ডক্টর মনমোহন বৈদ্যের বই – আরএসএস অ্যান্ড আইডিওলোজি: “উই অ্যান্ড দ্য ওয়ার্ল্ড অ্যারাউন্ড” এমন একটি সময়ে প্রকাশিত হচ্ছে যখন এর সবথেকে বেশী প্রয়োজন ছিলো। এখন বিশ্ব দেখছে ইজরায়েল ও হামাস জঙ্গিগোষ্ঠীর মধ্যে লড়াই। রাশিয়া ও ইউক্রেনের মধ্যে যুদ্ধ যখন চলছিল তখনই হামাস-ইসরায়েল সংঘর্ষ শুরু হয়। পুঁজিবাদ, কমিউনিজম এবং ধর্ম প্রধানত দুটি দ্বন্দ্বে জড়িত, যা তাদের অন্তর্নির্মিত অপর্যাপ্ততা এবং মতাদর্শ হিসাবে অগভীরতা প্রমাণ করে।
ডঃ বৈদ্যের বই এই পটভূমিতে একটি বড় আশা-ভরসা হিসাবে এসেছে কারণ এটি ‘ভারতীয় চিন্তা দর্শন’-এর তাৎপর্য ও গুরুত্বের উপর জোর দেয়, যা “বসুধৈব কুটুম্বকম” এর মন্ত্র শেখায় এবং গণতন্ত্র, সহনশীলতা, গ্রহণযোগ্যতা, গ্রহণ এবং স্বাধীনতার মূল্যবোধকে সমর্থন করে। যখন বাকি বিশ্ব আদিম ধারণা নিয়ে বাস করছিলো তখন শতাব্দী ধরে ভারতীয় দর্শন এই সমস্ত মূল্যবোধের প্রচার এবং অনুশীলন করেছে।
ডঃ মনমোহন বৈদ্য রাষ্ট্রীয় স্বয়ংসেবক সংঘের (আরএসএস) যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক। তিনি শৈশব থেকেই সঙ্ঘের সাথে যুক্ত ছিলেন। সংগঠনের হয়ে বিভিন্ন দায়িত্ব পালনও তিনি করেছেব। একজন কর্মী এবং চিন্তাবিদ হিসেবে তার সমৃদ্ধ অভিজ্ঞতা বইটিতে প্রতিফলিত হয়েছে এবং বাণী প্রকাশন, নয়াদিল্লি দ্বারা প্রকাশিত হয়েছে।
বইটি দুটো কারণে গুরুত্বপূর্ণ! প্রথমত, এটি ভারতিয়ার আদর্শকে একটি অত্যন্ত প্রয়োজনীয় পরিপ্রেক্ষিতে উপস্থাপন করে। দ্বিতীয়ত, এটি আরএসএস এর আদর্শ এবং কার্যকারিতা সম্পর্কে উপলব্ধি দেয়। প্রসঙ্গত উল্লেখ্য যে আরএসএস ২০২৫ সালে তার শতবর্ষ উদযাপন করবে। আরএসএসের কাজের পরিধি প্রতিদিনই বাড়ছে। শুধু দেশেই নয়, আন্তর্জাতিক পর্যায়েও এর গ্রহণযোগ্যতা বেড়ে চলছে। অনেকের কৌতূহল রয়েছে এবং সারা পৃথিবী জুড়েই অনেকে আরএসএস সম্পর্কে আরও জানতে চান। এই বইটি তাদের সন্তুষ্ট করতে সাহায্য করবে।
তাঁর আদর্শের প্রতি লেখকের গভীর প্রত্যয় প্রতিটি শব্দে প্রকাশ পায়। তিনি বলতে দ্বিধা করেননি যে তিনি ইচ্ছাকৃতভাবে ইন্ডিয়া বা ইন্ডিয়ান পরিবর্তে ভারত এবং ভারতীয় শব্দগুলি ব্যবহার করেছেন। লেখক, ভূমিকায় ব্যখ্যা করেছেন যে কীভাবে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র জাতীয় পরিচয় চ্যালেঞ্জের মুখোমুখি হচ্ছে। তিনি দেখেন যে জাতীয় পরিচয়ের অনুপস্থিতিতে এবং বহুসংস্কৃতিবাদের আধিপত্যের কারণে আমরা এবং ওরা এর বিভেদমূলক মানসিকতা মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে বিরাজ করছে। ডঃ বৈদ্য এই বলে তার যুক্তি তুলে ধরেছেন যে ভারতের পরিচয় পশ্চিমা প্রতিষ্ঠান এবং মতাদর্শ দ্বারা নির্ধারিত হয়েছে‚ যদিও পরিচয় নির্ধারণের দায়িত্ব আমাদের নিজেদের। ভরতের পরিচয় বহির্শক্তি দ্বারা নির্ধারিত হয়। ডঃ বৈদ্য উল্লেখ করেছেন যে ভারত, অন্যান্য পশ্চিমা দেশগুলির মতো, নিছক একটি সামাজিক চুক্তিযুক্ত রাজনৈতিক সম্প্রদায় নয় বরং তার একটি আধ্যাত্মিকতা ভিত্তিক ভূ-সাংস্কৃতিক পরিচয় আছে৷ ডাঃ বৈদ্যের মতে ভারত অবিচ্ছিন্ন সত্যানুসন্ধানের জন্য পরিচিত কারণ তার অন্য চিন্তাধারাকে স্বাগত জানানো, গ্রহণ করা এবং সমৃদ্ধ করার মনোভাব রয়েছে।
বইয়ের ভূমিকাটি স্ব-ব্যাখ্যামূলক, যা পাঠকদের কাছে আদর্শকে বুঝতে সাহায্য করে। বইটি আরএসএস-এর আদর্শগত ভিত্তি এবং এর ৯৮ বছরের জার্নিকে উপস্থাপন করে। এছাড়াও ডক্টর বৈদ্য ভারতের বাইরে থেকে উড়ে এসে জুড়ে বসা কমিউনিস্ট এবং বামপন্থী চিন্তা-চেতনার সমালোচনাও করেছেন। কিছু অসুবিধা সত্ত্বেও, আরএসএস তার আদর্শিক শক্তি এবং সাংগঠনিক ভিত্তির কারণে ক্রমশ বৃদ্ধি পাচ্ছে। ডাঃ বৈদ্য আরএসএস-এর গতিশীল যাত্রার ব্যাখ্যা করে বলেছেন যে সংগঠনটি তিনটি ধাপ অতিক্রম করেছে এবং বর্তমানে চতুর্থ ধাপ অতিক্রম করছে। চতুর্থ পর্বে, আরএসএস আশা করে যে তার স্বেচ্ছাসেবকরা নিজেদেরকে সামাজিক জাগরণ ও পরিবর্তনের জন্যে প্রস্তুত করবে।
সমালোচকরা অনেকসময় আরএসএসকে অগণতান্ত্রিক সংগঠন হিসেবে বর্ণনা করে। ডাঃ বৈদ্য তার স্মৃতিকথা বর্ণনা করে দেখিয়েছেন যে আরএসএস-এ কীভাবে গণতন্ত্র অনুসরণ করা হয় তা বজায় রাখা হয়। সিনিয়র কার্যকর্তারা কিভাবে সবসময় তাকে স্বাধীনভাবে তার মতামত প্রকাশ করতে উৎসাহিত করেছিলেন তাও উঠে এসেছে লেখকের কলমে।
ডক্টর বৈদ্য কমিউনিস্টদের প্রতি কটাক্ষ করে বলেন যে আরএসএস-এর ‘গ্লাসনস্ত’-এর প্রয়োজন নেই কারণ ভারতীয় দর্শন সর্বদা সমস্ত মতামতকে সম্মান করে। অপরদিকে
সেমেটিক সমাজে শুধুমাত্র একটি মতামতকেই প্রাধান্য দেওয়া হয়। সেমেটিক সমাজে মুষ্টিমেয় লোকের দ্বারা একটি সিদ্ধান্ত নেওয়া হয় ও অন্যরা তা চুপচাপ মেনে চলে।
এর বিপরীতে ঐকমত্য হল ভারতীয় মতাদর্শের সবচেয়ে অসামান্য বৈশিষ্ট্য। লেখক পাঠককে মনে করিয়ে দেন যে কীভাবে ব্রুনোকে রোমে জীবন্ত পুড়িয়ে মারা হয়েছিল এবং গ্যালিলিওকে এমন মতামতের কারণে নির্যাতন করা হয়েছিল, যা খ্রিস্টধর্মের জন্য গ্রহণযোগ্য ছিল না।
সমালোচকরা অনেকসময় আরএসএসকে একটি অনমনীয় সংগঠন হিসাবে প্রচার করে। কিন্তু মুক্তমন আর পরিবর্তন এর অন্যতম বৈশিষ্ট্য! ডঃ বৈদ্য তার কথা প্রমাণ করার জন্য একটি ঘটনা শেয়ার করেছেন। তিনি স্মরণ করেন হিন্দু স্বয়ংসেবক সংঘের (এইচএসএস) প্রার্থনায় যখন কিছু ত্রুটি চিহ্নিত করা হয়েছিল তখন তাতে তক্ষুনি প্রয়োজনীয় পরিবর্তন করা হয়েছিল। এই ঘটনাটি তাৎপর্যপূর্ণ কারণ আরএসএস এর স্বেচ্ছাসেবকরা প্রার্থনাকে পরম পবিত্র বলে মনে করেন।
প্রাক্তন রাষ্ট্রপতি প্রণব মুখোপাধ্যায়ের নাগপুর প্রশিক্ষণ শিবিরে যাওয়া নিয়ে দুটি নিবন্ধ বইটিতে আছে। নিবন্ধদুটি কমিউনিস্ট/বামপন্থী এবং কংগ্রেসের দ্বিচারিতাকে উন্মোচিত করে। প্রণব মুখার্জি যাতে নাগপুর সফরে না যান তারজন্য তার নিজের দল তাকে চাপ দিয়েছিলো। বামপন্থীরাও তাকে আক্রমণ করে। কিন্তু কোনো চাপের কাছে নতি স্বীকার না করে নিজের সিদ্ধান্তে এগিয়ে যান। ডঃ বৈদ্য এর কারণ হিসাবে আরএসএস এবং মিঃ মুখার্জির বিশুদ্ধ গণতান্ত্রিক মানসিকতাকে উল্লেখ করেছেন কারণ তাদের উভয়েরই গণতন্ত্রের ভারতীয় ধারণার প্রতি গভীর বিশ্বাস রয়েছে, যা সর্বদা অন্যের মতামতকে সম্মান করে। এই দুটি অধ্যায় খুবই আকর্ষণীয় কারণ লেখক সমস্ত ঘটনার সাক্ষী ছিলেন।
ডঃ বৈদ্য সনাতন, জাতীয় ও জাতীয়তাবাদের মধ্যে পার্থক্য এবং কেন ভারত সর্বদা ‘নিত্যনুতন’ – এর মতো কিছু মৌলিক ধারণা নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা করেছেন। ডঃ বৈদ্য বলেছেন যে ‘সনাতন’ হল রাষ্ট্রের একটি বিশেষণ। সনাতনের কোন শুরু এবং শেষ নেই কারণ এটি সম্পূর্ণরূপে আধ্যাত্মিকতার উপর ভিত্তি করে। তিনি বলেছেন যে ভারত কয়েক শতাব্দী ধরে বিভিন্ন আক্রমণ সত্ত্বেও টিকে ছিল কারণ এটি কখনই রাষ্ট্র বা রাজনৈতিক ক্ষমতার উপর নির্ভর করে না। ভরতের নিজস্ব আধ্যাত্মিক ভিত্তি রয়েছে যার কারণে এটি সমস্ত আগ্রাসন থেকে বেঁচেছিল। তার বক্তব্যকে প্রমাণ করার জন্য, ডঃ বৈদ্য বলেছেন যে সময়ে সময়ে অনেকগুলি ‘স্মৃতি’ রচিত হয়েছিল এবং সংবিধান হল সর্বশেষ ‘স্মৃতি’।
লেখক জাতীয় এবং জাতীয়তাবাদের মধ্যে পার্থক্য করেছেন এই বলে যে জাতীয়তাবাদী শব্দটি জাতি-রাষ্ট্রের পশ্চিমা ধারণার থেকে উৎপন্ন। তিনি বলেন যে জাতীয়তাবাদী দেশগুলির মূলত পুঁজিবাদী আদর্শগত অতীতে রয়েছে, যা মানবতার উপর বিশ্বযুদ্ধ চাপিয়েছিল। এর বিপরীতে, বিভিন্ন পরিচয় থাকা সত্ত্বেও ভারতীয় ধারনাগুলি একটি সামগ্রিক সমন্বিত পদ্ধতির কথা বলে। এই ধারণা গ্রহণ জাতির বহিঃপ্রকাশ।
বইটিতে সোমনাথ মন্দিরের সংস্কারের বিষয়েও আরেকটি আকর্ষণীয় অধ্যায় তুলে ধরেছেন। কংগ্রেস এই ইস্যুতে বিভক্ত ছিল কারণ জওয়ারলাল নেহেরু এই পদক্ষেপের বিরোধিতা করেছিলেন এই বলে যে এটি হবে হিন্দু পুনরুজ্জীবনবাদ। কিন্তু সর্দার প্যাটেলের নেতৃত্বে আরেকটি দল, ভারতের তৎকালীন রাষ্ট্রপতি ডঃ রাজেন্দ্র প্রসাদ এবং কে এম মুন্সি নেহরুর বিরোধিতা সত্ত্বেও এগিয়ে যান। তথাকথিত ‘গণতন্ত্রের আইকন’ নেহেরু কীভাবে ডঃ রাজেন্দ্র প্রসাদের বক্তৃতা সেন্সর করেছিলেন তা জেনে পাঠকরা হতবাক হবেন। কিন্তু মুন্সির কাছে সোমনাথ মন্দিরের সংস্কার ছিল সম্মিলিত অবচেতনের পুনরুদ্ধার।
ডঃ বৈদ্য ৩৭০ এবং ৩৫ (এ) ধারা নিয়ে বিস্তৃত লিখেছেন। আরএসএস শুরু থেকেই ৩৭০ ধারার বিরুদ্ধে ছিল। ১৯৫৩ সালে তারা একটি সুনির্দিষ্ট রেজল্যুশন পাস করে। তিনি জোর দিয়ে বলেছেন যে ৩৭০ ধারা একটি অস্থায়ী বিধান, যা সেই সময়ে বিরাজমান পরিস্থিতির পরিপ্রেক্ষিতে করা হয়েছিল। তিনি উল্লেখ করেছেন যে অনুচ্ছেদ ৩৫(এ) রাষ্ট্রপতির আদেশের কারণে লাগু হয়েছিল এবং কখনই সংসদের অনুমোদন পায়নি। তিনি বলেন কিভাবে ৩৭০ ধারা নারী এবং সিডিউলড কাস্ট / সিডিউল্ড ট্রাইভ সম্প্রদায়ের প্রতি বৈষম্যমূলক ছিল। এটি তাদের দ্বিতীয় শ্রেণীর নাগরিক বানিয়ে রেখেছিল। সাত দশক ধরে কাশ্মীরের জনগণকে সমস্ত উন্নয়ন থেকে বঞ্চিত করার জন্য জওহরলাল নেহেরু এবং শেখ আবদুল্লাহকে দায়ী করতে লেখক দ্বিধা করেন নি।
“ডেড অন দা লেফট” শিরোনামের নিবন্ধটি আকর্ষণীয়। এটি বামপন্থী/কমিউনিস্টদের ভণ্ডামিকে প্রকাশ করে। আরএসএস-এর বরিষ্ঠ কার্যকর্তা হওয়ার কারণে, ডক্টর বৈদ্য বেশ কয়েকটি ঘটনার সম্মুখীন হয়েছেন, যা কমিউনিজমের সীমাবদ্ধতা এবং কমিউনিস্ট নেতাদের খাওয়ার দাঁত ও দেখানোর দাঁতের মধ্যে ব্যবধান দেখিয়ে দিয়েছে। তিনি পশ্চিমবঙ্গ এবং কেরালা কমিউনিস্টদের অসহিষ্ণু এবং অগণতান্ত্রিক মনোভাবের উদাহরণ তুলে ধরেছেন। লেখক জয়পুর সাহিত্য উৎসবে দুটি পৃথক ঘটনা শেয়ার করেছেন যেখানে আয়োজকরা আরএসএস নেতাদের আমন্ত্রণ জানাতে আগ্রহী ছিল না। কমিউনিস্ট নেতা সীতারাম ইয়েচুরি অনুষ্ঠান বয়কট করারও ঘোষণা করেছিলেন।
তিনি আরেকটি ঘটনা উল্লেখ করেছেন, যেখানে বিবেক অগ্নিহোত্রীকে ‘অ-সাম্যবাদী চিন্তাভাবনা’ প্রকাশ করার জন্য অনুষ্ঠানস্থলে মারধর করা হয়েছিল। দেশাত্মবোধক গান লেখা কবি প্রসূন যোশীকে নিয়েও আয়োজকরাও বিরোধিতা করেছিলেন। নিবন্ধটি আমাদের দেখায় যে কিভাবে কমিউনিস্ট/বামপন্থীরা নিজেদেরকে গণতন্ত্র, মতপ্রকাশের স্বাধীনতা এবং সাম্যের মশাল বাহক হিসাবে উপস্থাপন করে কিন্তু সর্বদা ভিন্ন দৃষ্টিভঙ্গি নিয়ে চলে।
ডক্টর বৈদ্য তার বইতে অখন্ড ভারতের ধারণাও ব্যাখ্যা করেছেন। তার মতে এটি একটি ভূ-সাংস্কৃতিক ধারণা। অখন্ড ভারত একটি ভূ-রাজনৈতিক সম্প্রসারণবাদ নয় বরং ভারতীয় ধারণা পুনরুদ্ধারের লক্ষ্য। এটি ব্যাখ্যা করে, ডঃ বৈদ্য উল্লেখ করেছেন যে ভারত পশ্চিমা দেশগুলির মতো স্থানীয় জনগণকে কখনই দাস বানায়নি, যদিও পশ্চিমাদের মতো বিশ্বব্যাপী বাণিজ্য সম্পর্ক ছিল। একজন সৈনিক বা দূত না পাঠিয়েই ভারতীয়ত্বের ধারণা সব জায়গায় ছড়িয়ে পড়েছিলো।
বইটিতে আরএসএস প্রতিষ্ঠাতা ডক্টর হেডগেওয়ার এবং প্রবীণ প্রচারক দত্তোপন্ত থেংড়েরর উপর দুটি পৃথক নিবন্ধ রয়েছে। এটি পাঠকদের স্বাধীনতা আন্দোলনের সাথে ডক্টর হেডগেওয়ারের যোগসূত্র এবং তিনি আরএসএস-এর একটি শক্তিশালী ভিত্তি স্থাপনের জন্য যে প্রচেষ্টা গ্রহণ করেছিল সে সম্পর্কে তথ্য দেয়। দত্তোপন্ত ঠেংডেরর প্রতি কৃতজ্ঞতা একটি পৃথক প্রবন্ধেও দেখা যায়। দত্তোপন্ত কেবল তার সাংগঠনিক দক্ষতার জন্যই পরিচিত ছিলেন না, একজন চিন্তাবিদ হিসেবেও পরিচিত ছিলেন। বইটি ট্রেড ইউনিয়ন এবং ছাত্র আন্দোলনের কমিউনিস্ট-আধিপত্য ক্ষেত্রে দেশপ্রেমিক চিন্তার প্রসারের জন্য দত্তোপন্তের নেওয়া প্রচেষ্টাকে স্বীকৃতি দেয়।
বইটিকে স্বাগত জানানো দরকার কারণ এটাই সবচেয়ে উপযুক্ত সময় যখন এদেশের মানুষ তাদের অবদমিত ও স্বীকৃতি না পাওয়া পরিচয় থেকে জেগে উঠছে। আরএসএস কমিউনিস্ট এবং বামপন্থীদের নেতৃত্বে বুদ্ধিবৃত্তিক বিভ্রান্তিমূলক এবং ভুল তথ্য প্রচারের মারাত্মক শিকার হয়েছে। যদিও কমিউনিস্টদের জনসমর্থন দ্রুত সঙ্কুচিত হচ্ছে তবে তারা বুদ্ধিজীবী এবং একাডেমিক বৃত্তে আধিপত্য বিস্তার করে চলেছে। এই বাস্তবতা সম্পর্কে সচেতন হয়ে কমিউনিস্টরা আরও ভয়ঙ্কর হয়ে উঠেছে এবং তারা জাতীয় স্বার্থকে উপেক্ষা করার জন্য যে কোনও মাত্রায় যেতে পারে।
ডঃ বৈদ্য কেবলমাত্র কমিউনিজম বা পশ্চিমা মতাদর্শের ভণ্ডামি এবং আদর্শিক সীমাবদ্ধতা দেখাননি বরং বিশ্বকে নেতৃত্ব দেওয়ার জন্য ভারতীয় চিন্তা দর্শনের শক্তি এবং সম্ভাবনার উপরও দৃষ্টি নিবদ্ধ করেছেন, যা অন্য সমস্ত মডেলের ব্যর্থতার কারণে নিজে শান্তির সন্ধান করছে।
বইটি কিনতে, এখানে ক্লিক করুন – https://www.amazon.in/dp/9357752803?ref_=cm_sw_r_mwn_dp_2AYTK0EYC2AZ7ND7X1R3
সত্যজিৎ শ্রীরাম জোশী
অনুবাদ – সৌভিক দত্ত
Excellent.