একটা ষাঁড় ও ছাগলের গল্প

মাংসের দোকানে একটা তাগড়া জোয়ান ষাঁড়কে, কসাই জবাই করতে গেল। প্রাণ বাঁচাতে ষাঁড়টা কসাইকে এমন গুঁতো মারল – কসাই বহুদূরে ছিটকে গেল। তাই না দেখে, এক প্রবীণ ও বিজ্ঞ ছাগল দেহের সর্ব শক্তি দিয়ে চিৎকার করে – অন্য ছাগলগুলোকে বলল, দেখেছিস ষাঁড়টার নৃশংসতা! দেহে শক্তি আছে, তাই বলে কসাই মহোদয়কে এত নির্মম ভাবে আঘাত করবে! ইস্ কসাই মহোদয় কি ব্যথাই না পেয়েছে! এই জঘন্য হিংসা বরদাস্ত করা যায় না। আয়, সবাই মিলে ষাঁড়টাকে ঘায়েল করি, যাতে কসাই মহোদয় আরামসে ওকে জবাই করতে পারে। এই মাংসের দোকানে হিংসা-বিদ্বেষের কোন স্থান নেই ; কসাই মহোদয় একা – সংখ্যালঘু, তবুও তার ন‍্যায়সঙ্গত অধিকার প্রতিষ্ঠা করতেই হবে। ছাগলগুলো মিলে ষাঁড়টাকে ভীম-বিক্রমে আক্রমণ করল। ষাঁড়টা বললো, করছিস কী তোরা। আমাকে জবাই করার পর, তোদেরকেও তো ও জবাই করবে!

বিজ্ঞ ছাগলপতি বলল, বর্বর ষাঁড় তুই চরম সাম্প্রদায়িক! সাম্প্রদায়িকতার বিষবাষ্প ছড়িয়ে তুই আমাদের বিভ্রান্ত করছিস। এই মাংসের দোকানে সাম্প্রদায়িকতার কোন স্থান নাই। প্রত্যেকের ন‍্যায় সঙ্গত অধিকার সুপ্রতিষ্ঠিত করা আমাদের প্রধান দায়িত্ব ও কর্তব্য।

বিজ্ঞ ছাগলপতির নেতৃত্বে, সবগুলো ছাগল এক-কাট্টা হয়ে, দীর্ঘ লড়াই শেষে ষাঁড়টাকে কাবু করে ফেলে, কসাইয়ের হাতে তুলে দিল। ষাঁড়টাকে জবাই করার পর, কসাই হাসতে হাসতে বিজ্ঞ ছাগলপতির গলায় চাপাতি চালাল। ছাগলপতি চোখের জল ছেড়ে, দীর্ঘশ্বাস ফেলে কেবল ভ্যাঁ একটা চিৎকার করার সুযোগ পেল….
– সংগৃহীত গল্প

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.