লোকসভায় ফুঁসে উঠলেন অমিত শাহ, ‘ধর্মের ভিত্তিতে দেশ ভাগ করেছে কে!’

সংসদে নাগরিকত্ব সংশোধন বিল পেশ করতে গিয়ে সোমবার কংগ্রেসকে তীব্র আক্রমণ করলেন কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ।

গত ক’দিন ধরে নাগরিকত্ব বিল নিয়ে মোদী সরকারের বিরুদ্ধে বিভাজনের রাজনীতির অভিযোগ করেছেন কংগ্রেস নেতৃত্ব। এমনকি কংগ্রেস নেতা শশী তারুর বলেছেন, মোদী-অমিত শাহ ভারতকে হিন্দু পাকিস্তান বানাতে চাইছেন। অন্যদিকে লোকসভায় কংগ্রেস নেতা অধীর চৌধুরী, তৃণমূল সাংসদ সৌগত রায় বলেছেন, সরকার অসাংবিধানিক কাজ করছে। সংবিধানের ১৪ নম্বর ধারায় সমানাধিকারের কথা বলা হয়েছে, তা লঙ্ঘন করতে চাইছে মোদী সরকার।

এই পরিস্থিতিতে অমিত শাহ যেন যুক্তি সাজিয়েই রেখেছিলেন। বিল পেশ করে তাঁর সংক্ষিপ্ত বক্তৃতায় কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, যুক্তিসঙ্গত শ্রেণিবিন্যাসের ভিত্তিতে নাগরিকত্ব বিল সংশোধন করা হচ্ছে। তিনি বলেন, “সংবিধানের ১৪ নম্বর ধারায় তো সমানাধিকারের কথা বলা হয়েছে, তা হলে সংখ্যালঘু শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলিকে কেন বিশেষ মর্যাদা দিয়েছিল কংগ্রেস?” তাঁর কথায়, “এমন নয় যে নাগরিকত্ব আইন এই প্রথম সংশোধন করা হচ্ছে। এর আগে ইন্দিরা গান্ধীও ৭১ সালে এই আইন সংশোধন করেছিলেন। তখন বলা হয়েছিল, বাংলাদেশ থেকে আসা শরণার্থীদের নাগরিকত্ব দেওয়া হবে”। একথা বলেই অমিত শাহ প্রশ্ন তোলেন, কেন পাকিস্তান থেকে আসা শরণার্থীদের তখন নাগরিকত্ব দেওয়ার কথা বলা হয়নি।

আসলে সমস্যার শিকড়ে রয়েছে কংগ্রেসের ভ্রান্ত নীতি। কংগ্রেস যদি ধর্মের ভিত্তিতে দেশভাগ না করত তা হলে আজ এই পরিস্থিতি তৈরি হত না।

এখানেই থামেননি কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী। তিনি বলেন, এই আইন সংশোধন কেন জরুরি হয়ে পড়েছে তা বিল নিয়ে পূর্ণাঙ্গ বিতর্কের সময় বলব। কিন্তু আজ অন্তত এটুকু বলি যে আপনারা কি বাংলাদেশ, পাকিস্তান, আফগানিস্তানের সংবিধান দেখেছেন। ওদের সংবিধানে স্পষ্ট বলা হয়েছে তারা ইসলামিক রাষ্ট্র। সেখানে মুসলিমদের ধর্মাচারণে কোনও বাধা নেই। কিন্তু সংখ্যালঘুদের উপর অত্যাচার হচ্ছে। বাংলাদেশে হিন্দুদের বেছে বেছে নিগ্রহ করা হচ্ছে।

অমিত শাহর কথায়, দেশ ভাগের সময় নেহরু-লিয়াকত চুক্তিতে বলা হয়েছিল, দু’দেশই সংখ্যালঘুদের অধিকার ও নিরাপত্তা সুনিশ্চিত করবে। ভারত সেই কথা রেখেছে। কিন্তু পাকিস্তান কথা রাখেনি। তাই এই পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে।

সংখ্যালঘু শরণার্থীদের প্রসঙ্গও এদিনের বক্তৃতায় উত্থাপন করেন কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী। তিনি বলেন, এই বিল পাশ হওয়ার পরেও পাকিস্তান, আফগানিস্তান বা বাংলাদেশের কোনও মুসলিম সজ্জন যদি ভারতের নাগরিকত্বের জন্য আবেদন করেন, তখন অবশ্যই তা বিবেচনা করে দেখা হবে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.