পিতৃপক্ষের অবসান, দেবীপক্ষের শুরু। পরম্পরা মেনেই ফি বছরের মতো এবারও দেবীপক্ষকে স্বাগত জানাতে রাজপথে ঢল নামে জনতার। মহানগরের বহু অঞ্চলের অসংখ্য মানুষ ব্রহ্মপুত্রের
পারে পিতৃতর্পণ করেছেন মহালয়ার ভোরে।ভোরের এই দৃশ্য ছিল চোখে পড়ার মতো। মহানগরের পাণ্ডুঘাটে সূর্য উঠার আগে থেকেই ভিড় জমতে শুরু করে।
মহালয়া তথা দেবীপক্ষের সূচনাতেই শারদোৎসবের শুরু হয়ে যায়। শারদীয় উৎসবের শুরুর মুহূর্তে হিন্দুরা স্মরণ করেন তাঁদের পরলোকপ্রাপ্ত
পিতৃপুরুষদের। তাঁদের বিশ্বাস, ভাদ্র মাসের কৃষ্ণপক্ষের প্রতিপদ থেকে আশ্বিন কৃষ্ণ-পঞ্চদশী অর্থাৎ মহালয়া পর্যন্ত পূর্বপুরুষের আত্মা ফিরে আসে পরিজনদের কাছে। তাঁরা অপেক্ষা করেন উত্তরপুরুষের হাতে তিলজল গ্রহণ করার। এই বিশ্বাস চলে আসছে ভারতীয় সংস্কৃতির পরম্পরায়।
এদিকে ভারত সেবাশ্রম সংঘের উদ্যোগে পাণ্ডুঘাটে তর্পণের আয়োজন করা হয়। সংঘের সন্ন্যাসীরা বহু গৃহস্থকে পিতৃতর্পণ করিয়েছেন। অনুরূপ তর্পণ পর্ব অনুষ্ঠিত হয়েছে শুক্রেশ্বর, কাসমারি ঘাটেও। পাণ্ডুঘাটে এদিন পিতৃতর্পণের দৃশ্য দেখতে এবং উপভোগ করতে ভোর থেকে অজস্র মানুষ বেড়াতেও আসেন।
মহালয়ার দিন দেবীপক্ষের সূচনার এই তিথিতে করা হয় তর্পণ। এছাড়াও তর্পণে বিশ্বশান্তির মন্ত্রও উচ্চারিত হয়। তাই মহালায় মানেই পুজোর শুরু। বীরেন্দ্রকৃষ্ণ ভদ্রের কণ্ঠে চণ্ডীপাঠ শুনে শুরু হয় মানুষের পথ চলা। হাজার হাজার মানুষ পথে নেমে চলে যান ব্রহ্মপুত্রের পাড়ে। পুজো তো দোরগোরায়, হাতে মাত্র কয়েকটা দিন। সবার মনেই খুশির জোয়ার।
মা এসেছেন। অশুভ শক্তি বিনাশ করে শান্তির সূচনা করবেন। এবারও তার ব্যতিক্রম নয়। অপেক্ষা মাত্র আর কয়দিনের। মহালয়ার দিনই মৃৎশিল্পীরা
মা দুর্গা প্রতিমায় চক্ষুদান করেন। তাই মহানগরের মূর্তিপাড়াগুলিতে মৃৎশিল্পীরা ভীষণ ব্যস্ত।