স্বাধীন ভারতের প্রথম স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী ছিলেন সর্দার বল্লভভাই পটেল। এখন সেই পদে আছেন বিজেপির সভাপতি অমিত শাহ। বল্লভভাই পটেলের সঙ্গে আরও একটা সম্পর্ক আছে তাঁর। কী সেই সম্পর্ক? উত্তর মিলবে নতুন বইতে। তার নাম, ‘অমিত শাহ অ্যান্ড দ্য মার্চ অব বিজেপি’। লেখক অনির্বাণ গঙ্গোপাধ্যায় ও শিবানন্দ দ্বিবেদি। প্রকাশক ব্লুমসবেরি।
তখন অমিত শাহের বয়স মাত্র ১৩। ১৯৭৭ সাল। গুজরাতের মেহসানা কেন্দ্রে লোকসভা ভোটের প্রচারে নেমেছিলেন তিনি।
কার হয়ে নেমেছিলেন?
তিনি মণিবেন পটেল। সর্দার পটেলের মেয়ে। ১৩ বছরের কিশোর অমিত রোজ মণিবেনের সঙ্গেই প্রচারে বেরোতেন। স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী নিজেই জানিয়েছেন সেদিনের কথা।
অমিত শাহের পিতামহ ও প্রপিতামহ ছিলেন গুজরাতের মান্দসা নামে এক করদ রাজ্যের কর্মচারী। তাঁদের পদের নাম ছিল ‘নগরশেঠ’। স্বাধীনতা সংগ্রামের নেতাদের সঙ্গে তাঁদের যোগাযোগ ছিল।
স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর কথায়, আমার বাবা ও ঠাকুরদা গান্ধীবাদীদের সঙ্গে মেলামেশা করতেন। আমার মা ছিলেন নিষ্ঠাবান গান্ধীবাদী। তৎকালীন গান্ধীবাদী নেতৃত্বের সঙ্গে তাঁদের বন্ধুত্ব ছিল।
নিজের রাজনৈতিক জীবনের সূত্রপাত সম্পর্কে তিনি বলেছেন, ১৯৭৭ সালে প্রবীণ গান্ধীবাদীরা সকলে ইন্দিরা গান্ধীর ওপরে বিরক্ত হয়ে উঠেছিলেন।
আচার্য জে বি কৃপালনি এবং মণিবেন পটেলের মতো অনেকে স্থির করলেন, জনতা পার্টিকে সমর্থন করবেন। ’৭৭ সালে আচার্য কৃপালনি আমাদের বাড়িতে ছিলেন সাতদিন। সেখান থেকে প্রচারে সাহায্য করতেন। তখন তাঁর অনেক বয়স। বেশি নড়াচড়া করতে পারতেন না। তাই এক জায়গায় বসেই প্রচারে সাহায্য করতেন।
তিনি নিজে কীভাবে সেই সময় রাজনীতিতে অংশ নিয়েছিলেন, তার বর্ণনা দিয়ে অমিত বলেন, আমি প্রতিদিন মণিবেনের সঙ্গে প্রচারে যেতাম। তখন তিনি রীতিমতো বৃদ্ধা। তাও সারা দিন ধরে প্রচার করতেন। তাঁর সঙ্গে প্রচারে গিয়েই রাজনীতিতে আমার প্রথম অভিজ্ঞতা হয়।
বইয়ে অমিত শাহের প্রথম দিককার কেরিয়ার, তাঁর ওপরে কার বেশি প্রভাব ছিল, তার বর্ণনা দেওয়া হয়েছে। তিনি জানিয়েছেন, কে এম মুনশির লেখা পড়ে প্রথম জীবনে উদ্বুদ্ধ হয়েছিলেন। কে এম মুনশি ছিলেন আইনজীবী, রাজনীতিক ও শিক্ষাবিদ। তিনি ভারতীয় বিদ্যাভবন প্রতিষ্ঠা করেন।
২০১০-১১ সালে হাইকোর্ট অমিতকে গুজরাতে ঢুকতে নিষেধ করে। এই বিষয়টি বিস্তারিতভাবে আছে বইতে। লেখকদের মতে, গুজরাতে ঢুকতে পারেননি বলে অমিত জাতীয় রাজনীতিতে মনোনিবেশ করেছিলেন আরও বেশি করে। ২০১৪ সালের লোকসভা ভোটে তিনি উত্তরপ্রদেশে বিজেপির প্রচারের দায়িত্বে ছিলেন। সেবার রাজ্যের ৮০ টি আসনের মধ্যে বিজেপি পায় ৭১ টি।