মারাঠী অভিনেত্রী স্বরা ভাস্কর বরাবরই একটু ঠোঁট কাটা মানুষ । যখন যা মনে আসে,তখন সেটাই করে বসেন আপন খেয়ালে। তবে কেই তাঁকে যেন উন্মাদ না ভাবেন। উনি আপন খেয়ালে যা খুশি তা করে বা বলে ফেললেও তার পেছনে থাকে বুদ্ধির ছোঁয়া বা পরিকল্পিত কিছু।

ইনি কিন্তু নরেন্দ্র মোদির একজন প্রচন্ড সমালোচক।সমালোচনা করার অধিকার সবারই আছে।নরেন্দ্র মোদিকে সবার ভালবাসতে হবে, এমন ফতোয়া আবার কে দিল! নরেন্দ্র মোদি নিজেও কখনো দিয়েছেন বলে জানা যায় না সুতরাং তাঁকে সমালোচনা করার অধিকার অবশ্যই দেওয়া আছে এবং এটাই গণতন্ত্রের প্রথম শর্ত। তা উনি মোদির বিরুদ্ধে বলতেই পারেন শুধু নয়, ফি বিজেপি দলের বিরুদ্ধেও বলতে পারেন।উনি নিজের বিরোধীতা বজায় রেখে আপ প্রার্থী অতীশি মারলেনার হয়ে বিজেপি প্রার্থী গৌতম গম্ভীরের বিরুদ্ধে দিল্লিতে প্রচার চালিয়েছেন ও দিল্লির সব কটি আসনেই আপ দলকে হারিয়েছেন।এক্ষেত্রে মমতা বন্দোপাধ্যায়ের নিকট থেকে হয়তো উপদেশ নিয়ে তিনি আশ্বস্ত হয়েছেন।প্রসঙ্গত মমতা বলেছেন,’যাঁরা হেরেছেন,তারা সবাই হারেন নি’ স্বরা ভাস্করও মমতার উবাচ মেনে হয়তো ভাবছেন, তাঁর প্রচারের ফলে আসলে কেউ হারেননি।ভাল সান্তনা বলেই মানতে হয় বৈ কি!

গোল বেঁধেছে অন্যত্র । এই ঠোঁট কাটা অভিনেত্রী বিহারের বেগুসরাইয়ে কানহাইয়া কুমারের প্রচারে হাজির হতে গেলেন কেন? যদিও কানহাইয়া কুমার 422000 ভোটে হেরেছে, তাও কিন্তু স্বরা দেবীর বিরুদ্ধে কিছু প্রশ্ন তোলার সুযোগ করে দিয়েছে। একজন অভিনেত্রী হিসেবে তিনি অর্থের বিনিময়ে প্রচারে যেতেই পারেন, একথা মান্য করার পরও বলছি সর্বক্ষেত্রে সেটা সমাজে সঠিক প্রতিফলন ফেলে না। যে কানাহাইয়া কুমারের প্রচারে উনি গিয়েছিলেন,সেই কানহাইয়া কুমার কিন্তু ভারতবর্ষ ভাঙার জন্য জীবনপণ সংগ্রামে নিয়োজিত! অর্থের বিনিময়ে স্বরাদেবী কি কানহাইয়ার সুরে সুর মিলিয়ে ভারত ভাঙতে চাইলেন? না স্বরা দেবী, ঠিক করেন নি,কর্তব্যে ভুল করে বসে আছেন।

এরপর মোদিজি তথা তাঁর দল ব্যাপক সংখ্যা গরিষ্ঠতা নিয়ে জয়ী হলে স্বরা ভাস্কর মোদিজিকে শুভেচ্ছা জানান। বলেন, ”এমন জয়ের জন্য অনেক শুভেচ্ছা নরেন্দ্র মোদির। গণতান্ত্রিক দেশের নাগরিক হিসেবে দেশের রায়’কে শ্রদ্ধা জানাই আশা করি তাঁর দেওয়া প্রতিশ্রুতিগুলো পূর্ণ করে ভারতকে আরও এগিয়ে নিয়ে যাবেন। কারণ উনি সমস্ত ভারতের প্রধানমন্ত্রী। তাঁদেরও প্রধানমন্ত্রী, যাঁরা ওনাকে ভোট দেননি।” একদম উদারচেতা এক নাগরিকের কথা বলে মনে হচ্ছে । প্রশ্ন হলো, এইমত বিরোধী বহু মানুষ ভারতবর্ষে আছেন। অন্য কেউ তো এইমত ট্যুইট করেননি! শুধু স্বরাই করতে গেলেন কেন? তবে কি পেছনে আবর্জনার স্তূপ লুকিয়ে আছে? আর তারজন্যই দেশদ্রোহীর হয়ে প্রচার?আর যখন নিজের প্রার্থী হেরে গেল, তখন আবার মোদি তথা বিজেপি’দলের উমেদারি!

এর আগে 29.01.2018 তারিখে পদ্মাবৎ ছায়াছবি দেখার পর বলেছিলেন ‘যোনিকে গুরুত্ব দেওয়া ছাড়াও মহিলাদের জীবন রয়েছে’। আরও বলেন ‘ছবিটি দেখার পর মনে হয়েছে যেন মেয়েদের যোনি পথই মুখ্য। মেয়েরা ভোগ্যপণ্য ও লালসার বস্তু ছাড়া কিছু নয়।বনসালির এই ছবি দেখার পর মনে হয়েছে মুভির পুরোটাই যোনিকে কেন্দ্র করে।মহিলাদের সম্ভ্রমের স্থান যোনিকে ছোট করে দেখান হয়েছে।লজ্জায় আমার নিজেরই যৌনাঙ্গটা সঙ্কুচিত হয়ে যাচ্ছিল।’

মেয়ে হয়ে মেয়েদের সম্ভ্রমহত্যা সহ্য করা সত্যিই মুশকিল। তাহলে নাগরিক হয়ে নাগরিকের অহেতুক অপমান সহ্য করা সম্ভব কি? যৌনতার ছবি দেখে স্বরা ভাস্করের যৌনাঙ্গটা সঙ্কুচিত হয়ে যাচ্ছিল বলে মন্তব্য করেছেন স্বরা ভাস্কর । ওনার কতবড় যোনি আর কতটা সঙ্কুচিত হচ্ছিল, সেটা না জেনেই প্রশ্ন করতে হচ্ছে, নিজের জৈবিক অঙ্গের সঙ্কোচন হয় নারী অঙ্গের অপমান দেখে, এটা মানলাম। তবে দেশ,জাতি,গনতন্ত্র, প্রভৃতির অপমান দেখে কি একবারও কোনও অঙ্গ সঙ্কুচিত হয়না? যদি না হয়,তা হলে ধরতে হয় ওনার অঙ্গগুলি নিজের নিয়ন্ত্রণে নেই।সেই হিসেবে অনিয়ন্ত্রিত এক শরীরের নাম স্বরা ভাস্কর ।

স্বরা ভাস্করকে বলছি:-‘মন্তব্য করার আগে চিন্তা ভাবনা করে মন্তব্য করলে ভুগতে হবেনা।আর সেটা না করলে কি হবে, সেটা কয়েকবার করে পরীক্ষা করে দেখতে পারেন।’

পবিত্র রায়।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.