কাশ্মীর নিয়ে চিনের দাদাগিরি শুরু, রাষ্ট্রসংঘে বৈঠকের দাবি

এতদিন চুপ ছিল। এমনকী রাষ্ট্রসংঘে পাকিস্তানের সওয়ালের পরেও কাশ্মীর থেকে ৩৭০ ধারা প্রত্যাহার নিয়ে মুখ খোলেনি চিন। তবে স্বভাব যায়না মলেও। ফের ভারতের বিষয়ে নাক গলানো শুরু করল বেজিং। মঙ্গলবার রাষ্ট্রসংঘের সাধারণ অধিবেশনে কাশ্মীর নিয়ে আলোচনা করার প্রস্তাব দিয়েছিল ইসলামাবাদ। তবে সেসময় নিরপেক্ষতা বজায় রেখে সমর্থন জানায়নি চিন।

কিন্তু বৃহস্পতিবার রাষ্ট্রসংঘের নিরাপত্তা পরিষদে জম্মু কাশ্মীর থেকে স্পেসাল স্ট্যাটাস তুলে নেওয়ার বিরোধিতায় বিশেষ বৈঠকের দাবি জানিয়েছে চিন। নিরাপত্তা পরিষদে চিনের ঘনিষ্ঠ পোল্যাণ্ডকে এই ইস্যুতে চিঠিও পাঠিয়েছে বেজিং। বেজিংয়ের বিদেশমন্ত্রক সূত্রে তেমনই খবর। সংবাদসংস্থা পিটিআইকে দেওয়া এক সাক্ষাতকারে রাষ্ট্রসংঘের উচ্চপদস্থ আধিকারিক জানান, নিরাপত্তা পরিষদের বৈঠক চেয়ে চিঠি পাঠিয়েছে বেজিং। তবে এখনও কোনও নির্দিষ্ট তারিখ চূড়ান্ত করা হয়নি। চিঠির শুরুতেই ভারত পাকিস্তান প্রশ্ন শীর্ষক এক প্রস্তাব তোলা হয়েছে। সেখানে বেজিংকে পাঠানো পাকিস্তানের চিঠিরও উল্লেখ রয়েছে বলে সূত্রের খবর।

একই আলোচনা চেয়ে রাষ্ট্রসংঘেও চিঠি পাঠিয়েছে পাকিস্তান বলে খবর. এর আগে, পাকিস্তানের বিদেশমন্ত্রী সাহ মেহমুদ কুরেশি জানিয়েছিলেন কাশ্মীর থেকে ৩৭০ ধারা প্রত্যাহার করার বিষয়ে ভারতের অবস্থান পাকিস্তানকে ক্ষুব্ধ করেছে। এই বিষয়ে তাই রাষ্ট্রসংঘে দ্রুত আলোচনার ব্যবস্থা করা হোক। পোল্যাণ্ডের কাছেও একই মর্মে চিঠি পাঠায় ইসলামাবাদ।

তারিখ চূড়ান্ত না হলেও, রাষ্ট্রসংঘের পক্ষ থেকে বিষয়টি নিয়ে ভাবনাচিন্তা করা হচ্ছে বলে জানানো হয়েছে। তবে বেজিংয়ের পক্ষ থেকে সরকারি ভাবে কোনও বিবৃতি এখনও পর্যন্ত মেলেনি। কাশ্মীর নিয়ে নয়াদিল্লির সিদ্ধান্তে সেই অর্থে বিরোধিতা করতে শোনা যায়নি বেজিংকে৷ ফলে পাকিস্তানের পাশে চিন কতটা দাঁড়াবে, তা নিয়ে সন্দেহ থেকেই যাচ্ছে৷ কারণ সরকারি ভাবে এখনও বেজিং পাকিস্তানের পাশে দাঁড়ানোর কোনও বার্তা দেয়নি৷ এমনকী ইসলামাবাদের এই দাবির স্বপক্ষেও কোনও কথা বলতে শোনা যায়নি বেজিংকে৷

মঙ্গলবার রাষ্ট্রসংঘে পাকিস্তান জানায়, কাশ্মীর প্রসঙ্গে তারা এখনও চুপ রয়েছে, কিন্তু ভারত যেন সেই চুপ থাকাকে পাকিস্তানের দুর্বলতা না ভাবে৷ তবে পোল্যাণ্ডের বিবৃতি, কাশ্মীর ইস্যু নিয়ে দুই দেশেরই আলোচনার টেবিলে বসা উচিত৷ বিদেশমন্ত্রকের মুখপাত্র রবিশ কুমার রবিবার বলেন, সব ক্ষেত্রে চিন ভারতের অন্যতম বন্ধু৷ দ্বিপাক্ষিক সম্পর্ক মজবুত করতেই বিদেশমন্ত্রীর চিন সফর বলে উল্লেখ করেন তিনি৷ তবে চিনের পক্ষ থেকে কাশ্মীর নিয়ে ভারতের পদক্ষেপকে ইতিবাচক দৃষ্টিভঙ্গিতে দেখা হয়নি৷ তবে এর পালটা দিয়ে নয়াদিল্লি জানায়, কোনও দেশের অভ্যন্তরীণ ব্যাপারে যেমন ভারত নাক গলায় না, ভারতও আশা করবে, অন্য কোনও তৃতীয় শক্তি যেন ভারতের অভ্যন্তরীণ ব্যাপারে নাক না গলায়৷

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.