুত্ব’। ১৯২৩ সালে বিট্টলভাই প্যাটেলের প্রস্তাবেই ফের মুক্তি পান সাভারকর।
কিন্তু জওহরলাল বেঁচে আছেন, শান্তিতে থাকবেন সাভারকর, তা কী করে হয়? তার ওপর গান্ধীহত্যার দায়মুক্ত হয়ে তিনি তখন মোরারজী দেশাইয়ের বিষ নজরে। অতএব ১৯৫০ সালে তাকে ফের গ্রেপ্তার করা হলো। অভিযোগ, তিনি পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী লিয়াকত আলি খানের ভারত ভ্রমণের প্রতিবাদ করেছেন। লিয়াকত আলি পাকিস্তানে ফিরে যাবার পর তাকে মুক্তি দেওয়া হলো বটে। কিন্তু মাঝে মাঝেই হুমকি, বিরোধিতা, অশান্তি এসব লেগেই রইল। ১৯৬৩ সালের ৮ নভেম্বর আচমকাই মারা গেলেন সাভারকারের জীবনসঙ্গিনী যমুনাবাঈ। একা হয়ে গেলেন ভারতীয় রাজনীতির বিরোধী শিবিরের অন্যতম নায়ক। মানসিক দ্বন্দ্ব তাকে বিপর্যস্ত করে তুলল। শেষ পর্যন্ত ১৯৬৬ সালে তিনি সত্যিসত্যিই আত্মসমর্পণ করলেন। এবার নিজের কাছে। ১ ফেব্রুয়ারি থেকে তিনি জল, খাওয়া-দাওয়া এমনকী ওষুধ খাওয়াও বন্ধ করে দিলেন। তিনি বললেন— আত্মসমর্পণ নয়, এটা তাঁর আত্মঅর্পণ। মৃত্যুর আগে তিনি একটি প্রবন্ধ লিখলেন। শিরোনাম : ‘আত্মহত্যা নহী, আত্মঅর্পণ।লিখলেন, যখন জীবনের লক্ষ্য শেষ হয়ে গেছে এবং সামাজিক সেবাকার্যের ক্ষমতাও আর নেই, তখন শুধু শুধু মৃত্যুর জন্য অপেক্ষা না করে স্বেচ্ছায় জীবনদান করাই শ্রেয়।
১৯৬৬-র ২৬ ফেব্রুয়ারি সাভারকরের আত্মঅর্পণ কর্মসূচি শেষ হলো। তিনি মৃত্যুকে আবাহন করে নিলেন। তখন তার বয়স ৮৩। কংগ্রেসের রাগ কি কমল?না। কংগ্রেস নেতা ও কর্মীদের সর্বস্তরে হুলিয়া জারি করা হলো, কেউ সাভারকররের স্মরণে অনুষ্ঠিত কোনো সভায় অংশ নিতে পারবেনা। হয়তো কংগ্রেস কিছুতেই ভুলতে পারছিল না যে, হাজার চেষ্টা করেও সাভারকরকে ফাঁসিকাঠে ঝোলানো যায়নি।
মাঝে কেটে গেছে ৬৩টা বছর। কম সময় নয়। তবুও মনীশ তিওয়ারিরা সক্রিয়। না, কিছুতেই সাভারকরকে ভারতরত্ন উপাধি দেওয়া যাবে না। প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী মনমোহন সিংহ অবশ্য একটু প্রত্যয়ী মনোভাবই দেখিয়েছেন। তিনি আজকের নেতাদের স্মরণ করিয়ে দিয়েছেন, সাভারকরের নামে পোস্টাল স্ট্যাম্প উদ্বোধন করেছিলেন। কংগ্রেস প্রধানমন্ত্রী ইন্দিরা গান্ধীই। তার মতামত, ব্যক্তি সাভারকর নয়, বরং তার মতবাদের বিরোধী কংগ্রেস। কংগ্রেসের কেন্দ্রীয় কমিটিই বিষয়টি সম্বন্ধে ভেবেচিন্তে। বিচার বিবেচনা করে সিদ্ধান্ত নেবে। কিন্তু ভুললে চলবে না, মনমোহন সিংহের চেয়ে অনেক বেশি সক্রিয় মণীশ তিওয়ারিরা। অতীতের সেই সাভারকর বিরোধিতার ইতিহাস কংগ্রেস ভুলবে কী করে। দল যায় যাক! ঐতিহ্য, পরম্পরা তো আর বিসর্জন দেওয়া যায় না!
সুজিত রায়

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.