অপারেশন স্নো লেপার্ড: গালওয়ান উপত্যকার সংঘর্ষের বিশদ বিবরণী প্রকাশের সিদ্ধান্ত কেন্দ্রের

২০২০ সালের গালওয়ান উপত্যকার সংঘর্ষের প্রথম বিশদ বিবরণী প্রকাশ করার সিদ্ধান্ত নিল কেন্দ্র। গত বছরের ১৫ জুন লাদাখে ভারতীয় সেনাবাহিনী এবং চিনের পিএলএ সেনার মধ্যে সংঘর্ষ হয়। ওই সংঘর্ষের ফলে ভারতের ২০ জন জওয়ান শহিদ হন। চিনেরও অনেকে মারা গিয়েছিল। কিন্তু সেই সংখ্যা এখনও অজানা।

প্রজাতন্ত্র দিবসে ১৬ বিহার পদাতিক ব্যাটালিয়নের কমান্ডিং অফিসার কর্নেল সন্তোষ বাবুকে মহাবীরচক্র প্রদান করবেন রাষ্ট্রপতি রামনাথ কোবিন্দ। সোমবার কেন্দ্র যখন এই ঘোষণা করে তখনই প্রতিরক্ষা মন্ত্রক মনে করে গালওয়ান উপত্যকার সংঘর্ষের কথা প্রকাশ্যে আনা উচিত।

কেন্দ্রের তরফে জারি করা উদ্ধৃতিতে বলা হয়, “কর্নেল সন্তোষ বাবু অপারেশন স্নো লেওপার্ড চলাকালীন গালওয়ান উপত্যকায় (পূর্ব লাদাখ) মোতায়েন ছিলেন। তাঁকে শত্রুর মোকাবিলার জন্য একটি পোস্ট স্থাপন করার দায়িত্ব দেওয়া হয়েছিল। সুসংগঠিত পরিকল্পনা মাফিক তাঁর নিয়ে কর্নেল সাফল্যের সাথে এই কাজটি সম্পাদন করেছিলেন। এই পদে অধিষ্ঠিত থাকাকালীন তিনি বিপক্ষের কঠোর প্রতিরোধের মুখোমুখি হন। তারা মারাত্মক এবং ধারালো অস্ত্র ব্যবহার করে কর্নেলকে আক্রমণ করেছিল। তাঁর উপর উঁচ্চু জায়গা থেকে পাথর ছোঁড়া হয়।”

উদ্ধৃতিতে আরও বলা হয়েছে, শত্রু সৈন্যদের অপ্রতিরোধ্য শক্তি ও হিংসার উপযুক্ত জবাব দেয় ভারত। আক্রমণাত্মক পদক্ষেপ করে তারা। ভারতীয় জওয়ানরা তাদের আটকাতে সমর্থ হয়। কর্নেল সন্তোষ বাবু বীরত্বের সঙ্গে দেশকে রক্ষা করার কাজ করেন। গুরুতর আহত হওয়া সত্ত্বেও কর্ণেল বিকুমাল্লা সন্তোষ বাবু তার অবস্থানে অনড় ছিলেন। শত্রুদের আক্রমণ থেকে বিরত করার জন্য নেতিবাচক পরিস্থিতি সত্ত্বেও তিনি সামনে থেকে নেতৃত্ব দিয়েছিলেন। সংঘাতের মধ্যে এর প্রভাব ছড়িয়ে পড়ে। শত্রু সৈন্যদের সঙ্গে লড়াই চালায় ভারতীয় সেনা। তিনি তাঁর শেষ নিঃশ্বাস অবধি শত্রুর আক্রমণকে প্রতিহত করেছিলেন এবং তাঁর জওয়ানদের দেশের মাটিকে রক্ষা করতে অনুপ্রেরণা ও উদ্বুদ্ধ করেছিলেন।

একাধিক দফায় সামরিক ও কূটনৈতিক আলোচনা সত্ত্বেও, হাজার হাজার ভারতীয় ও চিন সেনা সেদিন পূর্ব লাদাখের সীমান্তে তীব্র সংঘর্ষে লিপ্ত হয়েছিলেন। প্রজাতন্ত্র দিবসে সেই সংঘর্ষে শহিদ সন্তোষ বাবু ছাড়া আরও ৫ ভারতীয় সেনা জওয়ান শহিদকে এই চক্র-সম্মান দেওয়া হবে। সন্তোষ বাবু ছাড়াও এদিন মরোণোত্তর চক্র সম্মান পেয়েছেন,সুবেদার নাদুরা সোরেন,হবলদার কে পালানি,তেজিন্দর সিং, নায়েক দীপক সিং, গুরতেজ সিং। এঁরাও গালওয়ানের রক্তাক্ত রাতে শহিদ হয়েছেন দেশের জন্য। আগামীকাল প্রজাতন্ত্র দিবসের সকালে এঁদের পরিবারের হাতে দিল্লি থেকে তুলে দেওয়া হবে চক্র সম্মান।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.