বাংলা নববর্ষে লোকসভা ভোটের ইস্তাহার প্রকাশ করতে চলেছে বিজেপি। সংবাদসংস্থা পিটিআই সূত্রে খবর, রবিবার বিজেপি লোকসভা ভোটের ‘সংকল্পপত্র’ প্রকাশ করবে। সেই কর্মসূচিতে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী-সহ শীর্ষ নেতৃত্বের উপস্থিত থাকার সম্ভাবনা। ইস্তাহার প্রকাশের দিন বাছাইয়ের কারণে প্রশ্ন উঠছে যে, বাংলার জন্য কি বিশেষ কিছু থাকছে তাতে?
বিজেপি সূত্রে খবর, ইস্তাহারে মূলত জোর দেওয়া হবে জনকল্যাণ এবং মানুষের সার্বিক উন্নয়নের দিকে। যে দিন ইস্তাহার প্রকাশিত হবে, সে দিনটি অম্বেডকর জয়ন্তীও। রাজনৈতিক পর্যবেক্ষকদের ধারণা, বিজেপির ইস্তাহারে দলিত বা পিছিয়ে পড়া সম্প্রদায়ের সার্বিক মানোন্নয়নের কথা বিশেষ জোর দিয়ে বলা থাকতে পারে। রবিবার পয়লা বৈশাখ। বিজেপি পাখির চোখ করেছে পশ্চিমবঙ্গকে। বাঙালিদের কাছে পয়লা বৈশাখ অন্যতম বড় উৎসব। প্রাথমিক ভাবে স্থির হয়েছিল, মঙ্গলবার ইস্তাহার প্রকাশ করবে বিজেপি। কিন্তু এক দিন এগিয়ে পয়লা বৈশাখের দিনটি বেছে নেওয়ার নেপথ্যে কি রয়েছে বিজেপির কোনও সুচিন্তিত পরিকল্পনা? বিজেপি সূত্রে খবর, ইস্তাহারে প্রতিটি রাজ্যের জন্য আলাদা আলাদা করে কিছু ঘোষণা থাকতে পারে। তাতে বাংলার জন্য কী থাকবে? রেল বা অন্য কোনও পরিবহণ মাধ্যমের প্রকল্পের কোনও বড় ঘোষণা কি থাকতে পারে বিজেপির ইস্তাহারে? আশায় বুক বাঁধছে বঙ্গ বিজেপি।
বিজেপিকে ‘বহিরাগতদের দল’ বলে প্রায়শই আক্রমণ শানিয়ে থাকে তৃণমূল। দলে বাঙালিয়ানার আমদানি করতে পদ্মশিবির চেষ্টাও করেছে প্রচুর। বস্তুত, গত বছর কলকাতায় পয়লা বৈশাখ পালন করেছিলেন কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ। এ বার কি আরও এক ধাপ এগিয়ে নির্বাচনী ইস্তাহারে বাংলার জন্য বিশেষ কোনও ঘোষণা অপেক্ষা করছে? জল্পনা বৃদ্ধি পাচ্ছে।
বিগত দিনে বিজেপির ইস্তাহারের একটি বড় অংশ দখল করে থাকত জম্মু-কাশ্মীরের উপর থেকে ৩৭০ ধারা প্রত্যাহার এবং রামমন্দির নির্মাণের সংকল্পের কথা। দু’টি প্রতিশ্রুতিই পূরণ হয়েছে মোদী আমলে। ফলে, নতুন আরও কিছু বিজেপির ইস্তাহারে সংযোজিত হয় কি না, সে দিকে নজর থাকবে। পাশাপাশি, বৃহত্তর সাংস্কৃতিক দৃষ্টিভঙ্গি এবং হিন্দুত্ব নিয়েও ঠিক কোন পথে হাঁটার কথা ভাবছে বিশ্বের সবচেয়ে বড় সংসদীয় রাজনৈতিক দল, সংকল্পপত্র থেকে সেই আভাসও পাওয়া যাবে। পার্টি সূত্রের ইঙ্গিত, এ বারের ইস্তাহারে যুব সম্প্রদায়, মহিলা, কৃষক এবং গরিব মানুষের জন্য থাকবে বিশেষ ঘোষণা।
প্রসঙ্গত, নির্বাচনী ইস্তাহার তৈরি করতে একটি কমিটি গড়েছিল বিজেপি। তার মাথায় ছিলেন দেশের প্রতিরক্ষামন্ত্রী রাজনাথ সিংহ। সেই কমিটি নিজেদের মধ্যে বৈঠক ছাড়াও দলের তরফে মানুষের কাছে জানতে চাওয়া হয়েছিল, সংকল্প পত্রে তাঁরা কী কী দেখতে চান। সেই মতামতও চূড়ান্ত ইস্তাহারে অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে। সূত্রের খবর, এ ব্যাপারে মোট ১৫ লক্ষ পরামর্শ জমা পড়েছে বিজেপি দফতরে।