কোচবিহারের রাসমেলায় বাংলাদেশি পণ্য বয়কটের মাধ্যমে স্থানীয় হিন্দুরা এক সুদূরপ্রসারী বার্তা দিলেন যা যথেষ্ট ইঙ্গিতবহ

আপাত দৃষ্টিতে ছোট পদক্ষেপ মনে হলেও নিঃসন্দেহে এটি একটি বৃহৎ পদক্ষেপ। কোচবিহারের রাসমেলায় বাংলাদেশি পণ্য বয়কটের মাধ্যমে স্থানীয় হিন্দুরা এক সুদূরপ্রসারী বার্তা দিলেন যা যথেষ্ট ইঙ্গিতবহ।

বাঙালির শেষ্ঠ উৎসব দুর্গা পুজোর সময় হিন্দু নিধন, দেবী মূর্তি ভাঙচুর, হিন্দু মহিলাদের ইজজাত লুন্ঠনের, ধর্ষণ ও খুনের বিরুদ্ধে এটাই তাঁদের নিঃশব্দ প্রতিবাদ। এবছর এপার বাংলা তথা পশ্চিমবঙ্গ থেকে খালি হাতেই ফিরতে হবে বাংলাদেশি ব্যবসায়ীদের।

কোচবিহারের রাসমেলার দেশজোড়া খ্যাতি। প্রতি বছর রাস উপলক্ষ্যে বড়ো ধরণের মেলাও বসে। এই আকর্ষণীয় মেলায় দক্ষিণবঙ্গ থেকেও অনেক মানুষ এই মেলায় ভিড় জমান। মোটা লাভের আশায় দূরদূরান্ত থেকে ব্যবসায়ীরাও ঘাঁটি গাড়েন, স্টল বসান।

বাংলাদেশের ব্যবসায়ীরাও ঢাকাই শাড়ি, মসলিন থেকে গুড়, ইলিশের পসরা সাজান । এক মাস ব্যাপী বিক্রিবাটা সেরে ফিরে যান নিজের দেশে।
এবারও এসেছিলেন তাঁরা, বসেছেন পসরা সাজিয়ে। কিন্তু চলতি রাসমেলায় বাংলাদেশি ব্যবসায়ীদের অভিজ্ঞতাটা ভিন্ন। বিক্রি নেই কানাকড়িও। কারণ, দুর্গাপুজোয় প্রতিমা ভাঙচুর থেকে লাগাতার হিন্দু নির্যাতনের প্রতিবাদে এবার বাংলাদেশি পণ্য বয়কট করেছেন এখানকার স্থানীয় বাসিন্দারা। ফলে কার্যত মাছি তাড়ানো ছাড়া বাংলাদেশি দোকানদারদের আর কোনো রাস্তা খোলা ছিল না।

দেখার মতো বিষয় হলো বাংলাদেশিদের স্টলের সামনে ধর্না, প্ল্যাকার্ড হাতে মিছিল বা মোমবাতি হাতে র‍্যালি করেননি কোচবিহারবাসী। স্থানীয় হিন্দুদের বক্তব্য ধর্না বা মিছিল করলে বাংলাদেশি দোকানদারদের সুবিধে হয়ে যেত। তারা ভিকটিম কার্ড খেলার সুযোগ পেয়ে যেতেন। একই সঙ্গে বুদ্ধিজীবী, সেকুলাররাও তাঁদের হয়ে গলা ফাটাতেন। কোনোভাবেই প্রচারে আসা থেকে বিরত করাই ছিল স্থানীয় বাসিন্দাদের উদ্দেশ্য। শুধু ‘হুইস্পার ক্যাম্পেনকে’, হাতিয়ার করে শুরু হয় অর্থনৈতিক বয়কট।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.