জমি আইনে বড় পরিবর্তন। এবার থেকে জম্মু কাশ্মীর ও লাদাখে যে কোনও ভারতীয় জমি কিনতে পারবেন সাধারণ জমি আইন মেনেই। কেন্দ্রের তরফ থেকে এই পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে। কেন্দ্র এক বিবৃতির মারফত জানিয়েছে ইউনিয়ন টেরিটরি অফ জম্মু অ্যান্ড কাশ্মীর রিঅর্গানাইজেশন (অ্যাডপশন অফ সেন্ট্রাল ল) থার্ড অর্ডার,২০২০ অনুযায়ী জমি কিনতে পারবেন যে কোনও ভারতীয়। অর্থাৎ উপত্যকায় জমি কেনার ক্ষেত্রে আর কোনও বাধা রইল না।
কাশ্মীরের রূপে মুগ্ধ হয়ে সেখানে বসবাসের জন্য জমি কেনার ইচ্ছা মনে জাগে অনেক পর্যটকেরই। কিন্তু এতদিন মনের ইচ্ছে মনে চেপেই রাখতে হয়েছে, কার্যকর করতে পারেননি ৩৭০ ধারার নিয়মের কারণে। তবে, এবার ৩৭০ ধারা নিয়ে মোদী সরকারের ঘোষণার পরই সমস্যার সমাধান হয়ে গিয়েছে। এবার থেকে যেকোনও ভারতীয়ই কাশ্মীরে জমি-বাড়ি কিনতে পারবেন।
কেন্দ্র জানিয়েছে এই অর্ডার সংশোধন হওয়ার পর থেকেই কার্যকর করা হবে। আরও জানানো হয়েছে দেশের যে কোনও জায়গায় জমি কিনতে গেলে যে আইন মোতাবেক কাজ হয়, এখানেও তার অন্যথা হবে না। এই অর্ডারের ব্যাখ্যা হিসেবে কেন্দ্র জেবারেল ক্লসেস অ্যাক্ট, ১৮৯৭-এর উল্লেখ করেছে বলে খবর। ৩৭০ ধারা তুলে নেওয়ার পরেই জম্মু কাশ্মীরে জমি কেনা সহজ হয়েছিল। এবার আইন দিয়ে সেই প্রক্রিয়াকে সম্পূর্ণ করল কেন্দ্র।
২০১৯ সালে অগাষ্ট মাসে জম্মু কাশ্মীর রাজ্যকে দুটি কেন্দ্র শাসিত অঞ্চলে ভাগ করে মোদী সরকার। একটি জম্মু কাশ্মীর ও অপরটি লাদাখ অঞ্চল। ৬ই অগাষ্ট দিনের আলো ফুটতেই, রাজ্যসভায় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ জানিয়ে দেন, কাশ্মীর থেকে প্রত্যাহার করে নেওয়া হচ্ছে ৩৭০ ধারা। এরফলে পুনর্জন্ম হল কাশ্মীরের। জানানো হয়, জম্মু, কাশ্মীর, লাদাখের বাইরে যেকোনও জায়গার বাসিন্দাকে বিয়ে করতে পারবেন এখানকার মহিলারা। এর সঙ্গেই কাশ্মীরের বাইরের যেকোনও ভারতীয় জমি কিনতে পারবেন ভূস্বর্গে।
জম্মু-কাশ্মীর জুড়ে ৩৭০ ধারা প্রত্যাহারের পর দুই রাজ্য অর্থাৎ জম্মু-কাশ্মীর ও লাদাখ জুড়ে কার্ফু জারি করেছিল কেন্দ্র সরকার। সময় মত তা প্রত্যাহারও করে নেওয়া হয়। ৩৭০ ধারা প্রত্যাহারের আগের দিন অর্থাৎ ৫ই অগাষ্ট কাশ্মীরে ৩৭০ ধারা নিয়ে কথা উঠতে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ বলেছিলেন, “আমি জম্মু ও কাশ্মীরের মানুষকে বলতে চাই, এই রাজ্যে ৩৭০ ধারা ও ৩৫ ধারা বিপুল পরিমাণে ক্ষতিসাধন করেছে। এই ধারাগুলির কারণে গণতন্ত্র কখনই পুরো দেশে কার্যকর হয় নি। রাজ্যে দুর্নীতি বৃদ্ধি পেয়েছে। উন্নয়নও থমকে দাঁড়িয়েছে।” এমনকী ওই রাজ্যে শিক্ষাব্যবস্থা, স্বাস্থ্য ও কর্মসংস্থানের কাঠামো ভেঙে পড়েছে।