সামরিক যন্ত্রাংশ ও যুদ্ধবিমান বানানোর গোপন বোঝাপড়ায় সামিল হয়েছে চিন ও পাকিস্তান তার আভাস একটা ছিলই। এ বার সেটাই সত্যি হয়ে দেখা দিল। চিনের তরফে জানানো হল, অত্যাধুনিক জে এফ-১৭ যুদ্ধবিমান বানাতে পাকিস্তানকে বেশ কষেই সাহায্য করছে চিন। সেই সঙ্গে সামরিক যন্ত্রাংশ তৈরিতেও হাত মিলিয়েছে দুই দেশ। ভারতের আধুনিক যুদ্ধবিমানগুলির সঙ্গে জোরদার টক্কর দিতে এই ফাইটার জেট ব্যবহার করবে পাকিস্তান।
ভারতের ১২টি মিরাজ ২০০০ ফাইটার জেট শক্তিশালী প্রত্যাঘাত হেনেছিল বালাকোটে। মিগ-২১ বাইসন জেট দিয়ে পাকিস্তানের এফ-১৬ উড়িয়ে দিয়েছিলেন ভারতীয় বায়ুসেনার উইং কম্যান্ডার অভিনন্দন বর্তমান। শক্তি ও পরিকাঠামোর দিক দিয়ে ভারতীয় বায়ুসেনা রয়েছে বিশ্বের প্রথম দশটি শক্তিশালী বায়ুসেনা বাহিনীর তালিকায়। ভারতের আগে রয়েছে আমেরিকা, রাশিয়া, ইজরায়েল, ব্রিটেন, চিন, ফ্রান্স। ভারতের থেকে পিছিয়ে রয়েছে জাপান, অস্ট্রেলিয়া, জার্মানি, তারও পরে রয়েছে পাকিস্তান।
চিন-পাকিস্তান সামরিক প্রকল্পের চিফ ডিজাইনার ওয়াং ওয়েই বলেছেন, ‘‘জে এফ-১৭ ব্লক ৩ পর্যায়ের যুদ্ধবিমান বানানোর কাজ চলছে। পাকিস্তানের বর্তমান ফাইটার জেটগুলোকে আরও অত্যাধুনিক করে গড়ে তোলা হবে।’’ এই মুহূর্তে অত্যাধুনিক জে-২০ এবং জে-৩১ যুদ্ধবিমান বানাতে গবেষণা চালাচ্ছে চিন। যা অত্যাধুনিক মার্কিন বা রুশ যুদ্ধবিমানের সমতুল্য। চিনের অ্যাভিয়েশন ইনডাস্ট্রির ওয়েবসাইট সূত্রে খবর, জে এফ-১৭ যুদ্ধবিমানের পাশাপাশি এফ সি-১ ফাইটার জেট তৈরিতেও হাত লাগিয়েছে দুই দেশ। যুদ্ধবিমান বানানোর এই চলতি প্রকল্পকে আরও এক ধাপ এগিয়ে নিয়ে যেতেই মাল্টিরোল সিঙ্গল ইঞ্জিন লাইট ফাইটার জেট এফসি-১ বানানোর কথা ভাবছে চিন। সে ক্ষেত্রে চিনের পরিকল্পনা, পাকিস্তানকেই যুদ্ধবিমান বানানোর ঘাঁটি বানানো, যাতে পৃথিবীর বিভিন্ন মুসলিম দেশ গুলি থেকে সহজে বিমান বিক্রির বরাত পাওয়া যায়।
পাকিস্তান-চিন অর্থনৈতিক করিডরের আড়ালে দু’দেশের মধ্যে যে সামরিক বোঝাপড়া চলছে সেটা আগেই দাবি করেছিল এক মার্কিন দৈনিক। বলা হয়েছিল, এই কাজে কয়েক কোটি মার্কিন ডলার ব্যয় করেছে চিন। এর আগে ২০১৫ সালে পাকিস্তানকে ৮টি সামরিক ডুবোজাহাজ বিক্রি করতে চুক্তিবদ্ধ হয়েছিল বেজিং। সেই চুক্তির অর্থমূল্য ছিল প্রায় ছ’শো কোটি মার্কিন ডলার।
পাকিস্তানের ঝুলিতে এখন রয়েছে সিঙ্গল সুপারসনিক এফ-১৬। যা পাকিস্তানকে বিক্রি করেছিল আমেরিকা। যে কোনও আবহাওয়ায় এটি উড়তে এবং আঘাত হানতে সক্ষম। চিনের সাহায্যে জে এফ-১৭ ও পরবর্তীকালে এফ সি-১ যুদ্ধবিমান পাকিস্তানের হাতে চলে এলে পাক বায়ুসেনা অনেক বেশি শক্তিশালী হবে বলেই জানিয়েছেন ওয়াং ওয়েই।