সপ্তম দফার পর পরই নাগা জঙ্গিদের তাণ্ডবে উত্তপ্ত অরুণাচল। এনপিপি প্রার্থী তথা অরুণাচলপ্রদেশের পশ্চিম খোনসার বর্তমান বিধায়ক টিরং আবোহ ও তাঁর পুত্র-সহ ১১ জনকে গুল করে হত্যা করেছে নাগা জঙ্গিরা। মঙ্গলবারের এই ঘটনার পর থেকে এলাকা তোলপাড় করে জঙ্গি দমন অভিযানে নেমেছে সেনাবাহিনী ও পুলিশ। সন্দেহ, এনএসসিএন (আইএম) জঙ্গিরাই এই হামলার জন্য দায়ী। জঙ্গিদের খোঁজে শুরু হয়েছে চিরুণি তল্লাশি।
খোনসার এক শীর্ষ পুলিশ আধিকারিকের কথায়, এলাকার আনাচ কানাচে তল্লাশি চালাচ্ছে সেনারা। জঙ্গিরা এখনও কোথাও আত্মগোপন করে আছে কি না খোঁজ চলছে। ঘটনাস্থল ঘিরে রেখেছে পুলিশ। পৌঁছেছে ডিআইজিপি (পূর্ব)ও চাংলাঙের এসপি-সহ পুলিশের শীর্ষ কর্তারা। বুধবার সকাল খোনসা পৌঁছে পরিস্থিতি খতিয়ে দেখছেন অরুণাচলের আইজিপি।
মঙ্গলবার অরুণাচলের তিরাপ জেলার বোগাপানি গ্রামে দুষ্কৃতী হামলার মুখে পড়েন পশ্চিম খোনসার বিধায়ক টিরং আবোহ। দেহরক্ষীদের সঙ্গে ছেলে ও পরিবারের কয়েকজন সদস্যকে নিয়ে অসম থেকে খোনসার দিকে যাচ্ছিলেন ৫৬ বছরের বিধায়ক। চারটি গাড়িতে ভাগ হয়ে ছিলেন তাঁরা। খোনসা থেকে ২০ কিলোমিটার দূরত্বে তাঁদের গাড়ি ফেলে আততায়ীরা। প্রাথমিক তদন্তে জানা গেছে, আততায়ীরা সংখ্যা ছিল ২০-২৫ জন। তাদের এলোপাথাড়ি গুলিতে ঘটনাস্থলেই মৃত্যু হয় তিরং ও তাঁর তা সঙ্গীর। পরে হাসপাতালে মারা যান আরও চার জন।
পুলিশের অনুমান নাগা জঙ্গি সংগঠন এনএসসিএন(খাপলাং) এই হামলার পিছনে সক্রিয় ভূমিকা নিয়েছে। কারণ তিরাপ জেলায় এই সংগঠনের যথেষ্ট প্রভাব রয়েছে। তা ছাড়া ন্যাশনাল পিপলস পার্টির ওই বিধায়ক পশ্চিম খোনসা কেন্দ্র থেকেই ভোট লড়ছিলেন এবং পুনর্নির্বাচনের দাবিও জানিয়েছিলেন। তবে এনএসসিএনই এই হামলার পিছনে রয়েছে কি না সেটা এখনও স্পষ্ট নয়।
দলীয় বিধায়ক ও তাঁর পরিবারের মৃত্যুতে গভীর শোক প্রকাশ করে কেন্দ্রের হস্তক্ষেপ দাবি করেছেন মেঘালয়ের মুখ্যমন্ত্রী কনরাড সাংমা। শোক প্রকাশ করেছেন অরুণাচলের রাজ্যপাল অবসরপ্রাপ্ত ব্রিগেডিয়ার বি ডি মিশ্র। পুলিশ জানিয়েছে, বিধায়ক, তাঁর ছেলে ছাড়াও জঙ্গি হামলায় যাঁদের মৃত্যু হয়েছে তাঁদের মধ্যে রয়েছেন, ওয়াঙ্গোই হাখুন, জালিন হাখুন, গ্যাংওয়াং হাখুন, মালতাম আবোহ, পাঙ্গরো, বিধায়কের দু’জন দেহরক্ষী পোংহাং আগি এবং বি শিকসা। বাকিদের এখনও সনাক্ত করা জায়নি বলে পুলিশ সূত্রে খবর।