আরএসএস এর বার্ষিক সভা অনুষ্ঠিত হবেউটিতে

রাষ্ট্রীয় স্বয়ংসেবক সংঘ (আরএসএস) এর সরসঙ্ঘচালক মোহন ভাগবতের নেতৃত্বে এই সপ্তাহে ১৩-১৫ই জুলাই তামিলনাড়ুর উটিতে বার্ষিক প্রান্ত প্রচারক সভা অনুষ্ঠিত হবে। সেখানে বিভিন্ন শাখার দ্বারা গৃহীত কাজের পরিসংখ্যান নেওয়ার জন্য এবং ২০২৫ সালে সঙ্ঘের শতবর্ষের আগে সম্প্রসারণ পরিকল্পনা পর্যালোচনা করার জন্য সবাই মিলিত হবে।

সমসাময়িক রাজনৈতিক, সামাজিক এবং অর্থনৈতিক বিষয়গুলিও সভায় আলোচনা করা হবে‚ যেমন শাখাগুলির দ্বারা পরিচালিত ক্রিয়াকলাপ, সঙ্ঘকার্য প্রসারণের প্রচেষ্টা এবং বিভিন্ন বাঁধাবিপদগুলি ইত্যাদি সাংগঠনিক বিষয়গুলিতে ফোকাস করবে সংঘের কর্মীরা!

অখিল ভারতীয় প্রচার প্রমুখ অর্থাৎ সংঘের প্রধান মুখপাত্র সুনীল আম্বেকর জানিয়েছেন‚ “সভাটি এই বছর অনুষ্ঠিত সংঘ শিক্ষা বর্গগুলি (আরএসএস প্রশিক্ষণ শিবির) নিয়ে আলোচনা এবং পর্যালোচনা করবে। এছাড়াও সংগঠন সম্প্রসারণের জন্য সংঘের শতবর্ষী কর্ম পরিকল্পনায় এ পর্যন্ত যে অগ্রগতি হয়েছে তা নিয়ে আলোচনা করা হবে। এই বৈঠকের লক্ষ্য হল, অন্যান্যদের মধ্যে, সামাজিক রূপান্তর সম্পর্কিত শাখা-স্তরের কার্যক্রম এবং পরবর্তী ৪-৫ মাসের সাংগঠনিক কর্মসূচি ও কার্যক্রমের পাশাপাশি সমসাময়িক বিষয়গুলি নিয়ে আলোচনা করা।”

বার্ষিক সভাটি এমন এক সময়ে অনুষ্ঠিত হচ্ছে যখন বিজেপি সরকার অভিন্ন নাগরিক কোড (ইউসিসি) চালু করতে চলেছে। যেটা কয়েক দশক ধরে সংঘের অ্যাজেন্ডায় ছিল্ল।

বার্ষিক বিজয়দশমী বক্তৃতা সহ তার বেশ কয়েকটি বক্তৃতায়, ভাগবত ভারতের ক্রমবর্ধমান জনসংখ্যা‚ তার ফলে প্রাকৃতিক সম্পদের উপর সৃষ্ট চাপ এবং দেশে জনসংখ্যার ভারসাম্যহীনতা ও জনসংখ্যাগত পরিবর্তন” সম্পর্কে উদ্বেগ প্রকাশ করেছিলেন।

নাগপুরে তাঁর শেষ বার্ষিক ভাষণে ভাগবত বলেছিলেন, “জনসংখ্যার ভারসাম্যহীনতা ভৌগলিক সীমানা পরিবর্তনের দিকে নিয়ে যায়। জন্মহারের পার্থক্যের পাশাপাশি জোরপূর্বক ধর্মান্তর, প্রলোভন এবং অনুপ্রবেশও এর বড় কারণ। এই সমস্ত কারণগুলি নিয়ে আলোচনা করা প্রয়োজন। জনসংখ্যা নিয়ন্ত্রণ এবং ধর্ম-ভিত্তিক জনসংখ্যার ভারসাম্য একটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয়। একে আর উপেক্ষা করা যাবে না।

আইন কমিশনও সাধারণ মানুষের কাছে লিঙ্গ সমতা, বিবাহ নিবন্ধন, দত্তক গ্রহণ এবং সম্পদের বিভাজনের মতো বিস্তৃত বিষয়গুলিতে অভিন্নতার প্রস্তাব করে এমন কোডের রূপরেখা সম্পর্কে প্রতিক্রিয়া এবং পরামর্শ চেয়েছে।

গত মাসে মধ্যপ্রদেশে দলীয় কর্মীদের উদ্দেশে মোদি বলেছিলেন যে ইউসিসির নামে মুসলমানদের বিভ্রান্ত করা হচ্ছে। তিনি জিজ্ঞেস করেন„“আজকাল, ইউসিসি দ্বারা জনগণকে উস্কে দেওয়া হচ্ছে। আপনি আমাকে বলুন, যদি একটি বাড়িতে একজন ব্যক্তির জন্য একটি আইন থাকে এবং অন্য ব্যক্তির জন্য অন্য আইন থাকে, তাহলে কি সেই বাড়িটি চলবে?

ইউসিসির বাস্তবায়ন, জম্মু ও কাশ্মীর থেকে বিচ্ছিন্নতামূলক ৩৭০ অনুচ্ছেদ অপসারণ, অযোধ্যায় রাম মন্দির নির্মাণ এবং গোহত্যার উপর দেশব্যাপী নিষেধাজ্ঞা দীর্ঘদিন ধরেই আরএসএস-এর অ্যাজেন্ডায় রয়েছে।

আরেকটি বিষয় যা আলোচনায় আসবে বলে আশা করা হচ্ছে তা হল তফসিলি উপজাতির তালিকায় মেটিদের অন্তর্ভুক্ত করার ইস্যুতে মণিপুরে অস্থিরতা। বনবাসী কল্যাণ আশ্রম (ভিকেএ) এই বিষয়ে উল্লেখযোগ্য ভূমিকা নেবে। জানুয়ারিতে বার্ষিক সভাতেই তারা সম্প্রদায়গুলিকে এসটি মর্যাদা দেওয়ার জন্য নির্ধারিত পদ্ধতি মেনে চলার পরামর্শ দিয়েছিল।

এই বৈঠকটিতে সংখ্যালঘুদের প্রতি সংঘের প্রচারেরও পর্যালোচনা করবে বলে আশা করা হচ্ছে। সংঘকে সংখ্যালঘু বিরোধী হিসাবে প্রচারের বিরুদ্ধে সরসঙ্ঘচালক জাতীয় রাজধানীতে একটি মাদ্রাসা পরিদর্শন করেন এবং মুসলিম সম্প্রদায়ের প্রতিনিধিদের সাথে দেখা করেছিলেন।

বৈঠকে যারা উপস্থিত থাকবেন তাদের মধ্যে রয়েছেন সাধারণ সম্পাদক দত্তাত্রেয় হোসাবলে, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক কৃষ্ণ গোপাল, মনমোহন বৈদ্য, সি আর মুকুন্দ, অরুণ কুমার এবং রামদত্ত। প্রন্ত প্রচারক, তাদের ডেপুটি এবং সঙ্ঘের বিভিন্ন শাখার সাংগঠনিক সম্পাদকরা।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.