“রাজগৃহ থেকে ফিরে এলাম ১৫ই ফেব্রুয়ারী (১৯৫৯)। আসবার পর সবচেয়ে বড় কাজ হল পূর্ববঙ্গ থেকে দলে দলে যে সব বাস্তুহারা কলকাতা এসেছিল তাদের পুনর্বাসন সম্বন্ধে ব্যবস্থা করা। এই ব্যাপারে কিছুদিন আগে থেকেই জড়িয়ে পড়েছিলাম। স্বাধীনতার প্রথম বলিদান পূর্ববঙ্গের অসংখ্য নর নারী, বৃদ্ধ, যুবক, শিশু। যেভাবে এরা প্রথমে লাঞ্ছিত, অপমানিত ও প্রহৃত এবং পরে বিতাড়িত হয়ে নিঃসম্বল অবস্থায় একবস্ত্রে ভারতের সীমান্ত পেরিয়েছিল, তাই চিরদিন স্বাধীন ভারতের কলঙ্ক ও নেহেরু সরকারের পরম ঔদাসীন্য ও নিষ্ক্রিয়তার চরম নিদর্শনরপে ভারতের ইতিহাসে রক্তের অক্ষরে লেখা থাকবে। আর এই অবস্থা একবার নয়, দুবার নয়, বহুবার ঘটেছে৷ কিন্তু ভারত সরকার চিঠিতে প্রতিবাদ জানান ছাড়া আর কিছুই করেন নি। পশ্চিমবঙ্গ সরকার ও ঠিক সেই নীতির অনুসরণ বা অনুকরণ করেন। দক্ষিণ কলকাতায় এই বাস্তুহারাদের আশ্রয় দেবার ব্যবস্থার জন্য একটি সমিতি গঠিত হয় আমি তার একজন সদস্য ছিলাম। লীলা রায়, মেঘনাদ সাহা এবং আরও কয়েকজন এর সভ্য ছিলেন। এ সম্বন্ধে বিস্তারিত লেখা বাহুল্য ; আমার নিজের দুটি অভিজ্ঞতার কথা শুধু বলব।
📌১৯৪৯ সনের পন্ডিত জওহরলাল নেহরু বাস্তুহারাদের দশা এবং তাদের পুনর্বাসন সম্বন্ধে অনেক অভিযােগের কথা শুনে নিজে সরেজমিন তদন্ত করবার জন্য কলকাতায় এলেন। আমাদের সমিতির কয়েকজন প্রতিনিধি তাঁর সঙ্গে দেখা করতে চাইলেন ; কিম্তু সরকারী কর্মচারীরা সেটা বন্ধ করবার বহু চেষ্টা করেন। অনেক কষ্টে মাত্র পনেরাে মিনিটের জন্য সাক্ষাতের অনুমতি পাওয়া গেল। ১৪ই জুলাই সকালে আমরা তিন জন পন্ডিতজীর সঙ্গে দেখা করতে গেলাম। ঘরে ঢুকে দেখি আরও জন লােক সেখানে বসে আছেন একজন গান্ধীজীর পরম ভক্ত এবং বাংলা দেশের পরিচিত নেতা, দ্বিতীয় জন এক ভদ্রমহিলা—তিনি মন্ত্রী ও উচ্চপদস্থ কর্মচারীর ঘনিষ্ঠ বন্ধু বা আত্মীয়া। এদের দুজনের উপর বাস্তুহারাদের তত্ত্বাবধানের কর্তৃত্ব অর্পিত হয়েছিল। অবশ্য তাদের অধীনে আরও বহু তত্ত্বাবধায়ক ছিলেন এবং সরকারের টাকা ব্যয় (অপব্যয়?) হয়েছে যথেষ্ট; অথচ ব্যবস্থার অভাবে বাস্তুহারাদের দুর্দশার অবধি ছিল না । পন্ডিতজীর কাছে আমাদের সমিতির পক্ষ থেকে এসব অব্যবস্থার কথা উল্লেখ করতেই এরা তার প্রতিবাদ করলেন। আমি পণ্ডিতজীকে বললাম যে আমি জানতে চাই এই ভদ্রমহিলা কটি মেয়েদের ক্যাম্প নিজে দেখে এসেছেন। নেহরু তার দিকে চাইলেন, তিনি মাথা নীচু করে রইলেন। তখন আমি বললাম যে সাক্ষাতের সময় মাত্র পনেরো মিনিট, এরই মধ্যে আমি কয়েকটি রিফিউজি ক্যাম্পে নিজে যা দেখেছি তাই আপনাকে জানাচ্ছি। আমার সঙ্গে আমাদের সমিতির রিপোর্ট ছিল তার সাহায্যে কোন তারিখে কোন ক্যাম্পে গিয়ে কি দেখেছি তার বর্ণনা করলাম। গান্ধীশিষ্য ভদ্রলােকের দিকে চেয়ে বললাম যে এ বিষয়ে কতটুকু সংবাদ উনি নিজে জানেন বা খোঁজ নিয়েছেন তাও জানতে চাই। তিনি বললেন আমি বহু ক্যাম্প দেখেছি দুঃখ দুর্দশা আছে—কিন্তু আমরা যথাসাধ্য চেষ্টা করছি। আমি কয়েকটি ক্যাম্পের উল্লেখ করে জিজ্ঞাসা করলাম এদের সম্বন্ধে আপনি কি করছেন ? অথচ এসব ক্যাম্পের বিষয়ে লিখব অভিযােগ তাে আপনার কাছে পাঠানো হয়েছে। তিনি বললেন, তার কিছু মনে পড়ছে না। আমি পণ্ডিতজীকে বললাম-আপনি যদি প্রকৃত অবস্থা জানতে চান, তবে চলুন, এখনই কোন নােটিশ না দিয়ে কয়েকটি ক্যাম্পে আমরা আপনাকে নিয়ে যাব। এমন সময় পন্ডিতজীর সেক্রেটারী এসে জানালেন যে আমাদের সাক্ষাৎকারের নির্ধারিত সময় অনেকক্ষণ পার হয়ে গেছে। পণ্ডিতজী বললেন, “আমার আরও অনেক কথা জানবার আছে”। অনেকক্ষণ ধরে আলােচনা হল। পন্ডিতজী বললেন—”আপনি যা যা বললেন, এর একটা সংক্ষিপ্ত বিবরণ লিখে আমার সেক্রেটারীকে দেবেন”। সেক্রেটারীকেও ডেকে তিনি সেকথা বললেন। বেরিয়ে এসে ঘড়ি দেখলাম-পনেরো মিনিটের জায়গায় পয়ত্রিশ মিনিট পণ্ডিতজীর সঙ্গে আমাদের আলােচনা হয়েছে। আমি সেক্রেটারী ভদ্রলােককে বললাম যে সমিতির পক্ষ থেকে বিবরণ লিখে টাইপ করতে হবে, আজকের মধ্যে পেরে উঠব না৷ কাল কোন সময় কিভাবে এটা পাঠাব? এই সব কথা বলছি এমন সময় পূর্বোক্ত ভদ্রমহিলাটি ঘর থেকে বেরিয়ে আমাকে দেখে বললেন আপনারা যদি বলেন তবে আমি পদত্যাগ করতে রাজী আছি। আমি বললাম আমার যা বলা কর্তব্য আমি তা বলেছি। এবার আপনার যা কর্তব্য তা আপনিই ঠিক করবেন ; আমার কিছু বলবার নেই।
📌এবার দ্বিতীয় অভিজ্ঞতাটির কথা বলি৷ যখন দলে দলে পূর্ব পাকিস্তান থেকে লোক আসতে লাগল তখন সবচেয়ে বড়ো সমস্যা হলো তাদের মাথা গুঁজে থাকবার ব্যাবস্থা করা৷গত মহাযুদ্ধের সময় ঢাকুরিয়া লেকের ধারে আমেরিকান সৈন্যদের থাকবার জন্য অনেকগুলি টালি ও ইঁটের বাড়ি তৈরী হয়েছিলো (তার কিছু কিছু এখনও আছে)৷ সমিতির পক্ষ থেকে আমরা কয়েকজন মুখ্যমন্ত্রী প্রফুল্লচন্দ্র ঘোষ মহাশয়ের সাথে দেখা করে বললাম যে ঐ বাড়িগুলি উদবাস্তুদের জন্য ছেড়ে দেওয়া হােক। মুখ্যমন্ত্রী রাজী হলেন না; যুক্তি দেখালেন, হিন্দুরা পুর্ববঙ্গ ছেড়ে আসবে এটা আমাদের নীতির বিরুদ্ধে। বললাম যে নীতির চেয়ে বাস্তব ঘটনা অনেক বড়। লােক দলে দলে দেশে আসছে এবং আরও আসবে৷ এদের থাকার ব্যবস্থা করাও শাশ্বত মানবতা নীতির অনুমােদিত। আমরা টাকা পয়সা যেভাবে হয় যােগাড় করব, কিন্তু বাসস্থান যােগাড় করা সমস্যা। কিন্তু মুখ্যমন্ত্রী কিছুতেই রাজী হলেন না। এই প্রসঙ্গে অর্থমন্ত্রীর সঙ্গেও সাক্ষাৎ করেছিলাম। কিন্তু তার নীতিও ঠিক একই। তবে তার একটি উক্তি ত্রিশ বছর পরে আজও আমার মনে আছে। তিনি আমার জেলার লোক—যেখানে শতকরা সত্তর জন বাসিন্দা মুসল.মান। আমি বলেছিলাম এ অবস্থার যে-হি.ন্দুরা ওখানে থাকবে তাদের বেশীর ভাগই মুস.লমান হয়ে যাবে। তিনি অম্লান বদনে বললেন, হয় হবে। এর উপর টীকা অনাবশ্যক৷
📌এ প্রসঙ্গ আর বাড়াব না। দীর্ঘকাল সংবাদপত্রে এবং সাময়িক পত্রিকায় এ নিয়ে অনেক প্রবন্ধ লিখেছি এবং প্রতিপন্ন করতে চেষ্টা করেছি যে হিন্দু মুস.লমান উভয় সম্প্রদায়ের লোক বিনিময় (exchange of population) ছাড়া এর প্রতিকারের আর কোনও উপায় নেই। বছর আগে যখন বর্তমান বাংলাদেশে বিদ্রোহ চলছিল এবং লক্ষাধিক হিন্দু, পশ্চিমবঙ্গে আশ্রয় নিয়েছিল, তখনও আমি এই মত ব্যক্ত করে সংবাদপত্রে লিখেছি এবং বলেছি এটি একটি সুবর্ণ সুযোগ-বাংলাদেশ এখন ভারতবর্ষের সাহায্যপ্রার্থী, সাহায্য না পেলে তাদের উদ্ধার নেই। এ সময়ে যদি প্রস্তাব করা যায় যে সীমান্তের খানিকটা অংশ হিন্দুদের বসবাসের জন্য তারা ভারতকে ছেড়ে দিক এবং তার বদলে পশ্চিমবঙ্গের যেসব মুস.লমান বাংলাদেশে যেতে চায় তাদের ফিরিয়ে নিয়ে বসবাসের ব্যবস্থা করব, তবে বাংলাদেশ তাতে মােটামটি রাজী হতে পারে। কিন্তু এসব কথায় অন্য লোক দূরে থাকুক বাঙ্গালী রাজনীতিক ও পুরানাে বিপ্লবীদের সমর্থন পাইনি। তখন তারা সকলেই মনে মনে এই আশা পােষণ করছেন যে, এইবার বাঙ্গালী হিন্দু-মুসল.মানের যে মিলন হল তা ‘যাবচ্চন্দ্র দিবাকরে’ অর্থাৎ আকাশে যতদিন চন্দ্র সূর্য থাকবে ততদিন বজায় থাকবে। এর জন্যে অনেক সভা সমিতি অনুষ্ঠান হয়েছে৷ আমাকে তাতে আমন্ত্রণ করতে এসেছে। আমি বলেছি-পাঁচটা বছর অপেক্ষা করুন। একজন মন্তব্য করেছে, আপনি কুড়ি বছর ঢাকায় থেকেও এই কথা বলছেন? আমি বলেছি, আমি একুশ বছর ঢাকায় ছিলাম বলেই একথা বলছি। আমার দৃঢ় বিশ্বাস হিন্দু ও মুস.লমান প্রতিবেশী বন্ধুর ন্যায় পাশাপাশি বন্ধুর ন্যায় সুখে স্বচ্ছন্দে বাস করতে পারবে কিন্তু ভাই ভাই হয়ে এক বাড়িতে বা এক রাজ্যে বাস করা তাদের পক্ষে আর সম্ভব নয়৷ তা চেষ্টা করতে গেলে হিতে বিপরীত হবে- অর্থাৎ একান্নবর্তী পরিবারের ভাব তো দূরের কথা প্রতিবেশীসুলভ বন্ধুত্বও বজায় থাকবে না৷
📌 ছ’সাত মাস আগে (১৯৭৩ সালের মাঝামাঝি) আমার বাড়ির খুব কাছেই একটি বাড়িতে ভূতপূর্ব প্রবীণ বিপ্লবীদের একটি সম্মেলন হয়েছিল। আমারও নিমন্ত্রণ ছিল। পূর্ববঙ্গ প্রসঙ্গ নিয়ে সেখানে অনেক আলােচনা হয়। আমার পূর্বোক্ত মত আমি যুক্তিতর্ক দ্বারা সমর্থন করলাম। সভায় যাঁরা উপস্থিত ছিলেন তাঁদের প্রায় সকলেই জন্ম পূর্ববঙ্গে। যে কয়েকজন এখনও পূর্ববঙ্গে বসবাস করছেন তারা সকলেই আমার মতের সমর্থন করলেন। কিন্তু যাঁরা বহুদিন যাবৎ কলকাতায় আছেন এবং পূর্ববঙ্গের সঙ্গে কোন সম্পর্ক নেই তারাই বিরুদ্ধে মত দিলেন যে হিন্দুদের বাংলাদেশেই বসবাস করা উচিত। তাঁদের ভাবটা মনে হল এই যে, যদি আমরা ইংরেজদের হাত থেকে স্বাধীনতা আনতে পেরে থাকি তবে মুস.লমানদের কাছে ন্যায্য অধিকারের দাবী জানাতে ও তা আদায় করতে পারব না কেন। আমি খুব মৃদুস্বরে এর উত্তরে নিবেদন জানালাম যে, “আশা করি তারা এবার বাংলাদেশে গিয়ে বসবাস করবেন”। সভার শেষে কুমিল্লাবাসী একজন প্রবীণ হিন্দু বিপ্লবী আমাকে বললেন যে তিনি আমার মত সর্বান্ত:করণে সমর্থন করেন এবং বাংলাদেশে যেসব হিন্দুরা এখনও আছেন তাঁদেরও এই মত। কলকাতায় বসে যাঁরা আপনার বিরােধিতা করলেন তারা দেশের খাঁটি খবর রাখেন না এবং দেখে নেবেন তাঁরা কখনও বাংলা দেশে ফিরে যাবেন না।
📌 পূর্ব পাকিস্তান হওয়ান পর পঁচিশ বছর যাবৎ হিন্দুদের উপর যে অত্যাচার হয়েছে তার বিস্তৃত কাহিনী আজও প্রকাশিত হয়নি। স্বনামধন্য বিপ্লবী ত্রৈলােক্য চক্রবর্তী (মহারাজ) তাঁর জীবনস্মৃতি গ্রন্থে যে সংক্ষিপ্ত বিবরণ দিয়েছেন তার যথার্থতা সম্বন্ধে কোন সন্দেহের অবকাশ নেই। কারণ তিনি নিজে বহু, লাঞ্ছনা সহ্য করেও জীবনের প্রায় শেষ দিন পর্যন্ত পূর্ববঙ্গে ছিলেন এবং মত্যুর অল্প কয়েক মাস আগে কলকাতায় এলেও আবার ঢাকায় ফিরে যাবেন এই সংকল্পই করেছিলেন। বিপ্লবীদের মধ্যে তিনি একজন প্রধান নেতা ছিলেন। তাঁর গ্রন্থে তিনি হিন্দুদের প্রতি মুস.লমান সরকার ও সম্প্রদায়ের যে অত্যাচারের বিবরণ দিয়েছেন তার জন্য পূর্ববঙ্গের মুসল.মানদের যে দায়ী এ সম্বন্ধে কোন সন্দেহ নেই। পশ্চিম পা.কিস্তান সরকার এ বিষয়ে হয়তাে উদাসীন ছিলেন; এবং তর্কের খাতিরে যদি ধরেও নেওয়া যায় যে এ বিষয়ে পশ্চিম পাকি.স্তানের পরােক্ষ সহানুভূতি ছিল তথাপি মুলতঃ যে পূর্ব পাকিস্তান অর্থাৎ বাংলাদেশের মুস.লমানেরাই এ বিষয়ে যথার্থ অপরাধী তা অস্বীকার করবার উপায় নেই। যে কারণে তারা তখন হিন্দুদের দূর করে দিতে ব্যস্ত ছিল সে কারণ আজও বর্তমান আছে এবং বহুদিন পর্যন্ত থাকবে। সেটা হচ্ছে ব্যক্তিগত ও সম্প্রদায়গত স্বার্থ। অর্থাৎ, হিন্দুদের তাড়াতে পারলেই তাদের বাড়িঘর জমিজমা নগদ টাকা পয়সা সব অনায়াসে দখল করা যাবে, চাকরি বাকরি সম্বন্ধেও মুসল.মানদের সুবিধা, ইত্যাদি। যে সব বাড়িঘর জমিজমা মুসল.মানেরা দখল করেছে আজ মুজিবর রহমানের নির্দেশে তারা তা স্বেচ্ছায় বা সহজে ছেড়ে দেবে এ আশা করা যায় না। পূর্ববঙ্গের শিক্ষিত মুসল.মানদের কাছে এটা প্রত্যাশা করা যায় না। আইন করে শতকরা নব্বই জনের স্বার্থ হানিকর কোন ব্যবস্থা চালু করাও সম্ভব নয়। সুতরাং পূর্ববঙ্গের হিন্দু যে তিমিরে ছিল সে তিমিরেই থাকবে।”
-জীবনের স্মৃতিদীপে, আত্মজীবনী, রমেশ চন্দ্র মজুমদার
হোসেন শহীদ সু.রাবর্দির মুরীদ মু.জিবর রহমান, পাকিস্তান আন্দোলনের অন্যতম সেনানী মুজিবর রহমান, ত্রিশ লাখ শহীদের(৯০% এর বেশী হিন্দু) রক্তে ভেজা সরণী পেরিয়ে পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী ভুট্টোর সাথে লাহোরে আলিঙ্গনাবদ্ধ হওয়া মু.জিবর রহমান, বাংলাদেশ স্বাধীন হওয়ার পর বাংলাদেশকে ইস.লামী রাষ্ট্র হিসেবে ইস.লামী সন্মিলনীতে অন্তর্ভুক্ত করা মুজি.বর রহমান, Law of continuation order, 1971 এর মাধ্যমে বাংলাদেশকে পাকিস্তানের উত্তরসূরি ঘোষণা করা মুজি.বর রহমান,’মুস.লিমরা মেনে নিবে না’ বলে রমনা কালিবাড়ি পুনঃপ্রতিষ্ঠার দাবীকে অগ্রাহ্য করা মুজিবর রহমা.নরা বাংলাদেশী মুসল.মানদের দখলীকৃত হিন্দু সম্পত্তি ছাড়তে নির্দেশ দেবেন !!! বাংলাদেশ স্বাধীন হওয়ার পর মুক্তিযোদ্ধা এম আর আখতার মুকুল ‘আমি বিজয় দেখেছি’ শীর্ষক রচনায় স্পষ্টতই লিখছেন, দেশ স্বাধীন হয়েছে তার মানে এই নয় যে সাতচল্লিশ, পঞ্চাশ, ষাট, পঁয়ষট্টি সালে পূর্ববঙ্গ ত্যাগ করা মানুষ(অবশ্যই হিন্দুরা) পুনরায় বাংলাদেশে ফিরতে পারবেন৷ অবশ্য একাত্তরে পাক আক্রমনে বাস্তুহারারা হিন্দু মুসল.মান নির্বিশেষে স্বদেশে ফিরে সম্পত্তির অধিকার পাবেন৷ কিন্তু বাস্তবক্ষেত্রে দেখা গেলো রমেশবাবুর কথাই যথার্থ প্রমাণিত হলো৷ এই বাঙ্গালী হিন্দু হোমল্যান্ড( যা গঠনের সংগ্রামে প্রথম সারির একজন যোদ্ধা ড. রমেশচন্দ্র মজুমদার) থেকে কেউ ফেরেনি, কেউ ফিরতে পারে নি৷ ‘কোন সালে এসেছি’ তা স্মৃতিমাত্র, এর বেশী কোন ন্যায্য দাবী অবান্তর……
লেখকের মতামত ব্যক্তিগত।
সৌজন্যে : আমাগো একখান দ্যাশ আসিলো