পাখির চোখ বিধানসভা নির্বাচন, বাঁকুড়া পুরবোর্ড দখলে উদ্যোগী বিজেপি

২০১৯’এর লোকসভা নির্বাচনে বিজেপি’র বিপুল জয়জয়াকারের পর এবার বাঁকুড়া পৌরসভা দখলে উঠে পড়ে লাগলো বিজেপি।

সূত্রের খবর, শনিবার বাঁকুড়া শহরের মাচানতলা আকাশ মুক্ত মঞ্চের সামনের রাস্তায় নারকেল ফাটিয়ে পৌরসভা দখলে অঙ্গীকার বদ্ধ হলেন দলীয় নেতা কর্মীরা। উপস্থিত ছিলেন বাঁকুড়া লোকসভা কেন্দ্রের বিজেপি সাংসদ ডাঃ সুভাষ সরকার, পৌরসভার দলীয় কাউন্সিলর নীলাদ্রী দানা সহ অসংখ্য কর্মী সমর্থক।

সূত্রের খবর, সর্বশেষ ২০১৯ -র লোকসভা ভোটের ফলাফলের নিরিখে বাঁকুড়া পৌরসভার প্রায় সব কটি ওয়ার্ডেই এগিয়ে রয়েছে বিজেপি। এই অবস্থায় যথেষ্ট উজ্জীবিত বিজেপি নেতা কর্মীরা আগামী ২০২০ সালের ভোটে এই পৌরসভা দখলের লক্ষ্যে উঠে পড়ে লেগেছেন তাঁরা। জানা গিয়েছে, এদিন সাংসদ ডাঃ সুভাষ সরকার নিজে রাস্তার উপর নারকেল ফাটিয়ে ও সাধারণ মানুষের মধ্যে লাড্ডু বিলিয়ে পৌর ভোটের প্রচার কর্মসূচী শুরুর কথা ঘোষণা করেন।

সাংবাদিকদের মুখোমুখি হয়ে সাংসদ ডাঃ সুভাষ সরকার বলেন, ‘শনিবার বার বেলায় নারকেল ফাটিয়ে বাঁকুড়ার মানুষকে কাটমানিবিহীন, মানুষের জন্য কাজ করবে এমন পৌরসভা উপহার দেওয়ার বিষয়ে প্রতিজ্ঞাবদ্ধ হলাম’। একই সঙ্গে তৃণমূল পরিচালিত বাঁকুড়া পৌরসভার বিরুদ্ধে গ্রীণ সিটির নামে যে রাস্তার কাজ হয়েছে মানুষের সমস্যা বেড়েছে। পৌরসভার কাছে এই কাজের বিষয়ে শ্বেতপত্র প্রকাশের দাবী জানান তিনি। এমনকি সরকারী প্রকল্পের উপভোক্তাদের ‘কাটমানি’ দিতে হয় অভিযোগ তুলে তিনি বলেন, ভালো পৌরসভা পেতে লোকসভা ভোটের মতো পৌর ভোটেও সাধারণ মানুষকে বিজেপির পাশে থাকার আবেদন জানান তিনি।

প্রসঙ্গত, গত ২০১৬ সালের বিধানসভা নির্বাচনে বাঁকুড়া আসনটি হাত ছাড়া হয় শাসক শিবিরের। তৃণমূল থেকে বেরিয়ে প্রাক্তন পৌরপ্রধান শম্পা দরিপা বাম-কংগ্রেস জোট প্রার্থী হিসেবে বিধানসভায় যাওয়ার ছাড়পত্র আদায় করে নেন। যদিও পরে তিনি শাসক শিবিরেই নাম লিখিয়েছেন।

অন্যদিকে জানা গিয়েছে, জেলা বিজেপি’র এই কর্মসূচীকে নিয়ে কটাক্ষ করতে ছাড়েনি শাসক তৃণমূল দল। দলের জেলা নেতা ও বাঁকুড়া জেলা পরিষদের মেন্টর অরুপ চক্রবর্ত্তী বলেন, ‘নির্বাচনের পর তো আর ওনারা নারকেল ফাটানোর সুযোগ পাবেননা, তাই নির্বাচন ঘোষণার আগেই নারকেল ফাটিয়ে দিল’। তিনি আরও দাবি করে বলেন, লোকসভা ভোটের মতো ‘জাল বোতাম’ টিপে, জাল ভোট করে জেতার সুযোগ নেই।

জানা গিয়েছে এবার পৌর ভোট ব্যালটে হবে। মানুষ তার ভোটাধিকার প্রয়োগ করবেন। তৃণমূলের আমলে বাঁকুড়া শহরের রাস্তা ঘাট ঝাঁ চকচকে হয়েছে, রাস্তায় পর্যাপ্ত আলোর ব্যবস্থা, অসংখ্য পার্ক তৈরী হয়েছে, ১৪০০ কোটি টাকার পরিশুদ্ধ পানীয় জল প্রকল্পের মতো কাজ হয়েছে বলে তিনি জানান। দলের মেণ্টর অরুপ চক্রবর্ত্তী আরও বলেন, তিনটে নারকেল ফাটিয়ে পৌরসভায় জেতা যায়না। নিজেদের জয়ের ব্যাপারে আত্মবিশ্বাসী অরুপ চক্রবর্ত্তী আরও বলেন, পৌরবাসী জানেন পৌরসভা এলাকায় কি কি কাজ হয়েছে। তারাই সিদ্ধান্ত নেবেন কার হাতে পৌরসভা পরিচালনার দায়িত্ব তুলে দেবেন বলেও জানান তিনি।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.