দেশের অর্থনীতি বৃদ্ধির হার নিম্নমুখী। এই অবস্থায় দেশের অর্থনীতিকে দাড় করাতে উদ্যোগী কেন্দ্র। আগেই শোনা গিয়েছিল ঋণ বেড়েছে এয়ার ইন্ডিয়ার, তাই এই সংস্থা বিক্রি করে দেওয়ার কথা ভাবছে কেন্দ্রীয় সরকার। এবার সেই তালিকায় জুড়েছে ২৮টি রাষ্ট্রায়ত্ব সংস্থার নাম। সোমবার ২৫০তম রাজ্যসভা অধিবেশনে বিলগ্নিকরণের সিদ্ধান্ত জানানো হয়েছে কেন্দ্রীয় অর্থমন্ত্রকের তরফে। পাশাপাশি এও বলা হয়েছে বিলগ্নিকরণ কেন্দ্রীয় মন্ত্রীসভার নীতিগত সিদ্ধান্ত।
এদিন অর্থমন্ত্রকের প্রতিমন্ত্রী অনুরাগ ঠাকুর জানিয়েছেন, “চলতি আর্থিক বছরে কেন্দ্রের আয়ের লক্ষ্য ১.০৫ লক্ষ কোটি টাকা। এখনও পর্যন্ত এই খাতে সরকার ১৭,৩৬৪ কোটি টাকা আয় করেছে।”
কেন্দ্রে দ্বিতীয়বারের জন্য ক্ষমতায় এসে আর্থিক উদারিকরণের নীতি নিয়েছে নরেন্দ্র মোদী সরকার। অর্থের যোগান অব্যহত রাখতে একের পর এক রাষ্ট্রায়ত্ত সংস্থা বিক্রির প্রক্রিয়া চলছে। এর মধ্যেই সামনে এল আরও এক চাঞ্চল্যকর তথ্য। মোট ২৮টি রাষ্ট্রায়ত্ত সংস্থা বিক্রির নীতিগত সিদ্ধান্ত নিয়ে ফেলেছে কেন্দ্র। সোমবার এমনই জানিয়েছেন অর্থমন্ত্রকের প্রতিমন্ত্রী অনুরাগ ঠাকুর।
শনিবার কেন্দ্রীয় অর্থমন্ত্রী নির্মলা সীতারামণ ‘টাইমস অফ ইন্ডিয়া’কে দেওয়া সাক্ষাৎকারে এয়ার ইন্ডিয়ার পাশাপাশি ভারত পেট্রোলিয়ামের বিক্রির কথা জানিয়েছেন। তিনি বলেন, “আমরা এই বিষয়টাতে এগোচ্ছি, আশা করছি চলতি অর্থবর্ষের মধ্যেই কাজ সম্পূর্ণ করতে পারব।” রাষ্ট্রায়ত্ত সংস্থা নিয়ে কেন্দ্রীয় সরকারের পরিকল্পনার কথা জানতে চাওয়া হলে অর্থমন্ত্রী নির্মলা সীতারমণ জানান, চলতি অর্থবর্ষে সরকার এই প্রতিষ্ঠানগুলি থেকে এক লক্ষ কোটি টাকা তুলতে চায়। আগামী বছরের মার্চেই সংস্থা দুটি বিক্রি করে দেওয়া হবে বলে জানিয়েছেন সীতারামণ।
তিনি দাবি করেন, এয়ার ইন্ডিয়া নিয়ে বিনিয়োগকারীদের মধ্যে বিপুল উৎসাহ দেখেছেন। আন্তর্জাতিক রোড-শোতেও এ নিয়ে উৎসাহ দেখেছেন। যদিও ক্রমাগত লোকসানে চলা এই সংস্থা বিক্রি করতে গিয়ে ধাক্কা খেয়েছে সরকার। এখন কোষাগারের অবস্থা শোচনীয়। তাই এমন সিদ্ধান্ত নিতে চলেছে সরকার।
৫৮,০০০ কোটি টাকা ঋণ মাথায় নিয়ে বসে আছে এয়ার ইন্ডিয়া। গত অর্থবর্ষে এয়ার ইন্ডিয়ার লোকসান হয়েছে ৪৬০০ কোটি টাকা। অন্যদিকে ভারত পেট্রোলিয়ামের ৫৩.২৯ শতাংশ শেয়ার রয়েছে কেন্দ্রীয় সরকারের। সেটা পুরোটাই বিক্রি করে দেওয়া হবে। ২০১৯-২০২০ সালের আর্থিক বছরে রাষ্ট্রায়ত্ত সংস্থাগুলির শেয়ার বিক্রি করে রেকর্ড পরিমাণ অর্থ সংগ্রহের লক্ষ্যমাত্রা নিয়েছে কেন্দ্রীয় সরকার। শুধুমাত্র সরকারি সংস্থার শেয়ার বিক্রি করে এই বছর ১ ট্রিলিয়ন ঘরে তোলার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে কেন্দ্রের তরফে।
বর্তমান বছরে বাজেট ঘাটতির লক্ষ্যমাত্রা জিডিপির ৩.৩ শতাংশের মধ্যে বেঁধে ফেলার লক্ষ্যমাত্রা নিয়েছে সরকার। কিন্তু মন্দার কারণে রাজস্ব আদায় কম হওয়ায় সরকার সেই টার্গেট পূরণে কতটা সফল হবে, তা নিয়ে জোর সংশয় আছে। দেশের আর্থিক অবস্থা নিয়ে চূড়ান্ত বিপাকে মোদী সরকার। এই পরিস্থিতিতে আর্থিক ঘাটতি সামাল দিতে কেন্দ্রের একমাত্র ভরসা বিলগ্নিকরণ।