প্যাংগং সো লেকের উত্তর ও দক্ষিণ তীর থেকে সেনা সরানোয় ভারত ও চিন উভয় পক্ষই লাভবান হবে। বুধবার একথা বলেছেন সেনাপ্রধান এম এম নারাভানে। একইসঙ্গে তিনি বলেছেন, আমাদের আরও অনেক পথ অতিক্রম করতে হবে। সীমান্তে সেনাবাহিনীর সংখ্যা আরও কমাতে হবে। উভয় পক্ষের মধ্যে বোঝাপড়া বৃদ্ধি করতে হবে। পরে তিনি বলেন, লাদাখ সংকটে চিনের সঙ্গে পাকিস্তানও হাত মিলিয়েছিল বলে প্রমাণ নেই। তবে ভারত কেবল দু’টি নয়, আড়াইটি ফ্রন্টে যুদ্ধ চালানোর জন্য দীর্ঘমেয়াদি পরিকল্পনা তৈরি করেছে।
আড়াইটে ফ্রন্ট বলতে সেনাপ্রধান বোঝাতে চেয়েছেন, চিন ও পাকিস্তানের বিরুদ্ধে দু’টি ফ্রন্টে ও সেইসঙ্গে দেশের অভ্যন্তরীণ নিরাপত্তার জন্য অর্ধেক ফ্রন্টে যুদ্ধ চালাতে হবে।
পরে জেনারেল নারাভানে বলেন, পূর্ব লাদাখ নিয়ে সমস্যারও সমাধান করতে হবে। এখন দুই দেশই সেনা সরাচ্ছে ঠিকই কিন্তু এখনও পরস্পরের মধ্যে বিশ্বাস ও বোঝাপড়ার অভাব আছে। গত ১০ ফেব্রুয়ারি দুই দেশ সীমান্ত থেকে সেনা সরাতে শুরু করেছে।
বিবেকানন্দ ইন্টারন্যাশনাল ফাউন্ডেশন আয়োজিত এক ওয়েবনারে সেনাপ্রধান বলেন, চিন সীমান্তে সেনা সরানোই যথেষ্ট নয়। আমাদের এখনও কাজ বাকি আছে। পরে তিনি বলেন, “আমরা যা করছি তা করবই। কিন্তু একইসঙ্গে মনে রাখতে হবে, সতর্কতা কমালে চলবে না। চিনের সঙ্গে আমাদের বোঝাপড়ার অভাব রয়েছে। লাইন অব অ্যাকচুয়াল কন্ট্রোলের দু’পাশে কী হচ্ছে, তার ওপরে নজর রাখতে হবে।”
জেনারেল নারাভানের আশা, পাকিস্তানের সঙ্গে দীর্ঘদিন আলোচনা করলে ফল হতে পারে। দুই দেশের মধ্যে বোঝাপড়া হওয়াও অসম্ভব নয়। কারণ সীমান্তে হিংসা চললে কারও লাভ হয় না। চিন সম্পর্কে তিনি বলেন, তাদের স্বভাবই হল সীমান্ত পেরিয়ে এগিয়ে আসা।
তাঁর কথায়, “চিনারা ধীরে ধীরে এগিয়ে এসেছে। তাদের কেউ বাধা দেয়নি। একটাও গুলি না ছুড়ে, একজনেরও জীবনহানি ছাড়াই তাদের লক্ষ্যপূরণ হয়েছে।” দক্ষিণ চিন সাগরের প্রসঙ্গ তুলে তিনি বলেন, সেখানে কয়েকটি দ্বীপে চিনারা সেনা মোতায়েন করেছে। ভারত এই ব্যাপারটাকে ভাল চোখে দেখছে না।
লাদাখ নিয়ে সেনাপ্রধান বলেন, সেখানে সংকট শুরু হওয়ার পরেই সরকারের প্রতিটি দফতর হাতে হাত মিলিয়ে কাজ করেছে। প্রতিরক্ষামন্ত্রী রাজনাথ সিং ও বিদেশমন্ত্রী এস জয়শংকর চিনা সরকারের সঙ্গে কথা বলেছিলেন। জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টাও যথেষ্ট ভাল পরামর্শ দিয়েছিলেন।