অবশেষে ঘটতে চলেছে দীর্ঘ প্রতীক্ষার অবসান। আগামী ১৮ জুলাই জলপথে পশ্চিমবঙ্গের হলদিয়া বন্দর থেকে জাহাজ আসবে ত্রিপুরায়। শুক্রবার এমনটা জানিয়েছেন ত্রিপুরার মুখ্যমন্ত্রী বিপ্লব কুমার দেব।
মুখ্যমন্ত্রী জানিয়েছেন, ১৪ জুলাই ত্রিপুরার উদ্দেশ্যে হলদিয়া বন্দর থেকে রওয়ানা হবে একটি জাহাজ। পণ্যবাহী ওই জাহাজ ১৮ জুলাই ত্রিপুরার সোনামুড়া সীমান্ত দিয়ে গোমতী নদীর তীরে তৈরি অস্থায়ী জেটিতে প্রবেশ করবে। আগরতলা টাউন হলে আয়াজিত এক অনুষ্ঠানে এই কথা জানান মুখ্যমন্ত্রী। এদিন প্রধানমন্ত্রী স্বনিধি যোজনা ও মুখ্যমন্ত্রী স্বনির্ভর যোজনা উদ্বোধন করেন বিপ্লব দেব। এই প্রকল্পগুলি থেকে সুবিধা গ্রহণ করে কীভাবে রাজ্যের যুব সমাজ স্বনির্ভর হয়ে উঠতে পারে তা নিজের বক্তব্যে তুলে ধরেন মুখ্যমন্ত্রী। তিনি বলেন, “এই সময়ের মধ্যে ট্রেড লাইসেন্স প্রদানের ক্ষেত্রে যাবতীয় প্রক্রিয়া সরলীকরণ করা হয়েছে। শুধুমাত্র দু’টি প্রমাণপত্র দিলেই যোগ্যডের ট্রেড লাইসেন্স দেওয়া হবে। এদিন মুখ্যমন্ত্রী গুরুত্বের সঙ্গে উল্লেখ করেন যে, ত্রিপুরায় বেকারত্বের প্রশ্নে গোটা দেশে ১৭ নম্বর স্থানে রয়েছে। ভারত সরকারের সংস্থা এনএসও-এর তথ্য অনুযায়ী ত্রিপুরায় বেকারত্বের হার ৬.৮ শতাংশ। পাশাপাশি ন্যাশনাল ক্যারিয়ার সার্ভিস অনুযায়ী জনসংখ্যার নিরিখে ত্রিপুরায় বেকারত্বের হার ৫ শতাংশ। ২০১৯ সালের জুন মাস পর্যন্ত ত্রিপুরায় বেকারদের সংখ্যা ১,৭৩,৫১১ ।
মুখ্যমন্ত্রী জানান, রাজ্যকে স্বনির্ভর করে তোলার লক্ষ্যে সরকার পরিকল্পনা নিয়ে কাজ করছে। রাজ্যে কর্মপ্রত্যাশী বেকার যুবক যুবতীদের স্বনির্ভর করে তোলা সরকারের অন্যতম লক্ষ্য । স্বনির্ভর ব্যক্তিই উন্নত রাজ্য গঠনে সক্ষম । নগর উন্নয়ন দপ্তরের উদ্যোগে আয়োজিত অনুষ্ঠানে মুখ্যমন্ত্রী আরও বলেন, রাজ্যে “স্বনির্ভর ব্যক্তির সংখ্যা যত বাড়বে ততই রাজ্য উন্নয়নের পথে অগ্রসর হবে। পাশাপাশি রাজ্যের অর্থনৈতিক উন্নতিও তরান্বিত হবে।” মুখ্যমন্ত্রী জানান, রাজ্যের শহর এলাকায় ২২,৫৫৭টি তথা ৪৪ শতাংশ ব্যবসা প্রতিষ্ঠান নিজেদের দ্বারা পরিচালিত। বাকি ৫৬ শতাংশ ব্যবসায় প্রতিষ্ঠানে ২৯,০৭৪ জন কর্মচারী কাজ করছেন। শপস এন্ড এস্টাব্লিশমেন্ট অ্যাক্ট ১৯৭০ অনুযায়ী রাজ্যে নথিবদ্ধ বাণিজ্যিক প্রতিষ্ঠানের সংখ্যা ৫১,৬২৭টি । ৮০,৬৯১টি পরিবার সরাসরি ব্যবসা বাণিজ্যের মাধ্যমে জীবিকা নির্বাহ করছে। তাদের ব্যবসার সঙ্গে সাধারণ শ্রমিক পরিবহণ শ্রমিকরাও যুক্ত রয়েছেন। এছাড়াও ২০ হাজার থেকে ৩০ হাজার আরও ছোট দোকান বিভিন্ন বাজারে ছড়িয়ে রয়েছে বলে তিনি উল্লেখ করেন।
মুখ্যমন্ত্রী জানান, জলপথে পরিবহণ ব্যবস্থা চালু হলে পরিবহণ ব্যয় অনেকটাই হ্রাস পাবে। রাজ্যের ব্যবসা বাণিজ্যের ক্ষেত্রে একটা নতুন যুগের সূচনা হবে। রাজ্যের অথনৈতিক উন্নয়নে গোমতী নদী পথে পরিবহণ ব্যবস্থা একটা উল্লেখযোগ্য ভূমিকা নেবে। এতে কর্মসংস্থানের সুযোগও বাড়বে। অনুষ্ঠানের সভাপতি আগরতলা পুর নিগমের মেয়র ড. প্রফুল্লজিৎ সিনহা রাজ্য সরকারের গৃহীত এই প্রকল্পগুলির সুবিধা গ্রহণের জন্য ছোট বাণিজ্যিক প্রতিষ্ঠানগুলিকে এগিয়ে আসার আহ্বান জানান। রাজ্য সরকারের প্রকল্পগুলি যথাযথ রূপায়ণের জন্য আগরতলা পুরনিগম সদর্থক ভূমিকা নেবে বলে তিনি জানিয়েছেন।