বাংলাদেশে সম মতাদর্শীদের দ্বারা হিন্দু নিধনের মাঝেই সামনে এল আফগানিস্তানে তালিবানি নৃশংসতার আরেক নজির।
সম্প্রতি সেদেশের জুনিয়র জাতীয় ভলিবল দলের সদস্য এত তরুণীর শিরশ্ছেদ করেছে জেহাদিরা। দলের কোচ ‘পার্সিয়ান ইন্ডিপেন্ডেন্ট’-কে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে এমনটাই জানিয়েছেন। সেই সঙ্গে জানিয়েছেন, কীভাবে মৃত্যুভয়ে দিন কাটাচ্ছেন সেদেশের মহিলা অ্যাথলিটরা।
ঠিক কী জানিয়েছেন তিনি? সাক্ষাৎকার দেওয়ার সময় সুরায়া আফজলি (নাম পরিবর্তিত) নামের ওই কোচ জানিয়েছেন, মাহজাবিন হাকিমি নামের ওই তরুণীকে অক্টোবরের গোড়াতেই খুন করেছে তালিবান। তাঁর মাথা ধড় থেকে আলাদা করে দেওয়া হয়েছে। কিন্তু এখনও পর্যন্ত তরুণীর মৃত্যুর খবর প্রকাশ্যে আসেনি। কেননা তালিবান মেয়েটির পরিবারকে শাসিয়েছে, মুখ খুললে তাঁদেরও একই দশা হবে।
কে এই মাহজাবিন? তিনি কাবুল পুরসভার ভলিবল ক্লাবে খেলতেন। ক্লাবের অন্যতম সেরা খেলোয়াড় হিসেবে জনপ্রিয় হয়ে ওঠা মাহজাবিনের মুণ্ডহীন দেহের ছবি সোশ্যাল মিডিয়ায় ছড়িয়ে পড়েছে। জাতীয় দলের এমন এক সম্ভাবনাময় খেলোয়াড়ের এমন করুণ পরিণতিতে মর্মাহত কোচ মর্মাহত। তিনি জানিয়েছেন, এখনও পর্যন্ত ওই দলের মাত্র ২ জন সদস্য দেশ ছাড়তে পেরেছেন।
গত আগস্টে আফগানিস্তান দখল করেছিল তালিবান। তারপর থেকেই তারা খুঁজে চলেছে দেশের সেরা মহিলা অ্যাথলিটদের। মাহজাবিন হাকিমি সেই হতভাগ্যদেরই একজন, যাঁকে তালিবানের কোপে পড়তে হয়েছে। আফগানিস্তানের ভলিবল-সহ বাকি খেলার মহিলা সদস্যরা ইতিমধ্যেই গা ঢাকা দিয়েছেন। পরিস্থিতি প্রসঙ্গে কোচ জানাচ্ছেন, ”ভলিবল দল তো বটেই, বাকি মহিলা অ্যাথলিটরাও অত্যন্ত খারাপ অবস্থায় রয়েছেন। প্রবল আতঙ্কে দিন কাটছে তাঁদের। প্রাণ বাঁচাতে বাধ্যত লুকিয়ে থাকতে হচ্ছে তাঁদের।”
বহু আফগান মহিলা খেলোয়াড়ই এর মধ্যে বিভিন্ন মানবতাবাদী সংগঠন ও কাতার সরকারের দ্বারস্থ হয়েছেন, তাঁদের আফগানিস্তান ছাড়ার ব্যবস্থা করে দেওয়ার জন্য। কিন্তু এখনও বহু খেলোয়াড়ই ভয়ে ভয়ে দিন কাটাতে বাধ্য হচ্ছেন সেখানে। গত সপ্তাহেই কাতার সরকার ও ফিফার চেষ্টায় সেদেশের শতাধিক মহিলা ফুটবল খেলোয়াড় ও তাঁদের পরিবারের সদস্যদের আফগানিস্তান থেকে সরিয়ে নিয়ে যাওয়া সম্ভব হয়েছে। কিন্তু বাকিদের অবস্থা এখনও ভয়ংকর। মাহজাবিনের মর্মান্তিক পরিণতি তাঁদের আতঙ্ক আরও বাড়িয়ে দিয়েছে।