বৃহস্পতি ও শুক্রবার দু’দিন রাজ্যে থাকছেন অমিত শাহ। দু’দিনেই সরকারি ও রাজনৈতিক কর্মসূচি রয়েছে তাঁর। আর সেই সফরের শাহর সর্বক্ষণের সঙ্গী হচ্ছেন রাজ্য বিজেপি সভাপতি সুকান্ত মজুমদার এবং বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী। বিজেপি সূত্রে খবর, সুকান্ত, শুভেন্দু ছাড়াও রাজ্যের দুই সাংসদ তথা কেন্দ্রীয় প্রতিমন্ত্রী শান্তনু ঠাকুর এবং নিশীথ প্রামাণিক শাহর সঙ্গে সরকারি অনুষ্ঠানগুলিতে থাকতে পারেন।
শাহ যখন রাজ্যে আসছেন, তখন নানা সমস্যায় জর্জরিত বাংলা বিজেপি। সাংগঠনিক বিষয় নিয়ে যেমন ক্ষোভ বিক্ষোভ রয়েছে, তেমনই পরিষদীয় দলের সঙ্গে রাজ্য নেতৃত্বের বোঝাপড়া নিয়েও নানা বিতর্ক চলছে। এই দুই ক্ষেত্রেরই সমাধানের পরামার্শ এই সফরে দিতে পারেন শাহ। এর পাশাপাশি অর্জুন সিংহ, সৌমিত্র খাঁ-সহ দলের কয়েক জন সাংসদকে নিয়েও রাজনৈতিক মহলে নানা জল্পনা। বেসুরো হতে দেখা গিয়েছে কেন্দ্রীয় মন্ত্রী শান্তনুকেও। অনেক সময়ে দলের বা কেন্দ্রীয় সরকারের নীতির বিরোধিতায় প্রকাশ্যে সরব হয়ে দলের অস্বস্তি বাড়াচ্ছেন কেউ কেউ। গত বিধানসভা নির্বাচনের আগে রাজ্যে বিজেপির বিভিন্ন পদক্ষেপ নিয়ে এখনও দলের ভিতরে সমালোচনা চলে। অন্য দল থেকে নেতা নেওয়া-সহ বিভিন্ন পদক্ষেপে সেই সময়ে শাহের সম্মতি ছিল বলেই মনে করে বিজেপি শিবির। যদিও যাবতীয় সমালোচনার মুখে কৈলাস বিজয়বর্গীয়, শিব প্রকাশ-সহ রাজ্যের দায়িত্বে থাকা কেন্দ্রীয় নেতারা। ভোটে ভরাডুবির পরে তাঁরা আর সে ভাবে রাজ্যে আসেননি। শাহও গত এক বছরে বাংলায় পা রাখেননি।
এ বার শাহকে পেয়ে দলের বিভিন্ন সমস্যা সমাধানের পাশাপাশি বিদ্রোহীদের বার্তা মিলতে পারে বলে মনে করছেন দলের রাজ্য নেতৃত্ব। গেরুয়া শিবির সূত্রে খবর, সেই কারণেই শাহকে পরিস্থিতি সম্পর্কে বিস্তারিত জানাতে সর্বক্ষণের সঙ্গী হচ্ছেন সুকান্ত ও শুভেন্দু। শাহ নিজেই নাকি এমনটা চেয়েছেন বলেও জানা গিয়েছে। বৃহস্পতিবার দক্ষিণবঙ্গে দু’টি ও শুক্রবার উত্তরবঙ্গে একটি সীমান্ত সুরক্ষা বাহিনীর অনুষ্ঠানে যোগ দেবেন শাহ। এর পাশাপাশি শুক্রবার সন্ধ্যায় কলকাতায় রয়েছে সরকারি অনুষ্ঠান। এর মাঝে বৃহস্পতিবার শিলিগুড়িতে জনসভা এবং শুক্রবার রাজ্য বিজেপির সঙ্গে জোড়া বৈঠক। প্রথমটিতে ডাকা হয়েছে জেলা সভাপতি স্তর পর্যন্ত সাংগঠনিক দায়িত্বপ্রাপ্তদের। আর দ্বিতীয়টিতে থাকবেন দলের সব জনপ্রতিনিধি।
রাজ্য বিজেপি তাকিয়ে রয়েছে মূলত এই জোড়া বৈঠকের দিকে। পদাধিকার বলে এবং জনপ্রতিনিধি হওয়ায় দু’টি বৈঠকেই থাকবেন সুকান্ত ও শুভেন্দু। কিন্তু তার আগে ঠিক কোথায় কোথায় সমস্যা রয়েছে এবং সমাধানে কী করা উচিত, তা নিয়ে দু’জনের সঙ্গে আলোচনা করতে পারেন শাহ। বিজেপি সূত্রে খবর, সেই কারণেই দু’জনকে সফরসঙ্গী হিসেবে চেয়েছেন কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী। বৃহস্পতিবার রাতে শিলিগুড়ির একটি হোটেলে থাকবেন শাহ। সেখানেও সুকান্ত এবং শুভেন্দুর সঙ্গে কথা বলে শুক্রবারের বৈঠক নিয়ে ‘হোমওয়ার্ক’ সেরে নিতে পারেন শাহ।