বাড়ছে কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থার অধিকর্তাদের কার্যকালের মেয়াদ। সিবিআই এবং ইনফোর্সমেন্ট ডিরেক্টরেটের প্রধানদের কার্যকালের মেয়াদ বাড়ানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছে কেন্দ্র। আজ এই সংক্রান্ত এক অর্ডিন্যান্স জারি করা হয়েছে। এতদিন পর্যন্ত এই দুই কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থার অধিকর্তাদের কার্যকালের মেয়াদ ছিল ২ বছর। এখন থেকে তা আরও তিন বছর বাড়ানো হচ্ছে। এখন থেকে সর্বাধিক পাঁচ বছর সিবিআই ও ইডির অধিকর্তার পদে বহাল থাকতে পারবেন সংশ্লিষ্ট আধিকারিক।
রাষ্ট্রপতি রামনাথ কোবিন্দ ইতিমধ্যেই ওই দুই অর্ডিন্যান্সে সই করে দিয়েছেন। সিবিআই এবং ইডির প্রধানদের কার্যকালের দুই বছরের মেয়াদ শেষ হওয়ার পর প্রতি বছর তাঁদের কার্যকালের মেয়াদ বাড়ানো যাবে। সর্বোচ্চ তিন বছর পর্যন্ত এই মেয়াদ বাড়ানো যেতে পারবে।
যেহেতু এখন সংসদের অধিবেশন চলছে না, তাই রাষ্ট্রপতি রামনাথ কোবিন্দের কাছে বিষয়টি পেশ করা হয়েছিল। রাষ্ট্রপতি নিজে গোটা প্রক্রিয়া নিয়ে সন্তুষ্ট। রাষ্ট্রপতির কাছে যে বিষয়গুলি তুলে ধরা হয়েছিল, তা দেখে তিনি মনে করেছেন, অবিলম্বে এই বিষয়ে ব্যবস্থা নেওয়া প্রয়োজন। কেন্দ্রের তরফে জারি করা এক বিবৃতিতে এমনটাই জানানো হয়েছে। এর পাশাপাশি আরও বলা হয়েছে, প্রাথমিক নিয়োগে উল্লিখিত মেয়াদ সহ মোট পাঁচ বছর মেয়াদ পূর্ণ হওয়ার পর কার্যকালের সময়সীমা আর নতুনভাবে বাড়ানো যাবে না।
উল্লেখ্য, বর্তমানে এনফোর্সমেন্ট ডিরেক্টরেটের প্রধান পদে রয়েছেন এস কে মিশ্র। ২০১৮ সালে তাঁকে ইডি অধিকর্তার পদে নিযুক্ত করা হয়েছিল। ইতিমধ্যেই তাঁর মেয়াদ বাড়ানো হয়েছে। এই নিয়ে সুপ্রিম কোর্ট পর্যন্ত মামলাও গড়িয়েছিল। শীর্ষ আদালতের বিচারপতি এল এন রাওয়ের নেতৃত্বাধীন এক বেঞ্চ এই প্রসঙ্গে জানিয়েছিল, কেবল মাত্র বিরল এবং ব্যতিক্রমী ক্ষেত্রেই মেয়াদ বাড়ানো যেতে পারে।
আগামী ১৭ নভেম্বর ইডি অধিকর্তা এস কে মিশ্রের বর্ধিত কার্যকালের মেয়াদ শেষ হচ্ছে। গতবছরই তাঁর দুই বছরের কার্যকালের মেয়াদ শেষ হওয়ার তা আরও এক বছরের জন্য বাড়ানোর সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছিল। আর এবার ঠিক তাঁর বর্ধিত কার্যকালের মেয়াদ শেষ হওয়ার আগেই কেন্দ্রের এই অর্ডিন্যান্স নিঃসন্দেহে এক বলিষ্ঠ পদক্ষেপ বলে মনে করছেন অনেকে। তার পাশাপাশি, অনেকে আবার বিষয়টিকে একেবারে অভূতপূর্ব পদক্ষেপ হিসেবেও দেখছেন।
স্পষ্টতই কেন্দ্রের এই পদক্ষেপ থেকে বোঝা যাচ্ছে এস কে মিশ্রকে ইডির অধিকর্তার পদ থেকে এখনই সরাতে চাইছে না কেন্দ্র। বিশেষ করে তাঁর দীর্ঘদিনের কর্মজীবনের যে অভিজ্ঞতা, তার পুরোটা নিঙড়ে নিতে চাইছে ইডি। বিশেষ করে মেহুল চোক্সি, নীরব মোদী, বিজয় মাল্যদের মতো যে বড় বড় রাঘব বোয়ালরা আর্থিক তছরূপের পর দেশ ছেড়ে পালিয়েছে, তাদের দেশে ফেরানোয় বিশেষ গুরুত্ব দিয়েছে ইডি। একইসঙ্গে দেশেরও একাধিক গুরুত্বপূর্ণ তদন্তের দায়িত্বে রয়েছে ইডি। তার মধ্যে রয়েছে বাংলার রাজনীতির সঙ্গে জড়িত একাধিক ইস্যু।