শক্তির ধ্রুবীকরণ শুরু হয়ে গেছে যে নিয়ে কোনো সন্দেহ নেই। বিশ্বের আর্থিক এবং সামরিক শক্তি এবার পশ্চিম থেকে পূর্বের থেকে শিফট হতে শুরু হয়েছে। বিশ্বের পাওয়ার সেন্টার এত দ্রুতগতিতে পরিবর্তন হচ্ছে যে খুব শীঘ্রই সামরিক ও আর্থিক শক্তি আমেরিকা ও ইউরোপের হাত থেকে বেরিয়ে পূর্বের দেশ অর্থাৎ ভারত, চীন ইত্যাদির হাতে আসতে চলেছে। ২০৪০ পর্যন্ত পুরো বিশ্বের ছবি পরিবর্তন হওয়ার বড়ো সম্ভবনা রয়েছে যার প্রক্রিয়া শুরু হয়ে গেছে। এই চিন্তার কারণেই এখন আমেরিকা এখন চীনের উপর চাপ সৃষ্টি করার চেষ্টায় নেমেছে। অন্যদিকে চীন পুরো শক্তিকে নিজের অধীন রাখার জন্য ভারতকে ঘেরার পরিকল্পনা করেছে। এর কারণ শক্তির ধ্রুবীকরণের পর্যায়ে আগামী চীনের সবথেকে বড়ো প্রতিদ্বন্দ্বী হিসেবে ভারত উঠে আসবে।
তাই ভারতকে ঘেরার জন্য চীন একের পর এক বড়ো পরিকল্পনা করে রেখেছে। চীনি সরকার পাকিস্তান, শ্রীলঙ্কা, বাংলাদেশ মায়ানমারে নিজের বেস বানিয়ে ফেলেছে। এমনকি দ্বীপ রাষ্ট্র মালদ্বীপেও নিজেড বেস ক্যাম্প তৈরি করেছে। এছাড়াও বেল্ট ও রোড পরিকল্পনার মাধ্যমে পরিকাঠামো নির্মানের বাহানায় চীন নিজের রণনীতির দূরত্ব মধ্যেএশিয়ার পর্যন্ত বৃদ্ধি করছে। চীনের দাবি, যে সামুদ্রিক ব্যাবসার নিরাপত্তার জন্য এইসব নির্মাণ করা হচ্ছে। কিন্তু এটাকে অস্বীকার করা সম্ভব নয় যে ডিজুটির মতো আফ্রিকান দেশে চিনের তৈরি সৈন্য ক্যাম্প ভারতের জন্য একটা বড়ো বিপদ হয়ে দাঁড়িয়ে পড়তে পারে। বহু দেশকে চীন নিজের ঋণের জালে ফাঁসিয়ে তাদের দুব্যবহার শুরু করেছে। যার জন্য অনেক দেশ এখন ভারতের সাথে হাত মিলিয়ে চীনের থেকে বাঁচার চেষ্টারত।
আপনারা যদি এর পুরানো পাঠক হন তবে চীনের হাত থেকে ভারত কিভাবে মালদ্বীপকে বাঁচিয়ে ছিল তা অবশ্যই জানবেন। তবে যাইহোক চীনের অঘোষিত স্ট্রিং অফ পার্লস (String of Pearls) পরিকল্পনা ভারতের জন্য খুবই ভয়ঙ্কর সঙ্কেত। তবে এবার ভারতও পাল্টা পরিকল্পনা শুরু করেছে যা চীনের সব পরিকল্পনার এক প্রকার কাট বলা যেতে পারে। ভারত চীনের উপর প্রত্যাঘাতের নাম দিয়েছে THE IRON CURTAIN , এই প্রজেক্ট এর কাজ ভারতের বিরুদ্ধে চীনের নীতিকে বিফল করা। এই নীতির অন্তর্গত ভারত নান দ্বীপ ও দেশে সৈন্য ক্যাম্প তৈরি করছে। কিছু কিছু সৈন্য ক্যাম্প এর নাম গোপনও রাখা হয়েছে। চীন এখন যে দেশে সৈন্য ক্যাম্প তৈরি করার চেষ্টা করছে সেখানে ভারত কূটনৈতিকভাবে চীনকে অসফল করার চেষ্টা করছে।
অর্থাৎ ভারতকে ঘেরার জন্য চীন নতুন কোনো দেশে সৈন্য ক্যাম্প তৈরি করতে চাইলে সেখানের সরকারকে ভারত আগেই কূটনৈতিকভাবে ভারতের দিকে ঝুঁকিয়ে দেওয়ার কাজ করছে। হিন্দ মহাসাগরের গুরুত্বপূর্ণ দেশ সিঙ্গাপুরের সাথে সামরিক চুক্তি স্বাক্ষর করে যার অনুযায়ী সেখান থেকে জ্বালানি পাওয়ার সাথে সাথে প্রয়োজনীয় সময়ে সামরিক সাহায্যও পাবে। সিসিলি দেশের এক দ্বীপকে নৌসেনার দ্বীপ হিসেবে বিকশিত করতে ভারত কাজ করবে। ইন্দোনেশিয়াও ভারতের সাথে নৌসেনা সহায়তায় চুক্তি করেছে। সেই অনুযায়ী সাবাং দ্বীপে ভারত নৌ সেনার সহায়তা পাবে। চীনের প্রতিবেশী দেশ মঙ্গোলিয়ার সাথে ভারত এয়ার করিডর শুরু করার চুক্তি হয়েছে। তাজিকিস্তানেও ভারত নিজের প্রভাব বৃদ্ধি করেছে এবং চীনকে পাল্টা ঘেরার কাজ করেছে।
চীন ভারতকে আটকানোর জন্য পাকিস্তানকে ব্যাবহার করে, এর জন্য ভারত আফগানিস্তানকে তৈরি করছে। আফগানিস্তানে ভারত ব্যাপক নির্মাণ কার্য শুরু করেছে এবং আফগানিস্তানকে পাকিস্তানের বিপরীতে ব্যাবহার করা হবে। ভারত আফগানিস্তান এ পার্লামেন্ট হাউস, রোড, ড্যাম ইত্যাদি নির্মাণ কাজ শুরু করেছে। ভারত এক্ষেত্রে এক্ট ইস্ট এর নীতি নিয়র কাজ করছে। হিন্দ মহাসাগরে চীনের প্রভাবকে কাবু করতে ভারত সরকার আমেরিকা, জাপান ও অস্ট্রেলিয়াকে এক করে নিয়েছে।
ভারতের THE IRON CURTAIN এর সামনে চীনের স্ট্রিং অফ পার্লস ভেঙে পড়ার অবস্থায় চলে এসেছে। তবে এই প্রক্রিয়াকে লাগাতার অব্যাহত রাখতে হবে। আগামী দিনে ভারত POK পুনরুদ্ধার করতে পারলে ভারত আরো শক্তিশালী হতে পারবে। গিলগীট বালতিস্তান সামরিক দিক থেকে খুবই গুরুত্বপূর্ণ। ওই এলাকা ভারতকে যেভাবেই হোক নিজের মধ্যে সামিল করতে হবে হতে সমস্ত শত্রুকে মাত দেওয়া যায়।