রাশিয়ায় যখন দু’দেশের প্রতিরক্ষামন্ত্রীরা সীমান্তে শান্তি ফেরাতে বৈঠক করছে। সেই সময় প্যাংগং লেকের ধারে সৈন্য সমাবেশ বাড়াতে শুরু করেছে পিপল লিবারেশন আর্মি (People Liberation Army)। ভারতীয় সেনা (Indian Army) গত শনিবার প্যাংগং হ্রদের দক্ষিণে একাধিক পাহাড়ের চূড়ো দখল করে নেওয়ার পরে চুসুল সেক্টরে উল্লেখজনক ভাবে সেনা সমাবেশ বাড়াতে শুরু করেছে চিনা ফৌজ। হ্রদের দক্ষিণে মলডোর কাছে অতিরিক্ত ট্যাঙ্কবাহিনী মোতায়েন করা হয়েছে লাল ফৌজের পক্ষে। বেড়ে গিয়েছে সামরিক গাড়ির আনাগোনা, বেড়েছে পদাতিক সেনার সংখ্যাও। পাল্টা জবাবে রেজাং লা, রেচিন লা-সহ স্প্যানগুর গ্যাপ এলাকায় স্পর্শকাতর উঁচু স্থানগুলি দখল করে সেনা মোতায়েন বাড়িয়েছে ভারত। মিসাইল-যুক্ত টি-৯০ ট্যাঙ্কের পাশাপাশি আনা হয়েছে টি-৭২এম১ ট্যাঙ্ক। যেগুলি লাদাখের মতো ভূপ্রকৃতিতে অনায়াসে চলাফেরায় সক্ষম। বাড়ানো হয়েছে বায়ুসেনার গতিবিধি। পিপলস লিবারেশন আর্মিকে যাতে সবরকম অবস্থায় জবাব দেওয়া যায় তার জন্য প্রস্তুতি রাখছে ভারতীয় সেনাবাহিনী।
শুক্রবার রাশিয়ার মস্কোয় সাংহাই কোঅপারেশন অর্গানাইজেশনের বার্ষিক সম্মেলনে চিনের প্রতিরক্ষামন্ত্রী ওয়েই ফেংগের সঙ্গে বৈঠকে বসেন ভারতের প্রতিরক্ষামন্ত্রী রাজনাথ সিং। চিনের তরফেই এই বৈঠকের আর্জি জানানো হয়েছিল। নৈশভোজের আমন্ত্রণে সম্মতি জানায় ভারত। ভারতীয় সময় রাত সাড়ে ৯টা নাগাদ শুরু হওয়া এই বৈঠকে প্রতিরক্ষাসচিব অজয় কুমার এবং রাশিয়ায় ভারতের রাষ্ট্রদূত ডি বি ভেঙ্কটেশ বর্মাও উপস্থিত ছিলেন। প্রায় ২ ঘণ্টা ২০ মিনিট ধরে চলে বৈঠক।
রাজনাথ সিং (Rajnath Singh) বলেছেন, “সীমান্তে শান্তি বজায় রাখতে গেলে সবচেয়ে আগে দরকার বিশ্বাস। দুই দেশই শান্তিপূর্ণ সহাবস্থানে তখনই আসবে যখন বিশ্বাসের মর্যাদা রক্ষা হবে। আগ্রাসন দেখিয়ে জবরদস্তি অনুপ্রবেশ বন্ধ হবে, আন্তর্জাতিক নীতির সম্মান রক্ষিত হবে এবং বিশ্বাস রেখেই দুই দেশ শান্তির শপথ নেবে।” এদিকে সেনাপ্রধান নরবণে বলেন, ‘‘প্রকৃত নিয়ন্ত্রণরেখা এখন উত্তেজনাপূর্ণ হয়ে রয়েছে। সতর্কতামূলক পদক্ষেপ হিসেবে সেখানে প্রয়োজনীয় সেনা মোতায়েন করা হয়েছে।’’ দায়িত্ব নেওয়ার পরে অন্তত চার বার লাদাখ সফর করলেন সেনাপ্রধান। বেজিং ভারতীয় সেনার বিরুদ্ধে নিয়ন্ত্রণরেখা লঙ্ঘনের যে অভিযোগ এনেছে, তা খণ্ডন করে তিনি বলেন, ‘‘ভারত প্রকৃত নিয়ন্ত্রণরেখা বরাবর সেনা মোতায়েন করেছে মাত্র।’’ লাদাখে সেনা প্রস্তুতি খতিয়ে দেখার পাশাপাশি ফরোয়ার্ড লোকেশনে গিয়ে সেনাদের সঙ্গে কথা বলেন নরবণে। তাঁর কথায়, ‘‘ভারতীয় জওয়ানদের মনোবল একেবারে তুঙ্গে। তাঁরা যে কোনও চ্যালেঞ্জের মোকাবিলা করতে প্রস্তুত।’’