দুর্গাপুজোয় মাইকে আজান বাজানোর অভিযোগে বেলেঘাটা ৩৩ পল্লির মণ্ডপে ঢুকে ‘জয় শ্রীরাম’ ধ্বনি দিয়ে এসেছেন হিন্দুত্ববাদীরা। এবার পালটা, হুমকি দিলেন ওই পুজোকমিটির কর্তা স্থানীয় বিধায়ক পরেশ পাল। বললেন, ‘পুজোর পরদিনই পথে নামছি। ১০ হাজার ছেলেকে নিয়ে মিছিল করে বুঝিয়ে দেব, এখানে বিভেদ চলবে না।
মিছিল করে গান্ধীজি, নেতাজির মূর্তিতে মালা দেব। তার আগের দিনই করব রাবণ বধ।’ কথার ঝাঁঝে ‘রাবণ বধ’ কথাটা যেন দ্ব্যর্থবোধক ঠেকল। ফোনে ঠিকমতো শুনতে না-পাওয়ার কথা বলায়, ঝাঁঝ সামলে স্পষ্ট করে দিলেন পরেশ। বললেন, বাজির সাহায্যে রাবণের মূর্তি পোড়াবেন। মানে, দশেরা পালন করবেন।
নানা কাজের মধ্যে দিয়ে বছরভর চলে তাঁর জনসংযোগ। এই গলি থেকে ওই গলি, সব জায়গায় তাঁর ছেলে। তার পরও তাঁরই পুজোমণ্ডপে ঢুকে গেরুয়া শিবিরের ছেলেরা কী ভাবে ‘জয় শ্রীরাম’ ধ্বনি দিয়ে গেল?
পরেশ পালের জবাব, ‘করতে দিয়েছি। পুজো সবার জন্য। এটা উৎসব।’ তাঁর বিরুদ্ধে অভিযোগ দায়ের করেছেন আইনজীবী শান্তনু সিংহ। এই আইনজীবীর দাবি, হিন্দুত্ববাদীদের প্রবল প্রতিবাদের মুখে, পরেশ পাল মণ্ডপে আজানের ক্যাসেট চালানো বন্ধ করেছেন। যদিও পরেশ পালের দাবি, ‘না না, ওসব কিছু না। একঘেয়ে শুনতে লাগবে, তাই ঘুরিয়ে ফিরিয়ে বিভিন্ন ক্যাসেট চালানো হচ্ছে। আজান বন্ধ করব কেন? সম্প্রীতিটাই আসল কথা। ওই জন্যই তো আজান বাজানো হচ্ছে।’
কিন্তু, হিন্দুত্ববাদীরা অন্য দাবি করছেন। কথাটা শুনেই ফুঁসে উঠলেন পরেশ। ফোনেই ক্ষোভ বুঝিয়ে প্রশ্ন করলেন, হাতের মোয়া পেয়েছে নাকি? পরেশের ভাষায়, ‘মালসা পেয়েছে, মালসা! এখানে বেশি কিছু করতে এলে না, বুঝিয়ে দেব।’ আগের দিন বলেছিলেন মহীয়সী। আজ একধাপ এগিয়ে বললেন, ‘যতদিন মমতাময়ী মা বাংলায় আছেন, ওই এনআরসি ফেনারসি চলবে না। বাংলায় বিজেপির কোনও জায়গা নেই।’ একইসঙ্গে বললেন, ‘আমার নাম করে লিখে দিন, যেখানে খুশি অভিযোগ জানাতে পারে, যে কোনও থানায় অভিযোগ জানাতে পারে, আজান বন্ধ হবে না। পুজোর পর ওদের দেখছি।’