জেএনইউয়ের আন্দোলনের নেপথ্যে দেশকে খন্ড খন্ড করে দেওয়ার চক্রান্তের ইঙ্গিত দিলেন জম্মু ও কাশ্মীর স্টাডি সেন্টারের অধিকর্তা (মার্গদর্শক) অরুণ কুমার। এই সঙ্গে অভিযোগ করলেন ‘আইসা’-র মত সংগঠনের এই স্বপ্নে ইন্ধন দিচ্ছে ভোটব্যাঙ্কের রাজনীতি। গত ছ’বছর ধরে এই শক্তি দেশে নানা অস্থিরতা তৈরির চেষ্টা করছে।

অরুণ কুমার বুধবার কলকাতায় এক অনুষ্ঠানে তাঁর ভাষণে বলেন, বিদেশী হানাদারদের ইতিহাস কোনও দেশের ইতিহাস হতে পারে না। মুখে ধর্মনিরপেক্ষতার কথা বললেও কাশ্মীর প্রসঙ্গে সেখানকার বিচ্ছিন্নতাবাদী নানা দলের সঙ্গে এক সুরে কথা বলেছে কংগ্রেস। কাশ্মীরের ব্যাপারে স্বাধীনতা-উত্তর নানা সময়ের ঘটনা, শ্যামাপ্রসাদের ভূমিকা প্রভৃতির উল্লেখ করে এক দেশ, এক জাতি, এক সংবিধানের বাস্তবায়নে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর দৃঢ় মনোভাবের প্রশংসা করেন অরুণ কুমার।

কী পরিস্থিতিতে দেশ ভাগের সিদ্ধান্ত নিতে হল, কীভাবে অসহায়ের মত শরনার্থীরা ভারতে চলে আসতে বাধ্য হয়েছেন, কীভাবে অতীতে নানা সময় বিভিন্ন দল এঁদের রাজনীতির পাশা হিসাবে ব্যবহার করেছেন, গত সাত দশকে তার বেশ কিছু উদাহরণ দেন অরুণ কুমার। এ প্রসঙ্গে ১৯৫০ সালের ৫ নভেম্বর বাবাসাহেব অম্বেদকরের খসরা, জওহরলালের ভূমিকা, ইন্দিরা-মুজিব চুক্তি, সংসদে দুই বাম নেতা ভূপেশ গুপ্ত ও প্রকাশ কারাতের বক্তব্য, ২০০৩-এ সংসদে মনমোহন সিংয়ের প্রস্তাব, ২০১০-এর ২৮ ডিসেম্বর মতুয়াদের সমাবেশে সিপিএম নেতা গৌতম দেবের আশ্বাস প্রভৃতির উল্লেখ করেন অরুণ কুমার। তিনি বলেন, ভৌগলিক বিভাজনের পর যাঁরা নিজেদের এককালের মূল নিবাস ছেড়ে ভারতে চলে আসতে বাধ্য হয়েছিলেন, তাঁদের সম্পত্তির মূল্যায়ণের দাবি উঠেছিল। কিন্তু তা হয়নি।

রাভ জন্মভূমি প্রসঙ্গে কেন্দ্রের শাসক দলের ভূমিকাকে ইতিবাচক মন্তব্য করেন অরুণ কুমার। তিনি বলেন, আমরা আত্মবিস্মৃত হয়েছি। আমরা কারা ভুলে গিয়েছি। এই ভারতের লক্ষ্য কী ছিল বাস্তবের ভেতর দিয়ে তা আমাদের জানতে হবে। এদেশের সনাতন আদর্শ বসুধৈব কুটুম্বকম— ভোগ নয়, ত্যাগেই জীবন। হিন্দুশাস্ত্র আমাদের শিখিয়েছে এক দেশ এক জাতি এক সংস্কৃতি। এটা সব সময় মাথায় রাখতে হবে ভারতে অনেক রাজ্য, কিন্তু একটি দেশ। ভারতের প্রাণ হলো ধর্ম, আধ্যাত্মিকতা ভুলে যাওয়া মানে নিজেদের ভুলে যাওয়া। বিদেশে কোনও দিন উপনিবেশ তৈরি কথা ভাবেনি ভারত। এদেশ থেকে যাঁরা বিদেশে গিয়েছেন তাঁরা বরাবর গিয়েছেন সংস্কৃতির দূত হিসাবে।

কাশ্মীর, সিএএ, এনআরসি প্রভৃতি নানা বিষয়ে গুলাম নবি আজাদ, পি চিদাম্বরম, অভিষেক মনু সিংভির সংশ্লিষ্ট বিভিন্ন অভিযোগ খণ্ডন করে অরুণকুমার উদাহরণ দেন কংগ্রেস কিভাবে বিভিন্ন সময় অসাংবিধানিক পথে হাঁটার চেষ্টা করেছে। এই সঙ্গে বলেন, রাজনীতির জন্য রাজনীতি নয়। সব মত, সব ভাষাকে স্বীকৃতি দিয়ে রাষ্ট্রের বিকাশের জন্য এগোতে হবে আমাদের।

ছবি
অশোক

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.