প্রথমে দেশপ্রেম, পরে দুর্নীতি। মঙ্গলবার মহারাষ্ট্রে নির্বাচনী প্রচারে গিয়ে প্রথমে দেশপ্রেমের ইস্যু নিয়ে কংগ্রেসকে আক্রমণ করেন মোদী। তাঁর মতে, পাকিস্তানের সুরেই ভোট প্রচার করছে কংগ্রেস। পরে মধ্যপ্রদেশে আয়কর হানার প্রসঙ্গ তুলে প্রধান বিরোধী দলকে দুর্নীতিগ্রস্ত বললেন তিনি। সম্প্রতি মধ্যপ্রদেশে মুখ্যমন্ত্রী কমল নাথের ঘনিষ্ঠ কয়েকজনের বাড়িতে তল্লাশি করেন আয়কর দফতরের অফিসাররা। অভিযোগ, তল্লাশিতে হিসাব বহির্ভূত ২৮১ কোটি টাকার হদিশ পাওয়া গিয়েছে।
মোদীর কথায়, ওরা বলে চৌকিদার চোর হ্যায়। ছ’মাস ধরে বিরোধীরা ওই কথা বলে আসছে। এখন দেখুন, কোথা থেকে নোটের বান্ডিল উদ্ধার হচ্ছে? কারা চৌকিদারকে ভয় পায়? তাদের ডেরা থেকে যদি এত বেআইনি অর্থ পাওয়া যায়, তাহলে তো চৌকিদারকে ভয় পাবেই। রাফায়েল চুক্তিতে অস্বচ্ছতার অভিযোগ তুলে কংগ্রেস স্লোগান দিয়েছিল, চৌকিদার চোর হ্যায়। মোদী সেই স্লোগানের কথা উল্লেখ করেছেন।
আয়কর দফতরের দাবি, তদন্তে জানা গিয়েছে, দিল্লির তুঘলক রোডে এক ভিআইপি-র বাড়ি থেকে হিসাব বহির্ভূত ২০ কোটি টাকা দিল্লিতে এক ‘বড় রাজনৈতিক দলের’ সদর দফতরে পাঠানো হয়েছে। তুঘলক রোডে অনেক ভিআইপি-র বাড়ি আছে। আয়কর দফতর নির্দিষ্ট কারও নাম বলেনি।
মোদী সরাসরি কংগ্রেসকে কটাক্ষ করে বলেন, মধ্যপ্রদেশে তারা ছ’মাসও সরকার গড়েনি, এর মধ্যে তাদের ডেরা থেকে লক্ষ লক্ষ টাকা পাওয়া যাচ্ছে।
প্রধানমন্ত্রীর দাবি, ওই টাকা দিয়ে কংগ্রেস ভোট কেনে। তাঁর কথায়, কংগ্রেসের রাজনৈতিক সংস্কৃতিতেই আছে ভোট কেনাবেচা। ক্ষমতায় এসে তারা একটা কাজই করে। তা হল দুর্নীতি। খুব সততার সঙ্গে তারা দুর্নীতি করে।
বিরোধীদের অভিযোগ, রাজনৈতিক উদ্দেশ্যে মোদী তাঁদের বিরুদ্ধে আয়কর দফতরকে ব্যবহার করছেন। তাঁরা যাতে রাজনৈতিক প্রচার না করতে পারেন, সেজন্য তাঁদের বাড়িতে তল্লাশি চালানো হচ্ছে। সেই অভিযোগ পেয়ে নড়েচড়ে বসেছে নির্বাচন কমিশন। আয়কর দফতরের কাছে কৈফিয়ৎ চাওয়া হয়েছে, কেন এই সময়েই এতজন বিরোধী নেতার ঘনিষ্ঠদের বাড়িতে তল্লাশি করা হল?
আয়কর দফতর থেকে ইতিমধ্যে নির্বাচন কমিশনকে বলা হয়েছে, আমরা নিরপেক্ষভাবেই তদন্ত করছি।
এর মধ্যে প্রাক্তন কেন্দ্রীয় অর্থমন্ত্রী পি চিদম্বরম দাবি করেন, তিনি গোপন সূত্রে খবর পেয়েছেন, চেন্নাইয়ের শিবগঙ্গায় তাঁর বাড়িতে হানা দেওয়ার তোড়জোড় করছেন আয়কর দফতরের অফিসাররা। কারণ তাঁর ছেলে কার্তি চিদম্বরম ওই কেন্দ্র থেকে দাঁড়িয়েছেন। আয়কর দফতর থেকে বলা হয়েছে, রাজনৈতিক নেতাদের এমন ভিত্তিহীন মন্তব্য করা উচিত নয়।