বাংলার গর্ব দেশপ্রাণ বীরেন্দ্রনাথ শাসমল

বীরেন্দ্রনাথ শাসমল (২৬ অক্টোবর ১৮৮১ – ২৪ নভেম্বর ১৯৩৪) জাতীয়তাবাদী আইনজীবী ও রাজনৈতিক নেতা।

তার জন্ম কাঁথি মহকুমার চাঁদিভেটিতে। বীরেন্দ্রনাথ শাসমল ১৯০০ সালে এনট্রান্স পাস করে রিপন কলেজে ভর্তি হন (অধুনা সুরেন্দ্রনাথ আইন কলেজ)। পাশ করে উচ্চতর আইন শিক্ষার জন্যে ইংল্যান্ডে যান। মিডল টেম্পল থেকে ১৯০৪ সালে ব্যারিস্টারি পাশ করে কলকাতা হাইকোর্টে যোগ দেন।

মাঝখানে কিছুদিন মেদিনীপুর জেলা কোর্টে আইন ব্যবসা করলেও ১৯১৩ সালে আবার কলকাতা হাইকোর্টে আসেন ও আইনজ্ঞ হিসেবে খ্যাতি লাভ করেন। সশস্ত্র বিপ্লববাদীদের প্রতি সহানুভূতি পোষন করতেন। চট্টগ্রাম অস্ত্রাগার লুন্ঠনের মামলায় বিপ্লবীদের হয়ে বিনা পারিশ্রমিকে একাধিক মামলা লড়েছেন। ১৯৩২ সালে ডগলাস হত্যা মামলাতেও তিনি আসামি পক্ষ সমর্থন করেন।

সম্রাট পঞ্চম জর্জের ভারত আগমনের বিরুদ্ধে ধর্মঘটে যোগ দিয়ে কারাবাস হয়। প্রেসিডেন্সি জেলে থাকাকালীন আত্মজীবনী লেখেন ‘স্রোতের তৃণ’। বীরেন্দ্রনাথ শাসমল রাজনীতিকে সমাজকল্যাণের সমার্থক মনে করতেন। বিদেশী দ্রব্য বর্জনের আহবানে লাভজনক আইন ব্যবসা ছেড়ে আন্দোলনে যোগ দিয়েছিলেন। জেল হতে মুক্তিলাভের পর দেশবন্ধু চিত্তরঞ্জনের স্বরাজ্য দলে যোগ। মেদিনীপুর ইউনিয়ন বোর্ডের কর-বন্ধ আন্দোলনে তিনি নেতৃত্ব দেন। মেদিনীপুর জেলা বোর্ডের চেয়ারম্যান ও বঙ্গীয় ব্যবস্থাপক সভার সভ্য হয়েছিলেন। ১৯২৫ এবং ১৯২৬ প্রদেশ কংগ্রেসের সভাপতি নির্বাচিত। কংগ্রেস বিরোধী প্রার্থী রূপে কলকাতা কর্পোরেশনের ভোটে দাঁড়ান ও কাউন্সিলর নির্বাচিত হন ১৯৩৩ সালে। পন্ডিত মদনমোহন মালব্যের অনুরোধে ভারতীয় আইনসভা সদস্য নির্বাচনে অংশগ্রহণ করেন ও জয়লাভ করেন ১৯৩৪ সালে।

বীরেন্দ্রনাথ ১৯৩০ সালে লবণ সত্যাগ্রহ আন্দোলনেও প্রচুর অনুগামী নিয়ে যোগ দিয়েছিলেন। নরঘাট ও পিছাবনী এলাকায় শান্তিপূর্ন পথে লবন আইন অমান্যে বিরাট জনসমাগম হয়।

২৪ নভেম্বর, ১৯৩৪ সালে বীরেন্দ্রনাথ শাসমলের মৃত্যু হয়। দেশের রাজনীতিতে অবদান ও সংস্কারমূলক কাজের জন্যে তাকে দেশপ্রান উপাধি দ্বারা সম্মানিত করা হয়।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.