আর কিছুক্ষণ পরেই রায় ঘোষণা হবে ঐতিহাসিক অযোধ্যা মামলার। সুপ্রিম কোর্টের এক নম্বর এজলাসে প্রধানবিচারপতি রঞ্জন গগৈয়ের নেতৃত্বাধীন পাঁচ বিচারপতির সাংবিধানিক বেঞ্চ এই মামলার রায় দেবে।
সকাল পৌনে দশটা নাগাদ প্রধান বিচারপতি-সহ সাংবিধানিক বেঞ্চের বাকি সদস্যরা শীর্ষ আদালতে পৌঁছে গিয়েছেন। কড়া নিরাপত্তায় মুড়ে ফেলা হয়েছে সুপ্রিম কোর্ট চত্বর।
শুক্রবার রাত সাড়ে ন’টায় সুপ্রিম কোর্টের তরফে যে বিজ্ঞপ্তি জারি করা হয়েছে তাতে লেখা আছে শনিবার সকাল সাড়ে ১০টায় রায় ঘোষণা হবে। রঞ্জন গগোই ছাড়াও যে বিচারপতিরা এই বেঞ্চে আছেন তাঁরা হলেন, বিচারপতি এসএ বোবদে, বিচারপতি ডি ওয়াই চন্দ্রচূড়, বিচারপতি অশোক ভূষণ এবং বিচারপতি এস আব্দুল নাজির। মামলার সঙ্গে যুক্ত তিন পক্ষ অর্থাৎ নির্মোহী আখড়া, সুন্নি সেন্ট্রাল ওয়াকফ বোর্ড এবং উত্তরপ্রদেশ ও রামলালা বিরাজমানকে কোর্টে উপস্থিত থাকার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
টানা ৪০ দিন ধরে শুনানির পর গত ১৬ অক্টোবর শুনানি শেষ হয় বিতর্কিত এই মামলার। প্রধান বিচারপতি রঞ্জন গগৈ জানিয়ে দেন শুনানি শেষ, কিছুদিনের মধ্যেই রায় ঘোষণা করা হবে। তখনই আন্দাজ করা গিয়েছিল নভেম্বর মাসের দ্বিতীয় সপ্তাহে হয়তো এই রায় ঘোষণা হবে। কারণ ১৭ নভেম্বর প্রধান বিচারপতির পদ থেকে অবসর গ্রহণ করছেন গগৈ। তার আগেই যে তিনি এই মামলার রায় ঘোষণা করবেন তা একপ্রকার নিশ্চিত ছিল। সেটাই হল।
অযোধ্যা মামলার রায়ের দিন যত এগিয়ে আসছিল তত উৎকণ্ঠা বাড়ছিল। রায় ঘোষণার পর যাতে কোনও রকমের অপ্রীতিকর ঘটনা না ঘটে তার জন্য ইতিমধ্যেই গোটা উত্তরপ্রদেশ জুড়ে সুরক্ষা বাড়িয়েছে যোগী আদিত্যনাথের সরকার। সেইসঙ্গে মামলার রায় যে তাদের পক্ষেই যাবে সেই দাবি জানিয়েছে সব পক্ষই।
অযোধ্যার বিতর্কিত যে সৌধ ১৯৯২ সালের ৬ ডিসেম্বর ধ্বংস হয়েছিল করসেবকদের উন্মত্ত আক্রমণে, সেই সৌধের জমি সমেত মোট ২.৭৭ একর জমি নির্মোহী আখড়া, সুন্নি সেন্ট্রাল ওয়াকফ বোর্ড, উত্তরপ্রদেশ ও রামলালা বিরাজমানের মধ্যে ভাগ করে দেওয়ার কথা বলা হয়েছিল এলাহাবাদ হাইকোর্টের রায়ে।
সেই নির্দেশকে চ্যালেঞ্জ জানিয়ে সুপ্রিম কোর্টের দ্বারস্থ হয়েছিল তিন পক্ষই। মধ্যস্থতা করার চেষ্টাও করা হয়। কিন্তু কোনও ফল মেলেনি। তারপরেই হয় এই ম্যারাথন শুনানি। গোটা দেশ তাকিয়ে আছে দেশের শীর্ষ আদালতের দিকে। প্রায় তিনশো বছরের পুরনো বিবাদ নিরসনে কী রায় দেয় আদালত এখন সেটাই দেখার।