মুর্শিদাবাদের জিয়াগুঞ্জ এলাকায় শিক্ষক বন্ধু প্রকাশ পাল, তাঁর অন্তঃসত্ত্বা স্ত্রী এবং শিশুপুত্র হত্যারহস্য রাজ্য রাজনীতিতে নতুনভাবে আলোড়ন সৃষ্টি করেছে। এই শিক্ষক রাষ্ট্রীয় স্বয়ং সেবক সঙ্ঘের সঙ্গে যুক্ত ছিলেন। সঙ্ঘের বিভিন্ন বৈঠকেও যেতেন। বিজেপি এই শিক্ষকের মৃত্যুকে ‘রাজনৈতিক খুন’ হিসাবে দেখছে। শনিবার ধর্মতলায় গান্ধীমূর্তির পাদদেশে রাজ্য বিজেপির সভাপতি দিলীপ ঘোষ বক্তব্য রাখবেন। দুলাল কুমার, ত্রিলোচন মাহাতোর মতো নিহত বিজেপি কর্মীদের কথা রাজ্যের আইন-শৃঙ্খলা পরিস্থিতি প্রসঙ্গে আলোচনা করে বিজেপি। কিন্তু, সঙ্ঘ সমর্থক এই শিক্ষক পরিবারকে নৃশংস খুনের ঘটনাও নির্বাচনের আগে ইস্যু হিসাবে তুলে ধরতে চাইছে বিজেপি।
জিয়াগঞ্জের ঘটনা ইতিমধ্যেই স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ এবং রাষ্ট্রপতি রামনাথ কোভিন্দকে জানাবে বিজেপি। কারণ বিজেপি মনে করছে, এই রাজ্যে সঙ্ঘ কর্মীদের হত্যার ঘটনা আগে ঘটত না। কিন্তু, পাল পরিবার খুনের মাধ্যমে সেই রেওয়াজ শুরু হল। পঞ্চায়েত নির্বাচনের আগে থেকেই বিজেপি কর্মীরা খুন হয়েছে বলে খবর এসেছে। বিজেপির হিসাব অনুযায়ী, লোকসভা নির্বাচন পর্যন্ত প্রায় ৮০ জন কর্মী সমর্থক খুন হয়েছেন।
ইতিমধ্যেই, বন্ধু প্রকাশ পাল, তাঁর অন্তঃসত্ত্বা স্ত্রী ও ছোট পুত্র সন্তানকে যে নৃশংসতার সাথে হত্যা করা হয়েছে তার প্রতিবাদ জানিয়ে দোষীদের কঠোরতম শাস্তির দাবিতে এবং নিহতদের আত্মার শান্তি কামনায় মোমবাতি জ্বালিয়েছে বঙ্গীয় শিক্ষক ও শিক্ষাকর্মী সঙ্ঘ।
রাষ্ট্রীয় স্বয়ং সেবক সঙ্ঘ প্রভাবিত এই শিক্ষক সংগঠন উত্তর ২৪ পরগনা,দক্ষিণ ২৪ পরগনা,নদিয়া,হাওড়া,কলকাতায় শোক পালন করে।
বিজেপির দাবি, জিহাদিরা বন্ধু প্রকাশকে খুন করেছে। কিন্তু, পুলিশের তদন্ত অনুযায়ী, সাগরদিঘির এক ব্যবসায়ী বন্ধু প্রকাশের থেকে ৬ লক্ষ টাকা ধার নিয়েছিল। তিনি টাকা নিয়ে বেপাত্তা। তিনি এই ঘটনায় যুক্ত থাকতে পারেন। কিন্তু জেহাদি তত্ব বিজেপির রাজনৈতিক এজেন্ডায় পুরোপুরি এঁটে রয়েছে। বিজেপির জাতীয় মুখপাত্র সম্বিৎ পাত্র টুইট করে এই খুনের পিছনে জিহাদিদের হাত থাকতে পারে বলে মনে করেছেন। রাজ্য বিজেপির সভাপতি দিলীপ ঘোষ এবং রাহুল সিনহা তৃণমূল কংগ্রেসের দিকে ইঙ্গিত করেছেন।