পাঁচ বছরের মাথায় ফের কেন্দ্র ভাবছে দেশের জাতীয় উৎপাদন (জিডিপি) হিসাব কষার ভিত্তিবর্ষ (বেস ইয়ার) পরিবর্তনের কথা৷ বর্তমানে কেন্দ্রের পরিসংখ্যান মন্ত্রক যে প্রকৃত (রিয়াল) জিডিপির ত্রৈমাসিক পরিসংখ্যান প্রকাশ করে তা নির্ণয় করা হয় ২০১১-১২ সালের মূল্যস্তরের ভিত্তিতে। মোদী সরকার ক্ষমতায় আসার পর ২০১৫ সালের জানুয়ারি থেকে এই নয়া ব্যবস্থা শুরু করে মোদী সরকার। এর আগে এক্ষেত্রে ভিত্তি বর্ষ ছিল ২০০৪-০৫ সাল অর্থাৎ সেই বছরের মূল্যস্তরের ভিত্তিতে তা পরিমাপ করা হতো।

এদিকে মঙ্গলবার বণিকসভা ফিকির এক অনুষ্ঠানে এসে কেন্দ্রীয় পরিসংখ্যান মন্ত্রকের সচিব প্রবীণ শ্রীবাস্তব জানিয়েছেন, আগামী কয়েক মাসের মধ্যে জিডিপির ভিত্তিবর্ষ পরিবর্তনের ব্যাপারে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে।

আপাতত তাঁরা কেবল শিল্পসংস্থাগুলির বার্ষিক সমীক্ষা এবং ভোগব্যয় সমীক্ষার ফল প্রকাশের জন্য অপেক্ষা করছেন। ওই পরিসংখ্যান হাতে এলে তখন তা বিভিন্ন বিশেষজ্ঞ কমিটির কাছে পাঠানো হবে এবং তার পর কোন বছরকে নতুন ভিত্তিবর্ষ হিসাবে ধরা হবে সে বিষয়ে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে।

এটা ঘটনা জিডিপি পরিসংখ্যানের সময়োপযোগীতা ও প্রাসঙ্গিকতা আনতে নির্দিষ্ট সময় অন্তর এই ভিত্তিবর্ষ পরিবর্তন কোনও ব্যতিক্রমী ঘটনা নয়৷ কিন্তু মাত্র চার বছরের ব্যবধানে ভিত্তিবর্ষ পরিবর্তন করাটা কিছুটা তাড়াতাড়ি মনে হচ্ছে বিভিন্ন মহলে৷ কারণ ইতিমধ্যেই মোদী জমানায় জিডিপি বৃদ্ধির যে পরিসংখ্যান প্রকাশ করা হয়েছে তা নিয়ে জোর বিতর্ক শুরু হয়েছে বিভিন্ন মহলে। শুধু তাই নয় এই পরিসংখ্যানে ইউপিএ জমানার জিডিপি বৃদ্ধির হারকে অনেক খাটো করে দেখানো হয়েছে। ফলে জিডিপির ভিত্তিবর্ষ এবং হিসাব কষার পদ্ধতি পরিবর্তন আনাকে সরকারের রাজনৈতিক উদ্দেশ্য করা হয়েছে বলে অভিযোগ ওঠে।

প্রসঙ্গত, চলতি মাসেই জুলাই-সেপ্টেম্বর ত্রৈমাসিকের জিডিপি পরিসংখ্যান প্রকাশিত হওয়ার কথা। এপ্রিল-জুলাই পর্বে সেই জিডিপির হার দেখা গিয়েছে গত ছ’বছরের সর্বনিম্ন ৫ শতাংশে নেমে এসেছে। কেন্দ্রীয় সরকার এখন চাইছে ২০১৭-১৮ অর্থবর্ষকে নতুন ভিত্তিবর্ষ করতে। যদিও এ নিয়ে এখনও পর্যন্ত কোনও চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত হয়নি।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.