কেরন সেক্টরের নিয়ন্ত্রণ রেখায় পাকিস্তানের বর্ডার অ্যাকশন টিমের মুখ বন্ধ করে দিয়েছে ভারতীয় সেনাবাহিনী। পাক সেনা-জঙ্গিদের অনুপ্রবেশ রোখা তো হয়েছেই, ভারতীয় সেনাদের গুলির ঝাপটায় নিকেশ হয়েছে পাক বাহিনীর ৫-৭ জন। যাদের মধ্যে আবার চার জন জইশ-ই-মহম্মদের সক্রিয় সদস্য। সেনা-জঙ্গি জুটিয়ে পাকিস্তানের ব্যাটের নাশকতার চেষ্টা ভেঙে গুঁড়িয়ে দিয়েছে ভারতীয় সেনা। পিছু হটা পাক বাহিনীকে উদ্দেশ্য করে ভারতীয় জওয়ানরা বলেছেন, “আমাদের গুলিতে নিকেশ হয়েছে তোমাদের দলের ৫-৭ জন। সাদা পতাকা উড়িয়ে এসে দেহগুলো তোমরা নিয়ে যেতে পারো।” পাকিস্তানের তরফ থেকে যদিও এই ডাকে সাড়া দেওয়া হয়নি।
ভারতীয় সেনাবাহিনী সূত্রে খবর, গত ৩১ জুলাই থেকেই কেরন সেক্টরে অনুপ্রবেশের চেষ্টা চালাচ্ছে পাকিস্তানের ব্যাট বাহিনী। ওই দলে রয়েছে জইশ শিবিরের জঙ্গিরাও। নিহতদের কাছ থেকে স্নাইপার রাইফেল ও আইইডি বিস্ফোরক পাওয়া গেছে। সেনা সূত্র জানাচ্ছে, নিহতদের মধ্যে বেশিরভাগই জইশ জঙ্গি। বাকিরা পাক সেনা। অনুপ্রবেশ রোখা গেলেও নিয়ন্ত্রণ রেখা বরাবর এখনও আত্মগোপন রয়েছে একাধিক জইশ জঙ্গি। ফের নাশকতার চেষ্টা চালাতে পারে তারা।
ভারতীয় সেনা ও গোয়েন্দা সূত্র দাবি করেছে, কাশ্মীরে বড় রকমের নাশকতার পরিকল্পনা করছে পাকিস্তানি সেনা ও তাদের মদতে পুষ্ট জঙ্গি সংগঠন। ১৫ জন জইশ জঙ্গির একটি দল খাইবার পাখতুনখোয়ার জামরুদে সেনা প্রশিক্ষণ নিয়ে জইশের নানা শিবিরে ছড়িয়ে পড়েছে। ব্যাট বাহিনীর মদতে ভারতে অনুপ্রবেশের চেষ্টা চালাচ্ছে তাদের একটা বড় অংশ। যদিও পাকিস্তানের দাবি ছিল, নিয়ন্ত্রণরেখায় ‘ক্লাস্টার বোমা’ ব্যবহার করেছে ভারত। যাতে ক্ষতি হচ্ছে উপত্যকার বাসিন্দাদেরই। নিহতদের মধ্যে পাক সেনা নয় বরং রয়েছে স্থানীয়রাই।
গত ২৫ জুলাই কেন্দ্রের নির্দেশে বাড়তি ১০০ কোম্পানি অর্থাৎ প্রায় ১০ হাজার আধাসেনা মোতায়েন করা হয়েছে উপত্যকায়। অনেকে মনে করছেন, এই সব কিছুই সংবিধানের বিতর্কিত ৩৭০ ও ৩৫-এ ধারা নিয়ে বড় কোনও পদক্ষেপের প্রস্তুতি। এর মধ্যেই সেনাবাহিনী ও জম্মু-কাশ্মীরের পুলিশ যৌথ ভাবে ঘোষণা করেছে, জইশ-ই-মহম্মদের জঙ্গিরা ঢুকে পড়েছে জম্মু-কাশ্মীরে।
পাক সেনার সাহায্যে বড়সড় হামলার ছক কষেছে তারা। নিয়ন্ত্রণরেখা বরাবর গুলির লড়াই ভারতীয় সেনাদের ব্যস্ত করে রাখার একটা পন্থাও হতে পারে। উপত্যকায় স্থলসেনা ও বায়ুসেনাকে চূড়ান্ত সতর্ক করা হয়েছে আগে থেকেই। উপত্যকা ছেড়ে চলে যাওয়ার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে পর্যটক ও অমরনাথ যাত্রার পুন্যার্থীদের। জঙ্গি দমন অভিযানে নেমেছে সেনা-পুলিশের যৌথ দল। উপত্যকা জুড়ে শুরু হয়েছে চিরুনি তল্লাশি।