ভারতীয় সশস্ত্রবাহিনী ধর্মনিরপেক্ষ ও মানবাধিকার আইনের প্রতি শ্রদ্ধাশীল: বিপিন রাওয়াত

দেশের এবং আন্তর্জাতিক মানবাধিকার আইনকে ভারতীয় সশস্ত্রবাহিনী শ্রদ্ধা করে এবং তাঁরা শৃঙ্খলাপরায়ণ, নাগরিকত্ব সংশোধনী আইনকে ঘিরে প্রতিবাদ নিয়ে মন্তব্য করে বিতর্কে জড়ানোর পর এমনই জানিয়েছেন ভারতীয় সেনাপ্রধান বিপিন রাওয়াত।

জাতীয় মানবাধিকার কমিশনের অনুষ্ঠানে বক্তব্য রাখতে গিয়ে তিনি বলেন, “সশস্ত্র বাহিনী পুরোপুরি ধর্মনিরপেক্ষ। ভারতীয় সেনা মানবিক এবং পরিমিত”। ভারতীয় সেনা, বায়ু সেনা এবং নৌবাহিনী মিলিয়ে ভারতীয় সশস্ত্র বাহিনী তৈরি হয়েছে।

মানবাধিকার প্রসঙ্গে বিপিন রাওয়াত আরও বলতে গিয়ে বলেন, “ভারতের সশস্ত্রবাহিনী নিয়মানুবর্তিতায় বিশ্বাসী এবং দেশের এবং আন্তর্জাতিক মানবাধিকার আইনকে ভারতীয় সেনা শ্রদ্ধা জানিয়ে চলে। সশস্ত্র বাহিনী পুরোপুরি ধর্মনিরপেক্ষ। ভারতীয় সেনা মানবিক এবং পরিমিত। প্রযুক্তির সঙ্গে রণনীতিতে বদল আনাই বর্তমান চ্যালেঞ্জ”।

স‌ংশোধিত নাগরিকত্ব আইনের (সিএএ) প্রতিবাদে যেভাবে দেশজুড়ে হিংসা ও অগ্নিসংযোগের ঘটনা ঘটেছে তা একেবারেই গ্রহণযোগ্য মনে হয়নি সেনাপ্রধান জেনারেল বিপিন রাওয়তের৷ শুধু তাই নয় তিনি এই ঘটনার যারা নেতৃত্ব দিয়েছেন তাদেরও কড়া সমালোচনা করেন৷

সেনা প্রধানের বক্তব্য, ‘‘যাঁরা হিংসা ও অগ্নিস‌ংযোগ মতো ঘটনায় নেতৃত্ব দিয়ে থাকেন, তাঁরা আদৌ নেতা নন। তিনি এই প্রথম মুখ খুললেন নাগরিকত্ব আইনের প্রতিবাদে হওয়া দেশজোড়া হিংসার ঘটনার বিরুদ্ধে।

সম্প্রতি নাগরিকত্ব আইনের বিরুদ্ধে যে প্রতিবাদ আন্দোলন চলছে তাতে বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রছাত্রীদের সামিল হতে দেখা গিয়েছে, তাদেরও রীতিমতো সমালোচনা করতে দেখা দেল জেনারেল রাওয়তকে। সেনাপ্রধান জানিয়েছেন, দেখা যাচ্ছে প্রচুর মানুষকে ভুল পথে চালিত করছে বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রছাত্রীরা। সেই নেতৃত্বে কিছু ভুল ত্রুটি থেকে যাচ্ছে ফলে এটাকে আর নেতৃত্ব দেওয়া বলা চলে না।

বৃহস্পতিবার দিল্লির এক অনুষ্ঠানে উপস্থিত হয়েছিলেন সেনাপ্রধান জেনারেল রাওয়ত৷ তিনি সেখানে ব্যাখ্যা করেন, নেতৃত্ব মানে হল সব কিছুকে সামনের দিকে এগিয়ে নিয়ে যাওয়া। ফলে এই নেতৃত্ব দেওয়ার কাজটা কিছুটা জটিল এবং রীতিমতো কঠিন।

পাশাপাশি তিনি প্রশ্ন তোলেন, সব কিছুকেই কি নেতৃত্ব দেওয়া উচিত? নাকি সেটা সঠিক? যেহেতু যিনি নেতৃত্ব দেন তাঁকেই তো অন্যরা অনুসরণ করেন৷ তাঁর মতে, নেতৃত্ব দেওয়াটাকে একেবারেই সহজ কাজ নয়। ঠিক তারপরেই জাতীয় মানবাধিকার কমিশনের অনুষ্ঠানে এমন বক্তব্য রাখলেন বিপিন রাওয়াত।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.