পশ্চিমবঙ্গে বামপন্থীরা আজ রাজনৈতিক ক্ষেত্রে অপাঙক্তেয় হয়ে গেছেন। গত লোকসভা নির্বাচনে এ রাজ্যে বামফ্রন্ট একটি আসনও জিততে পারেনি। আজ সরকারি অফিসে, ভদ্রলোকের বাড়িতে, দোকানে জোর করে পার্টির মুখপত্র দেওয়ার জুলুম আর নেই। পাড়ার মোড়ে বা রেলস্টেশনে যে টিনের বোর্ডে ওই কাগজ লাগানো হতো তা জং পড়ে ঝরঝরে হয়ে গেছে। ১০টার বদলে এক জায়গায় কাগজ সাঁটা হয়।বিশেষ কেউ পড়েও না। বরুণ সেনগুপ্তের মতো প্রথিতযশা সাংবাদিক ওই মুখপত্রের প্রবন্ধের জবাব লিখে সম্পাদকীয়, উত্তর সম্পাদকীয় প্রকাশ করতেন। আজ সেই রাবণও নেই আর লঙ্কায়। লম্ফঝম্ফও নেই। এখন কোনো মূল ধারার কাগজে মার্কসবাদী কমিউনিস্ট পার্টির দলীয় মুখপত্র কী লিখছে তা নিয়ে একটি লাইনও ছাপা হয় না।

তাই লোকচক্ষুর আড়ালে থেকে গেল এক ভয়ানক প্রয়াস। বিগত ৬ আগস্ট থেকে ১৫ আগস্ট পর্যন্ত এই মুখপত্রের প্রথম পাতায় কাশ্মীরে ৩৭০ ধারা বিলোপের বিরোধিতা ছাড়া অন্য কোনো খবর প্রায় ছাপাই হয়নি। সম্পাদকীয় পাতায় গত ১০ দিনের সিংহভাগটাই কাশ্মীর। খবরগুলো প্রকাশের ভঙ্গি খুব মজার। প্রথম তিন চার লাইন কেবল সেদিনের খবর। তারপরের দশ লাইন নরেন্দ্র মোদী সরকারের অসহিষ্ণুতা। শেষের কুড়ি পঁচিশ লাইন সারা পৃথিবীতে ফ্যাসিবাদের ছাপ ইত্যাদি। কিন্তু প্রথম পাতায় শিরোনামে বড়ো বড়ো করে ছাপা হয়েছে কাশ্মীরের মানুষের কষ্ট, খাবার নেই, ওষুধ নেই, সেনাবাহিনীর অত্যাচার— যার বেশিরভাগটাই কষ্টকল্পিত। কিন্তু লাগাতার ছেপে যেতে হয়েছে এই মুখপত্রে। এর কারণ কী? আজ একবার ফিরে দেখা দরকার।

আসলে কাশ্মীরের ৩৭০ ধারা বাতিলের সিদ্ধান্ত বামপন্থীদের বহুদিনের বানানো স্বপ্নের সৌধকে চুরচুর করে দিয়েছে। সেই হতাশার প্রকাশ ঘটেছে সীতারাম ইয়েচুরির শ্রীনগরে দৌড়ে যাওয়া থেকে দলীয় মুখপত্রে লাগাতার বিরোধিতা করার মধ্যে। কমিউনিস্ট পার্টি অব ইন্ডিয়া—পরে এর থেকে তৈরি হওয়া সবকটি ভাগের কোনো নেতাই প্রথমে চায়নি ভারতবর্ষ একটি অখণ্ড শক্তিশালী দেশ হিসেবে আত্মপ্রকাশ করুক। তাদের সামনে মডেল ছিল পূর্ব ইউরোপ। গরম সাগরে শীতেও জাহাজ আসতে পারত। তাই এই ‘ইস্টার্ন ব্লক’ দখল করা রাশিয়ার জন্য খুব গুরুত্বপূর্ণ ছিল। তাই পূর্ব জার্মানি পোল্যান্ড চেকোশ্লোভাকিয়া হাঙ্গেরি রোমানিয়া ও বুলগেরিয়ার মতো ছোটো ছোটো দেশে সোভিয়েত বশংবদ সমাজবাদী সরকার বসাতে থাকে। পোলিশ পিপলস রিপাবলিক স্থাপিত হয়েছিল ১৯৪৭ সালে। সেখানে একটিমাত্র দল মার্কসিস্ট-লেনিনিস্ট কমিউনিস্ট, সরকার চালায় ১৯৮৯ সাল পর্যন্ত। সোভিয়েত মদতে এরা দেশের সব ক্ষমতা হাতে নিয়ে নেয়। প্রতিটি নির্বাচনে রিগিং করে। সোশ্যালিস্ট রিপাবলিক অব রোমানিয়াও স্থাপিত হয় ১৯৪৭ সালে। সেখানেও এক দলীয় কমিউনিস্ট পার্টি ক্ষমতায় আসে। তারপর সব গণতান্ত্রিক পদ্ধতি বন্ধ করে দেয়। ভারতবর্ষও যদি ছোটো ছোটে টুকরো হয় তবেই সোভিয়েত ইউনিয়ন তার বশংবদদের বসাতে পারবে। তাই মুসলিম লিগের পাকিস্তানের দাবি কমিউনিস্ট পার্টি অব ইন্ডিয়া সর্বশক্তি দিয়ে সমর্থন করল। ১৯৪৬ সালের ১৬ আগস্ট কলকাতার শহিদ মিনারের (অক্টোলনি মনুমন্ট) নীচে মুসলিম লিগের সভা হলো। তাতে আমন্ত্রিত ছিলেন সিপিআই দলের জ্যোতি বসু। সেই সভা থেকেই সোহরাওয়ার্দি হিন্দুদের বিরুদ্ধে ডাইরেক্ট অ্যাকশনের ডাক দিয়েছিলেন। কলকাতা-সহ সমগ্র বঙ্গপ্রদেশে শুরু হয় ভয়াবহ দাঙ্গা।

মজার বিষয় হলো দেশ ভাগের সময় মুসলিম লিগের সঙ্গে এত ঘনিষ্ঠতার কোনো ফলই পাকিস্তানে বামপন্থীরা পায়নি। ভারতের জাতীয় কংগ্রেস দেশ স্বাধীন হওয়ার পরেই ভূমিসংস্কারের অঙ্গীকার করে। সিপিআই ভূমিসংস্কার আন্দোলন করেই গ্রামে শক্তি বৃদ্ধি করে। পশ্চিমবঙ্গেও “লাঙ্গল যার জমি তার” স্লোগান জনপ্রিয় হয়। ১৯৪০ সালে ভারতবর্ষে জমিদারি বিলোপ আইন পাশ হলো। কিন্তু মুসলিম লিগ পাকিস্তান তৈরি হওয়ার পরেও ভূমিসংস্কারের কোনো প্রতিশ্রুতি দেয়নি। করেওনি। ১৯৪৮ সালের ৬ মার্চ কলকাতায় কমিউনিস্ট পার্টি অব পাকিস্তান তৈরি হয়। পশ্চিম পাকিস্তানের সাজাদি জাহির সম্পাদক হলেন।

কিন্তু পাকিস্তানে কমিউনিস্ট পার্টি কখনোই শিকড় প্রবেশ করাতে পারেনি। আজ তো পাকিস্তানের কোনো শহরে কমিউনিস্ট পার্টির সাইনবোর্ডও নেই। কমিউনিস্ট পার্টির কৃষক আন্দোলনের নেত্রী ছিলেন ইলা মিত্র। ইলা মিত্রকে রাজশাহি ও নবাবগঞ্জের জেলে যে অত্যাচার করেছিল মুসলিম লিগ সরকার তা পৃথিবীর ইতিহাসে বিরল। একজন মহিলা রাজনৈতিক বন্দিকে এমন আচরণ করা যায় তা দেখে সারা পৃথিবী শিউরে উঠেছিল। ১৯৫৪ সালে ইলা মিত্রকে পাকিস্তানের ইউনাইটেড ফ্রন্ট সরকার কলকাতায় পাঠিয়ে দিল। ইলা মিত্র আর পাকিস্তানে ফেরেননি। ১৯৬২ সাল থেকে ১৯৭৮ সাল পর্যন্ত তিনি পশ্চিমবঙ্গ বিধানসভার সদস্য হয়েছিলেন। এই ছিল পশ্চিম ও পূর্ব পাকিস্তানে কমিউনিস্ট পার্টির ভবিতব্য। তবু স্বাধীনতার পরেও বামপন্থীরা ইসলামি মৌলবাদকে সর্বদা সমর্থন করেছেন।

পূর্ব ইউরোপের টুকরো টুকরো ছোটো দেশের ভাবনা মাথায় নিয়েই কি স্বাধীনতার পরে রাশিয়ায় গিয়েছিলেন কমিউনিস্ট নেতৃত্ব। সালটা ১৯৫০। ভারত থেকে গিয়েছিলেন বাসবপুন্নাইয়া, এস. এ. ডাঙ্গে, রাজেশ্বর রাও আর অজয় ঘোষ। মাকিনেনি বাসবপুন্নাইয়া পরে সেই বৈঠকের বিস্তৃত বর্ণনা দিয়েছিলেন। তাদের সঙ্গে সেখানে মিলিত হয়েছিলেন জোসেভ স্ট্যালিন, ভিয়াচেসলভ মিথাইলচ মলোটড, মিথাইল আন্দ্রেইচ সুসলভ আর জিওরগি ম্যাক্সিমিলিয়ানোইচ মেলেনকোভ। ভারত থেকে যারা গিয়েছিলেন তারা তেলেঙ্গানার আন্দোলনের কথা বুঝিয়েছিলেন। পোল্যান্ডে তো এর থেকেও ছোটোখাটো আন্দোলন হয়েছিল। রাশিয়া তো আন্তর্জাতিক কমিউনিস্ট আন্দোলনের নামে সেখানে ঝাঁপিয়ে পড়েছিল। ভারতে কেন সাহায্য করবে না রাশিয়া?

স্ট্যালিন ইংরেজি বলতে পারতেন। তবে এতসব তাত্ত্বিক প্রশ্নের উত্তর তিনি দেননি। সব শুনে বললেন, “তোমাদের পার্টির অস্তিত্ব স্বাধীন। আজ আর কমিউনিস্ট ইন্টারন্যাশনালের প্রয়োজন নেই। ওটা শেষ হয়ে গেছে। পৃথিবীর একটি মাত্র জায়গা থেকে আমরা কমিউনিস্ট আন্দোলন চালাতে পারব না। তাই তোমরা তোমাদের পথ নিজেরাই দেখে নাও।”

আজ ভাবতে অবাক লাগে যে ঠিক সেই সময় নেতাজী সুভাষচন্দ্র বসু রাশিয়ার কোনো কারাগারে বন্দি ছিলেন। তিনি কেজিবি ভল্টে ছিলেন নাকি ম্যাগনিতোগোরসকের কোনো গ্রামে সেটা ভিন্ন প্রশ্ন। কিন্তু মুখার্জি কমিশনের রিপোর্টে পরিষ্কার বক্তব্য যে, নেতাজী সুভাষ হারিয়ে যাওয়ার পরে রাশিয়াতেই ছিলেন। কিন্তু ১৯৪৩ সালের ২৬ সেপ্টেম্বর সংখ্যার ‘পিপলস ওয়র” প্রথম পাতায় নেতাজী সুভাষের ব্যঙ্গচিত্র করেছিল। তার কিছুদিন আগেই ১৮ জুলাই কমিউনিস্ট মুখপত্র ‘পিপলস ওয়র’ পত্রিকায় জি. অধিকারী লিখেছিলেন, “হিটলার বোসকে জাপানের প্রধানমন্ত্রী তোজোর কাছে পাঠিয়েছেন। …হিটলার-তোজো-বোসের চক্রান্ত পরিষ্কার হয়ে গেছে। আমাদের ভ্রাতৃপ্রতিম চীনের স্বার্থে আমরা ওদের থেতলে দিতে পারি আর সেটাই করব।” ১৯৪২ সালের ১৩ সেপ্টেম্বর এস ভি সরদেশাই লিখলেন, “এই যে আজাদ হিন্দ রেডিও গান্ধীজীর জয়ধ্বনি করছে সেটা বিনা কারণে নয়। আসলে গান্ধীই সুভাষের মতো ফাঁসুরেকে তৈরি করেছে।” ১৯৪৩ সালে ২৫ জুলাই ওই পত্রিকায় প্রথম পাতায় নেতাজী সুভাষকে তোজোর গাধা হিসাবে একটি ব্যঙ্গচিত্র প্রকাশিত হয়। ওই পত্রিকায় কখনো বা নেতাজীকে কুকুর হিসেবে কোনো জাপানি জেনারেল ধ্বনিবর্ধকের সামনে ধরে আছে। সেরকম ব্যঙ্গচিত্রও দেখানো হয়েছে। নেতাজী সম্পর্কে যে দলের এমন বিরূপ অবস্থন সেই দলের সদস্যরা স্ট্যালিনের সঙ্গে সুভাষের জীবিত ফিরে আসার বিষয়ে কী কথা বলবেন তা সহজেই অনুমেয়।

যাই হোক, স্ট্যালিন ভারতের কমিউনিজমের বিষয়ে হাত ধুয়ে ফেলায় বাসবপুন্নাইয়ারা কিন্তু হাল ছেড়ে দেননি। রাশিয়া থেকে ফিরে এসে লিখলেন অন্ধ্র থিসিস। মূল ভাবনা বাসবপুন্নাইয়ার কিন্তু রাজেশ্বর রাও, সুরাইয়া, চন্দ্রশেখর রাও, হনুমন্ত রাও সকলেই এর বুদ্ধিদাতা ছিলেন। সকলেই একমত যে ভারতকে টুকরো টুকরো হতেই হবে। প্রদেশে প্রদেশে এলাকা ভিত্তিক স্বায়ত্তশাসন চলবে। রাশিয়া যখন মুখ ফিরিয়েছে তখন চীনই ভরসা। তারা যুক্তি দিলেন চীন ভারত দুটোই ঔপনিবেশিক শাসনে ছিল, কৃষিপ্রধান দেশ আর মানুষজনও একরকম। তাই মাও আর তার থিসিসই কার্যকর হবে। এই বিতর্কের মধ্যেই বহিষ্কৃত হলেন ভালচন্দ্র টিমবক রণদিভে। যিনি ১৯৪৮ সালে কলকাতার দ্বিতীয় পার্টি কংগ্রেসে সাধারণ সম্পাদক নির্বাচিত হয়েছিলেন। ১৯৫০ সালে রনদিভেকে ‘হঠকারী বামপন্থী’ দুর্নাম দিয়ে চলে যেতে হলো।

১৯৫০ থেকে ১৯৬০ পর্যন্ত এই টুকরো টুকরো করার দল একটু থিতিয়ে গিয়েছিল। জওহরলাল নেহরু সোভিয়েত রাশিয়ার সঙ্গে সুসম্পর্ক রেখে, সোভিয়েত অর্থনীতিকে ভারতীয় বাজার লোটার অবাধ সুযোগ করে দিয়েছিলেন। তাই সোভিয়েত ইউনিয়নের কমিউনিস্ট পার্টি এই কমিউনিস্ট পার্টি অব ইন্ডিয়ার দিকে ফিরেও তাকায়নি। তাই যখনই এই কমিউনিস্ট পার্টি ভারতবর্ষ ভেঙে টুকরো হওয়ার সম্ভাবনা বা ভারতকে একসূত্রে বাঁধার কোনো বিরোধীকে আবিষ্কার করত তাকেই সমর্থন করত। কাশ্মীরের শেখ আবদুল্লা এমনই এক বিচ্ছিন্নতাবাদী নেতা ছিলেন।

১৯৪২ সালেই শ্রীনগরে কমিউনিস্ট পার্টি অব ইন্ডিয়ার একটি শাখা শুরু হয়। সে বছর সেপ্টেম্বর মাসে লাহোর থেকে আসেন ফজল ইলাহি কুরবান। ফজল সাহেব খুব পরিচিত কমিউনিস্ট ব্যক্তিত্ব ছিলেন। তিনি একটা বোট হাউসে একটি অ্যান্টি ফ্যাসিস্ট বৈঠক করেন। তাতে ন্যাশনাল কনফারেন্সের মহম্মদ সাদিক উপস্থিত ছিলেন।

ভারতের কমিউনিস্ট পার্টির প্রথম সম্পাদক ছিলেন পিসি জোশী। ১৯৩৫ থেকে ৪৭ সাল পর্যন্ত তিনিই ছিলেন দণ্ডমুণ্ডের কর্তা। ১৯৪৬ সালে মওকা বুঝে সিপিআই আজাদ কাশ্মীরকে সমর্থন শুরু করল। ওখানের কনিউনিস্ট পার্টির কর্মীরা ন্যাশনাল কনফারেন্সে ঢোকা শুরু করল। শেখ আবদুল্লা যখন সরকার বানালেন তখন তাতে একঝাঁক কমিউনিস্ট নেতা মন্ত্রী। শেখ আবদুল্লার প্রধান উপদেষ্টা ছিলেন বিপিএল বেদি। বেদি সুপরিচিত কমিউনিস্ট মুখ ছিলেন, ন্যাশনাল মিলিশিয়ার আয়োজক ছিলেন। আবদুল্লার সঙ্গে সেদিন ছিলেন বিপিএল বেদি, ধন্বন্তরী, রাজবংশ কৃষাণ, সুমিত্রা আর ঊষারা, যারা কেউ কালচারাল ফ্রন্ট, কেউ উইমেন স্কোয়াডের সদস্য ছিলেন। ১৯৪৮ সালে কলকাতায় দ্বিতীয় পার্টি কংগ্রেস। তৈরি হলো কমিউনিস্ট পার্টি অব পাকিস্তান। দায়িত্ব পেলেন সাজ্জাদ জাহির। জাহির গদগদ হয়ে পিসি জোশিকে কাশ্মীরে আসতে বললেন, বললেন দেশটার দখল নিন। তার ভাষায় ছিল তখন ‘কোস্ট ওয়াজ ক্লিয়ার। জোশি অত সাহস দেখাননি উনি সবকটি পথই খোলা রেখেছিলেন। ১৯৪৭ সালে পাকিস্তানের সরকারের পাঠানো পাস্তুন বর্বর আক্রমণের জন্য ইংরেজদের দায়ী করে ১৯৪৭ সালের ডিসেম্বরে বয়ান দিয়েছিলেন। ১৯৪৮ সালে পাকিস্তানের প্রস্তাবের কথা কংগ্রেসের কৃষ্ণমেননের মতো কয়েকজনকে বলে তাদের উপদেশ চাইলেন, আর কাশ্মীরের মাটিতে বিদ্রোহের আগুনে ঘি ঢাললেন।

এদিকে কাশ্মীরের ভূরাজনৈতিক গুরুত্বের জন্য রাশিয়ার দিক থেকেও চাপ বাড়ছিল। সেই পূর্ব ইউরোপের পদ্ধতিতে কাশ্মীর চাই। ১৯৪৯ সালের ৪ জুন শেখ আবদুল্লাকে লেখা চিঠিতে পণ্ডিত নেহরু বললেন, “যদিও কাশ্মীরে কমিউনিস্ট অভ্যুত্থানের বিষয়ে আমি বিশেষ চিন্তিত নই তবু খোঁজখবর নেওয়া বন্ধ করা ঠিক হবে না। গত বছর কমিউনিস্ট পার্টি অব ইন্ডিয়া এক অদ্ভুত আচরণ করেছে। এটা কমিউনিজমের পথ নয়।” ওই বছরে পিসি জোশীদের কীর্তিকলাপ নেহরুকে বেশ চাপে রেখেছিল। ১৯৪৯ সালের ৩০ মে আরেকটি চিঠি লেখেন নেহরু। “বেশ কয়েকটি দূতাবাস কাশ্মীরে কমিউনিস্ট অধিগ্রহণ নিয়ে উদ্বিগ্ন। …কারণ পরিচিত কমিউনিস্টরা ওখানে সক্রিয় হয়ে উঠেছে।”

১৯৪৭ সালের ডিসেম্বর মাসে দিল্লিতে এক মার্কিন কূটনীতিক ব্রিটিশ হাইকমিশনের এক আধিকারিককে বলেছিলেন শেখ আবদুল্লা বামপন্থী আর বক্সি গোলম মহম্মদ তো প্রকাশ্যেই কমিউনিজমের কথা বলে। ১৯৪৮ সালের সেপ্টেম্বর মাসে ব্রিটিশ হাইকমিশনের এক গোয়েন্দা রিপোর্টে জানানো হলো কাশ্মীরের উপমুখ্যমন্ত্রী, দুজন অন্য মন্ত্রী আর ভারত ও পাকিস্তানের কমিউনিস্ট নেতৃত্ব কাশ্মীরকে স্বাধীন সার্বভৌম দেশ করতে চাইছে। ১৯৪৮ সালের ৩০ ডিসেম্বর কাশ্মীরে পণ্ডিত নেহরুকে হেনস্থা হতে হয়। গোয়েন্দা সূত্রে বলা হয় যে এর কারণ কেবল বিদেশিরা নয়, গেলাম মহম্মদ সাদিক, শের জং আর অন্য কমিউনিস্টরা (টি জি সঞ্জীভি পিল্লাই, অধিকর্তা গোয়েন্দা বিভাগের পক্ষ থেকে প্রধানমন্ত্রীকে দেওয়া রিপোর্ট)।

১৯৫৩ সালে যখন ড. শ্যামাপ্রসাদ মুখার্জি পশ্চিমবঙ্গ থেকে আম্বালা বা জলন্ধর পর্যন্ত ছুটে বেড়াচ্ছেন এই দাবিতে যে একদেশে আলাদা সংবিধান, আলাদা উজির-ই-আজম আর আলাদা সুপ্রিম কোর্ট কেন হবে, তখন কমিউনিস্ট পার্টির প্রভাব শেখ আবদুল্লার উপর থেকে কিছুটা কমেছে। শেখ আবদুল্লা ধীরে ধীরে সরে আসেন, ১৯৪৮ সালে সিপিআই নিষিদ্ধ হওয়ার পর থেকে ১১ মে গ্রেপ্তার হলেন শ্যামাপ্রসাদ, সঙ্গে জনসঙ্ঘের নেতা গুরু দত্ত বৈদ্য, টেকচাঁদ ঠাকুর আর তরুণ সাংবাদিক অটলবিহারী বাজপেয়ী। ১ মাস ১২ দিন দুর্বিষহ অত্যাচার করে শ্যামাপ্রসাদকে প্রকারান্তরে হত্যা করেন শেখ আবদুল্লা। ২৩ জুন মারা গেলেন শ্যামাপ্রসাদ। শ্যামাপ্রসাদের মরদেহ মাঝরাতে কলকাতা বিমানবন্দরে আনা হলো। সেদিন মাঝরাতে হাজার হাজার মানুষ জড়ো হয়েছিল। শত শত মানুষ সেরাত্রে ট্রাম লাইনে শুয়েছিলেন। তারা পরের দিন কেওড়াতলা মহাশ্মশানে শ্যামাপ্রসাদের শেষকৃত্যে অংশ নিয়েছিলেন। এক যুগ মানে ১২ বছর আগে এই মহাশ্মশানে বিশ্বকবির মরদেহ আনা হয়েছিল। সেদিন যে দীপ্ত মানুষটি হাজার হাজার মানুষকে নিয়ন্ত্রণ করে বাঙ্গলার পরম গৌরবের কবিকে বিদায়ের অনুষ্ঠান সম্পন্ন করেছিলেন, সেই শ্যামাপ্রসাদের মরদেহ আজ এসেছে। কিন্তু শ্যামাপ্রসাদের মৃত্যু স্বাভাবিক নয়। এর প্রতিকার চাই। নেহরুজীকে কলকাতা থেকে খবর পাঠানো হলো। পশ্চিমবঙ্গ আগ্নেয়গিরির জ্বালামুখ হয়ে আছে।

সেই সময় কলকাতায় ট্রাম চালাতো ক্যালকাটা ট্রামওয়েজ কোম্পানি নামে একটি ইংরেজ কোম্পানি। সেই বেসরকারি সংস্থা ১ পয়সা টুম ভাড়া বৃদ্ধি করেছিল। শ্যামাপ্রসাদের যেদিন দাহসংস্কার হলো মানে ২৪ জুন, ১৯৫৩ সেদিন ট্রাম কোম্পানি ভাড়া বৃদ্ধির নিয়ে সিদ্ধান্ত নেয় কংগ্রেস সরকারের অনুমতিক্রমে। ফরওয়ার্ড ব্লক নেতা হেমন্ত বসুকে সভাপতি করে তার দুদিন পরে ২৭ জুন বামদলগুলির বৈঠকহলো। বৈঠকে তৈরি হলো একটি প্রতিরোধ কমিটি। সিপিআই দলের জ্যোতি বসু, প্রজা সোশ্যালিস্ট পার্টির সুরেশ ব্যানার্জি, এস ইউ সি দলের সুবোধ ব্যানার্জি এবং মার্কসবাদী ফরওয়ার্ড ব্লকের সত্যপ্রিয় ব্যানার্জিকে নিয়ে গঠিত হলো নির্ণায়ক কমিটি। এই উচ্চশক্তিধর কমিটি ১ পয়সা ভাড়া বৃদ্ধির বিরুদ্ধে আন্দোলন করবে বলে সিদ্ধান্ত নিল। ক্যালকাটা ট্রামওয়েজ ওয়ার্কার্স ইউনিয়ন (সি টি ডব্লুউ ইউ) এই আন্দোলনে প্রচ্ছন্ন সমর্থন করল। ২৯ জুন ‘প্রতিরোধ কমিটি’ যাত্রীদের কাছে আবেদন করল, যেন তারা বর্ধিত ভাড়া না দেয়। তারপর কংগ্রেস আর বামদলগুলি চোরপুলিশ খেলতে থাকল। প্রতিরোধ কমিটি ট্রামের ডিপোতে ডিপোতে পিকেটিং শুরু করল। একদিনে ১৩টি ট্রাম পুড়িয়ে দেওয়া হলো। সিপিআই দলের জ্যোতি বসু, আর গণেশ ঘোষকে, এস ইউ সি দলের সুবোধ ব্যানর্জিকে সোশ্যালিস্ট রিপাবলিকান পার্টির জ্যোতিষ জোয়ারদারকে পুলিশ গ্রেপ্তার করল ৩ জুলাই। ৪ জুলাই পুলিশের জুলুমের প্রতিবাদে কমিটি পশ্চিমবঙ্গে সাধারণ ধর্মঘটের ডাক দিল। অতি নিপুণভাবে রাজ্যের মানুষকে ভুলিয়ে দেওয়া হলো কত নিষ্ঠুরভাবে পশ্চিমবঙ্গের এত বড়ো একমহামানবকে মাত্র ১০ দিন আগে খুন করা হয়েছে।

১৯৬২ সালে চীনের সঙ্গে যুদ্ধের পরে এই সুপ্ত বাসনা একেবারে প্রকাশ্যে বের হয়ে এল। বাসবপুন্নাইয়ার থিওরিতে এলাকাভিত্তিক স্বায়ত্ত শাসনের পরে। ইন্টারন্যাশনাল কমিউনিজমের স্বার্থে সোভিয়েত রাশিয়াকে ভারত দখলের আহ্বান ছিল প্রচ্ছন্ন ভাবে। ১৯৬৪ সালের ১১ এপ্রিল সিপিআই দলের জাতীয় অধিবেশনে ৩২ জন সদস্য প্রতিবাদ করে বের হয়ে গেলেন। তারা সভাপতি ডাঙ্গেকে কমিউনিস্ট বিরোধী আখ্যা দিয়ে অন্ধ্রপ্রদেশের তেলানিতে জুলাই মাসের ৭ থেকে ১১ তারিখ পর্যন্ত অধিবেশন করলেন। সেখনে চীনের চেয়ারম্যান মাও-সে-তুং সাহেবের বড়ো প্রতিকৃতি লাগানো হলো। সেখানেই ঠিক হলো ৩১ অক্টোবর থেকে ৭ নভেম্বর কলকাতার ত্যাগরাজ হলে অধিবেশন হবে। সেখানে বাসবপুন্নাইয়ার দলীয় খসড়ার বদলে উঠে এল পরিমল দাশগুপ্ত আর আজিজুল হকের প্রস্তাব। রাশিয়া নয় চীনই প্রভূ, টুকরো টুকরো ভারতের কমিউনিস্টদের দখলে আনতে মাওয়ের চীনই সাহায্য করবে। প্রভুর ভিত্তিতে ভাগ হয়ে গেল দল।

নকশালবাড়ি আন্দোলনেও এলকাভিত্তিক স্বায়ত্তশাসন দাবি করেছিলেন চারু মজুমদার। ১৯৬৭ সলের ৫ জুলাই চীনের সেন্ট্রাল কমিটি অব কমিউনিস্ট পার্টির মুখপত্র পিপলস ডেইলিতে প্রকাশিত হলো— ‘ম্প্রিং থান্ডার ওভার ইন্ডিয়া’ বা ‘ভারতে বসন্তের বজ নির্ঘোষ’। এদেশের কমিউনিস্ট নেতাদের সেকি উল্লাস। এতদিন প্রভু ভক্তের নিবেদন গ্রহণ করেছেন। কলকাতা-সহ সর্বত্র তখন দেওয়ালে দেওয়ালে, ‘চীনের চেয়ারম্যান আমাদের চেয়ারম্যান।

এই চীন বা পাকিস্তান থেকে অস্ত্রশস্ত্র, জাল টাকা, অত্যাধুনিক যুদ্ধ প্রযুক্তি আনতে তাই সব সময় কাশ্মীরের জঙ্গি জেহাদিরা আর কমিউনিস্ট উগ্রপন্থীরা একসঙ্গে কাজ করেছে। চীনের তৈরি টু-স্টেজ ল্যান্ডমাইন দুই দলই ব্যবহার করে। মাওবাদীরা ল্যান্ডমাইন ব্যবহারের ক্ষেত্রে কোনো আন্তর্জাতিক আইন মানে না। কাশ্মীরের মুজাহিদিনরাও। ল্যান্ডমাইন ভারতকে বিব্রত করতে ব্যবহার করে বলেই চীন পৃথিবীর সবচেয়ে বেশি ল্যান্ডমাইন তৈরি করে। ল্যান্ডমাইন মনিটর নামে এক সংস্থার মতে ২০১০ সালে চীনের কাছে ১১ কোটির বেশি ল্যান্ডমাইন মজুত ছিল, দ্বিতীয় স্থানে রাশিয়া অনেক পিছিয়ে মাত্র ২ কোটি ৪৫ লক্ষ। সেই কারণেই এবছর ৪ জুলাই জেনেভাতে রাষ্ট্রসঙ্ঘের জেনেভা সম্মেলনে ‘ক্লাস্টার মিউনিশন ব্যান পলিশি’ বা ল্যান্ডমাইনের মতো ভয়ানক মানবতা বিরোধী অস্ত্র ব্যবহার বন্ধের চুক্তিতে চীন স্বাক্ষর করেনি।

২০১০ সালে কলকাতার সেন্ট্রাল ফরেনসিক সায়েন্স ল্যাবরেটরির অধিকর্তা এক সাংবাদিক সম্মেলনে ভয়ানক তথ্য দেন। রেডিও কন্ট্রোল্ড এক্সপ্লোসিভ বা রিমোট কন্ট্রোল্ড এক্সপ্লোসিভের প্রযুক্তি ভারতবর্ষে কাশ্মীরি মুজাহিদিনদের মাধ্যমে এনেছে এরা। আফগানিস্তানের তালিবানদের কাছ থেকে এই ভয়ংকর প্রযুক্তি কাশ্মীরের পথে ভারতে এনেছে। ভারতবর্ষ স্বাধীন হওয়ার পর থেকে ভারতকে টুকরো টুকরো করতে চাওয়া। প্রায় সবকটি শক্তির সঙ্গেই কমিউনিস্টরা ছিলেন। বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধের সময় রাজাকারদের সঙ্গে ছিল কমিউনিস্ট পার্টি। বিশেষ করে যারা চীনপন্থী ছিলেন তারা সরাসরি পাকিস্তানের খানসেনাদের সবরকম সহযোগিতা করেছিল। মুক্তি যোদ্ধাদের ধরিয়ে দেওয়া, খানসেনাদের হয়ে ট্রেনিং ক্যাম্পগুলো চিনিয়ে দিতেন। এদের মধ্যে অন্যতম প্রধান নেতা ছিলেন। রশিদ খান মেনন, আর তোহা। ১৯৭১ সালে এই রশিদ খান মেনন কাজি জাফর আহমেদ, নজরুল ইসলাম, নাসিম আলিরাই কলকাতা থেকে ‘বাংলাদেশ কমিউনিস্ট পার্টি (লেনিনবাদী) প্রতিষ্ঠা করেছিলেন। তাই বাংলাদেশের মুক্তি যুদ্ধের বিপক্ষে হিন্দু নিগ্রহেও একই ভাবে কমিউনিস্টদের ভূমিকা ছিল।

১৯৫৭ সালে মস্কোতে আন্তর্জাতিক কমিউনিস্ট সম্মেলনে কমিউনিস্ট পার্টি অব চায়না’ গণতান্ত্রিক পদ্ধতিতে অংশগ্রহণ করে। ভারতের কমিউনিস্ট পার্টির কেরল রাজ্যের শাসন ক্ষমতা দখলকে সমালোচনা করে। তাদের মতে কমিউনিজমের ব্যাকরণে সংসদীয় গণতন্ত্রের কোনো স্থান নেই। আজ সত্যি সত্যিই ভারতের কমিউনিস্টরা সংসদীয়। গণতন্ত্র থেকে দূরে সরে যাচ্ছেন। ১৯৫২ সালে ভারতের প্রথম সংসদে সিপিআই দলের ১৬ জন সাংসদ ছিলেন। ১৯৫৭ সালে তা বেড়ে হলো ২৭ জন, ১৯৬২-তে ২৯, ১৯৬৭ সিপিআই ভেঙে গেল, সেবার সিপিআই ২৩ সিপিআইএম ১৯টি মোট ৪২টি, ১৯৭১ সালে মোট ৪৮টি, ১৯৭৭ সালে ২৯টি, ১৯৮০ সালে ৫৩টি পর্যন্ত পৌঁছেছিল সিপিআই ও সিপিআইএমের সাংসদের সংখ্যা, ১৯৮৪-তে কমে ২৯, ১৯৮৯-তে ৪৮টি, ১৯৯১ সালে। ৫০টি ১৯৯৪ সালে পেয়েছিল ৪১টি আসন, ১৯৯৯ সালে ৩৭টি, ২০০৪ সালে ৫৩টি, ২০০৯ সালে ১৯টি তারপর ২০১৪ সালের লোকসভাতে সিপিআইএম ৯টি, সিপিআই ১টি ২০১৯ সালে স্বাধীন ভারতের ইতিহাসে সর্বকালের সর্বনিম্ন আসন পেয়েছে দুটি কমিউনিস্ট দল। এবার সিপিআইএম ৩টি আর সিপিআই ২টি মোট ৫টি আসন সারা ভারত থেকে পেয়েছে। তাই ভারত যত ঐক্যবদ্ধ হবে, কাশ্মীরের বিচ্ছিন্নতাবাদ যত দুর্বল হবে, দেশের বিশ্ববিদ্যালয়গুলির থেকে লুপ্ত হবে ‘টুকরো টুকরো গ্যাং ততই কমে যাবে কমিউনিস্টদের জনসমর্থন। কারণ ঐক্যবদ্ধ শক্তিশালী ভারত আর ভারতের কমিউনিস্টরা পরস্পরের পরিপন্থী।

কাশ্মীরে যখন সেখানকার ভূমিপুত্র আদি বাসিন্দা হিন্দু পণ্ডিতদের মেরে, কেটে, ধর্ষণ করে তাড়ানো হয়েছিল তখন কলকাতায় কোনো বামপন্থী মিটিং মিছিল হয়নি। কিন্তু ২০১৩ সালে উগ্রপন্থী আফজল গুরুর ফাসির প্রতিবাদে কমিউনিস্টরা মিছিল করেছিলেন। ২০০১ সালে সংসদ আক্রমণের মূল কাণ্ডারি ছিল এই কাশ্মীরি জেহাদি জঙ্গি। স্বাধীনতার পরে এত বছরে কত হাজার হিন্দুকে বাংলাদেশে নির্মমভাবে হত্যা করা হয়েছে, এই সেদিন পর্যন্ত গণধর্ষিত হয়েছেন কতমা বোন। কোনোদিন কোনো কমিউনিস্ট দলকে দেখেছেন তার প্রতিবাদ করতে? কিন্তু ইজরায়েল গাজা ভূখণ্ডে কিছু ঘটলে কলকাতার রাস্তা বন্ধ করে মিছিল করেছেন। কমিউনিস্টরা।

এসবের পেছনে কোনো মানবাধিকার, অন্যায়ের প্রতিবাদ ইত্যাদি নেই। আছে একটি মাত্র আশা। ভারত তেরে টুকরে হোঙ্গে, ইন্সল্লা, ইন্সল্লা। এই স্বপ্নে বুদ হয়েছিল কমিউনিস্টরা ৩৭০ ধারার ঢাল ব্যবহার করে স্বপ্নের সৌধ বানিয়েছিল কাশ্মীরের জেহাদি জঙ্গিরা।

৩৭০ ধারা বিলোপ এদের সকলের স্বপ্নভঙ্গ করে দিয়েছে। তাই এত অস্থির হয়ে উঠেছেন কমরেডরা!

ড. জিষ্ণু বসু

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.