ঠিক যেন আগেরবারের পুনরাবৃত্তি। করোনার প্রথম ধাক্কার পরে সংক্রমণের গতি কিছুটা কমতেই সরকার সদর্পে ঘোষণা করে দিয়েছিল, ‘এই লড়াইয়ে আমরা সফল হয়েছি।’ একই ঘটনা ঘটল দ্বিতীয় ধাক্কার ক্ষেত্রেও। দেশের দৈনিক সংক্রমণ যখন ১ লক্ষ ৩০ হাজারের আশেপাশে ঘোরাফেরা করছে, তখনই কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ (Amit Shah) ঘোষণা করে দিলেন, “প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির সুযোগ্য নেতৃত্বের জন্য সাফল্যের সঙ্গে করোনার দ্বিতীয় ধাক্কা সামলাতে সক্ষম হয়েছে দেশ।”
গতকাল গুজরাটে ন’টি অক্সিজেন প্লান্টের শিলান্যাস করতে গিয়ে কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীকে বলতে শোনা যায়,”এই মুহূর্তে দেশের অক্সিজেনের চাহিদা ১০ হাজার টন থেকে কমে ৩৫০০ টনে নেমে এসেছে। এতেই প্রমাণ হয়, দেশে করোনার সংক্রমণ কমছে। কমছে সক্রিয় রোগীর সংখ্যাও। এতেই বোঝা যায় দেশে করোনা নিয়ন্ত্রণে আসছে।” কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী দাবি করেছেন,”করোনার (Coronavirus) বিরুদ্ধে লড়াইয়ে যখন বিশ্বের উন্নত দেশগুলিও হিমশিম খাচ্ছে। সেখানে ধৈর্য ও পরিকল্পনার জোরে এই মহামারীর বিরুদ্ধে সাফল্য পেয়েছে ভারত। অন্য দেশগুলিতে সরকার যেখানে একক ভাবে করোনার বিরুদ্ধে লড়াই করছে, সেখানে ভারতে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির (Narendra Modi) সুযোগ্য নেতৃত্বে ১৩৫ কোটি দেশবাসী লড়াইয়ে যোগ দিয়েছেন। সরকার একা এই লড়াইয়ে জিততে পারত না।”
[আরও পড়ুন: রাজ্যের ভোট পরবর্তী হিংসা নিয়ে ফের রাষ্ট্রপতির হস্তক্ষেপ দাবি, এবারে চিঠি শতাধিক শিক্ষাবিদের]
অমিত শাহর তথাকথিত এই ‘সাফল্যে’র ঘোষণা একাধিক প্রশ্ন তুলে দিয়েছে। কারণ, করোনা সংক্রমণ আগের থেকে অনেকটা কমলেও এখনও দেশে দৈনিক ১ লক্ষ ৩০ হাজার মানুষ আক্রান্ত হচ্ছেন। আড়াই হাজারের বেশি মানুষ প্রাণ হারাচ্ছেন। এর মধ্যেই কীভাবে ‘সাফল্য’ দাবি করলেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী? তাছাড়া আগেরবারও এভাবেই সরকার সাফল্য ঘোষণা করে দিয়েছিল। যার ফলশ্রুতিতে স্বাস্থ্যব্যবস্থা ঢেলে সাজানোর কাজ থমকে গিয়েছিল। আবার সাধারণ মানুষের মধ্যেও গা-ছাড়া মনোভাব দেখা গিয়েছিল। যার খেসারত দ্বিতীয় ধাক্কার সময় দিতে হয়েছে দেশকে। এই পরিস্থিতিতে এভাবে সাফল্য ঘোষণা কতটা বুদ্ধিমত্তার পরিচয়? প্রশ্ন থাকছেই।