জম্মু কাশ্মীরে বড় নাশকতা ঘটানোর লক্ষ্যে ইসলামাবাদ যে জঙ্গি অনুপ্রবেশ ঘটাতে জোর লাগিয়েছে সে ব্যাপারেই আগেই গোয়েন্দা তথ্য পেয়েছে নয়াদিল্লি। আশঙ্কা পুলওয়ামার মতো বড় হামলার প্রস্তুতি নিচ্ছে জঙ্গিরা। এই পরিস্থিতিতে কাশ্মীরে জোরদার তল্লাশি অভিযানের পাশাপাশিই ঘন ঘন কৌশল-বৈঠক শুরু হয়ে গেল নয়াদিল্লিতে।
রবিবার ছুটির দিনেও রাইসিনা হিলে তৎপরতা ছিল চোখে পড়ার মতোই। এ দিন বেলার দিকে জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা অজিত ডোভাল, ভারতীয় গোয়েন্দা বাহিনী রিসার্চ অ্যান্ড অ্যানালিসিস উইংয়ের প্রধান সামন্ত গোয়েল, কেন্দ্রীয় গোয়েন্দা বাহিনীর প্রধান অরবিন্দ কুমার এববং স্বরাষ্ট্র সচিব রাজীব গৌবাকে নিয়ে দীর্ঘ বৈঠক করেন কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রী অমিত শাহ।
নয়াদিল্লির কূটনৈতিক বিশেষজ্ঞরা মতে, প্রাক্তন কেন্দ্রীয় গোয়েন্দা প্রধান তথা জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা অজিত ডোভাল বরাবরই পাকিস্তানের প্রশ্নে কট্টরপন্থী। অতীতে গোয়েন্দা বাহিনীতে কর্মরত অবস্থায় তিনি নিজেই বহু অপারেশনের নেতৃত্ব দিয়েছেন। মোদী জমানায় উরিতে পাক অধিকৃত কাশ্মীরে সার্জিক্যাল স্ট্রাইক ও পরে বালাকোটে বায়ুসেনার হামলার নেপথ্যেও তাঁর ভূমিকা ছিল অন্যতম। সে দিক থেকে রবিবারের বৈঠকে ডোভালের উপস্থিতি তাৎপর্যপূর্ণ বইকি। আরও তাৎপর্য এই কারণেই যে উপত্যকায় অতিরিক্ত ৩৫ হাজার সেনা গত কয়েকদিনে পাঠিয়েছে নয়াদিল্লি। অমরনাথ যাত্রা স্থগিত করে যাত্রীদের ফিরে যেতে বলা হয়েছে। তার পর চিরুণি তল্লাশি করে এ পর্যন্ত সাত জন জঙ্গিকে খতম করেছে সেনাবাহিনী। সেনা অপারেশনে পাকিস্তানের বর্ডার অ্যাকশন টিমেরও পাঁচ জনের মৃত্যু হয়েছে বলে সেনা সূত্রে দাবি করা হচ্ছে।
সামগ্রিক প্রস্তুতি দেখে অনেকেই মনে করছেন, বড় কোনও অপারেশন শুরু হতে চলেছে কাশ্মীরে। রবিবারের বৈঠক তা নিয়ে কৌতূহলের পারা আরও চড়িয়ে দিয়েছে। উপরি কাল সোমবার সকালে মন্ত্রিসভার নিরাপত্তা বিষয়ক কমিটিরও বৈঠক ডেকেছেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী।
কূটনৈতিক বিশেষজ্ঞদের কথায়, নব্বইয়ের দশকের পর কাশ্মীরে এতো সেনা একসঙ্গে কখনওই মোতায়েন করা হয়নি। শুধু অনুপ্রবেশ বন্ধ করার উদ্দেশ্য থাকলে এতো সেনা মোতায়েন প্রয়োজন ছিল বলেও মনে করা হচ্ছে না। আগামী দু-এক দিনে নয়াদিল্লির গোটা কৌশল আরও স্পষ্ট হয়ে যাবে বলে তাঁরা মনে করছেন।