২০২০ সালের মধ্যেই ভারতে বৃদ্ধির হার পৌঁছাবে সাত শতাংশে: আইএমএফ প্রধান

এ বছর ভারতের আর্থিক বৃদ্ধির হার কমে ৬.১ শতাংশ হলেও ২০২০ সালে তা বেড়ে ৭ শতাংশ হবে বলে মনে করছেন আন্তর্জাতিক অর্থভাণ্ডারের (আইএমএফ) মুখ্য অর্থনীতিবিদ গীতা গোপীনাথ। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে একটি বেসরকারি সংবাদমাধ্যমে দেওয়া একান্ত সাক্ষাকারে তিনি বলেন, “কয়েক মাস আগে আমরা যা বলেছিলাম তার চেয়ে বৃদ্ধির হার সামান্য কম রয়েছে। আমরা যা ভেবেছিলাম তার চেয়ে ভারতের বৃদ্ধির হার ০.৫০ শতাংশ কম হয়েছে।”

দেশের বিভিন্ন শিল্পক্ষেত্র ও আর্থিক প্রতিষ্ঠান যখন সমস্যার মধ্য দিয়ে যাচ্ছে তখন আগামী বছরের জন্য এই আশার কথা শোনাল আন্তর্জাতিক অর্থ ভাণ্ডার। দেশের উপাদনশিল্পে বৃদ্ধির হার নিম্নমুখী, একই অবস্থা ব্যাঙ্ক ও অন্য আর্থিক প্রতিষ্ঠানগুলির। ছোট প্রতিষ্ঠানগুলির বড় ঋণ দেওয়ার ক্ষমতাও কমেছে, যা উদ্বেগের কারণ।

তিনি বলেন, “বিভিন্ন ক্ষেত্রে ধাক্কা খেয়েছে ভারত (২০১৯ সালে)। আমাদের মনে হয়, এটা চক্রাবর্তের একের ৬বারে নীচের দিক। ২০১৯ সালে ভারতের বৃদ্ধির হার ৬.১ শতাংশ নেমে যাওয়াকে আমরা খুবই তাৎপর্যের সঙ্গে বিচার করেছি। আমরা মনে করছি ২০২০ সালে তা ৭ শতাংশে ফিরবে।” আন্তর্জাতিক অর্থভাণ্ডারের প্রথম মহিলা মুখ্য অর্থনীতিবিদ হলেন গীতা গোপীনাথ।

তিনি বলেন, “গ্রামীণ অর্থনীতিতে বৃদ্ধির হার কম হয়েছে। নন-ব্যাঙ্কিং আর্থিক ক্ষেত্রেও সমস্যা রয়েছে।” তাঁর মতে, নিয়ামকের অনিশ্চয়তার জন্য গাড়িশিল্প ও নির্মাণ শিল্পে বৃদ্ধির হার ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। তিনি বলেন, “এই সব কারণে দেশে বৃদ্ধির হার কম হয়েছে দুই দিক থেকেই – বিনিয়োগ ও ক্রয়।”

তিনি মনে করেন, অর্থমন্ত্রী নির্মলা সীতারমণের করের হার কমানোর সিদ্ধান্ত একেবারেই সঠিক। তাঁর কথায়, “কর্পোরেট কর কমানো এবং আয় বাড়ানোর জন্য যে পদক্ষেপ করা হয়েছে এর ফলে সমস্যা মিটতে পারে।”

রাজস্ব ঘাটতির পরিমাণ বাড়লে তা অর্থনীতির পক্ষে বিরূপ হবে বলে তিনি সতর্ক করেছেন, নরেন্দ্র মোদী সরকারের অর্থমন্ত্রী নির্মলা সীতারমণ অবশ্য এই সমস্যার কথা জানেন। সরকার যা আয় করে তার থেকে সরকারের ব্যয় বেশি হলেই রাজস্ব ঘাটতি হয়। তা হলে চলতি অর্থবর্ষে বৃদ্ধির হার ৬.১ শতাংশ হবে কী? গোপীনাথ অবশ্য আশাবাদী।

ভারতে অসংগঠিত ক্ষেত্রে এখন নানাবিধ সমস্যা রয়েছে। তার ফলে ঝুঁকিও রয়েছে। সমালোচকদের একাংশ মনে করেন ২০১৬ সালের নভেম্বরে নোটবন্দির পরে অসংগঠিত ক্ষেত্রে সমস্যা শুরু হয়েছে। সরকারের এই সিদ্ধান্তের ফলে সবচেয়ে সমস্যায় পড়েছিল অসংগঠিত ক্ষেত্রগুলিই।

আন্তর্জাতিক অর্থভাণ্ডারে যোগ দেওয়ার আগে হার্ভার্ড বিশ্ববিদ্যালয়ে সইন্টারন্যাশনাল স্টাডিজ ইন ইকোনমিক্সের জন জোয়ানস্ট্রা অধ্যাপক ছিলেন।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.